কলকাতা, 21 অগস্ট: আরজি করের ঘটনা নিয়ে যখন মেয়েদের নিরাপত্তা, সম্মান, অধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সেই সময় সমাজের কিছু কিছু মানুষের মানসিকতাও নজরে আসছে ৷ ডাক্তারি পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে মেয়েরা রাত দখল করেন ৷ প্রতিবাদে সরব হন প্রাক্তন তৃণমূল নেত্রী তথা অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীও ৷ সোশাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীকে অশ্লীল আক্রমণ। পাবলিক প্ল্যাটফর্মে ধর্ষণের হুমকি অভিনেত্রীকে ৷ ইতিমধ্যেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিনেত্রী ৷ মিমির পাশে দাঁড়ালেন অনুরাগীরা ৷ অভিনেত্রী হয়ে সরব হলেন রূপালি ভট্টাচার্য ৷
ইটিভি ভারতকে রূপালি বলেন, "আমি এই কাজের তীব্র নিন্দা করি। সত্যি কথা বলতে কি, মানুষ না বদলালে কোনওদিন সিস্টেম বদলাবে না। তা সে যেই আসুক না কেন সরকারে। একটা বাড়ির পোষ্যর কেমন চরিত্র হবে তা তার মালিকের স্বভাবের উপর নির্ভর করে। এখানেও ঠিক সেটাই ঘটছে। রাষ্ট্রের নাগরিকের চরিত্র শাসকদলের উপর নির্ভর করে।"
তিনি আরও বলেন, "2011 সাল থেকে আজ অবধি বিভিন্ন ক্ষেত্রের সফল মানুষদের মনুষ্যত্বই তো নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। বলা ভালো হারিয়েই গিয়েছে ৷ তাহলে সাধারণ মানুষ তো আরওই এই জাতীয় কাজ করবে। মিমি কেন যে কোনও মেয়ের সঙ্গে এরকম ঘটলেই তাকে জেলে ভরা উচিত এবং উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া উচিত। কদিন আগে একটি ছেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেও এহেন অশ্লীল মন্তব্য ছুঁড়েছিল। তারও শাস্তি হওয়া দরকার। সে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।"
এদিন মিমিকে উল্লেখ করে যে অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তার স্ক্রিনশট সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন অভিনেত্রী ৷
রশিদুল নামের এক ব্যক্তি এক্স হ্যান্ডেলে মন্তব্য বাক্সে লেখেন, ”মিমি শুধু একটা মেয়ে বলে তাঁর জন্য খারাপ ভাষা ব্যবহার করতে পারছি না। আজ যদি এই ঘটনা মিমির সঙ্গে ঘটত তাহলে কী করতিস? মিমির পরিবারকেও 10 লাখ টাকা দিতিস নাকি? তাহলে মিমিকে আমার ঘরে পাঠিয়ে দিস আমি দিয়ে দেব 10 লাখ টাকা ওর পরিবারকে।” আর এক জন লেখেন, ”এই ঘটনা (শব্দ পরিবর্তিত) মিমির সঙ্গে হলে ভালো হত।”
এহেন মন্তব্য দেখে চুপ করে বসে থাকেননি অভিনেত্রী তথা প্রাক্তন সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। তিনি বরাবরই প্রতিবাদী মুখ। তিনি নিজের হয়ে প্রতিবাদে লেখেন, ”আর আমরা একজন মহিলার জন্যই ন্যায় বিচার চাইছি তাই না? এঁরা অনেকের মধ্যে কিছুজন। এখন ধর্ষণের হুমকিকে নর্মলাইজ করে ফেলেছে এই বিষাক্ত পুরুষ সমাজ। একই সঙ্গে ভিড়ের মধ্যে মিশে গিয়ে বলছে যে তাঁরা নাকি মেয়েদের পাশে আছেন! এটা কোন শিক্ষার পরিচয়?”
এই ঘটনায় অনেকে সোশাল মিডিয়ায় প্রতিবাদও করেছেন ৷ কেউ লিখেছেন, "পুলিশের উচিত এদের গ্রেফতার করা ৷" আবার কেউ লিখেছেন, "সত্যিই আজ সমাজটা বড়ই কলুষিত, তাই একজন মাননীয়া রাজ্যবাসীকে সামাজিক মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার অবস্থা বোঝাই যাচ্ছে। মাননীয়া, আপনার সঙ্গে আমার রাজনৈতিক মত পার্থক্য আছে কিন্ত তারপরও অনুরোধ, হুমকি দেওয়া এই অসভ্য মানুষগুলোকে ছাড়বেন না।" আবার কেউ লিখেছেন, "এই ধরনের আপদ গুলোকে সর্বসমক্ষে গুলি করে মেরে ফেলা উচিৎ। ধিক্কার জানানোর কোনো ভাষা নেই। ছিঃ পুরুষ জাতির লজ্জা এই বরাহ নন্দন গুলো।"