পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / entertainment

'মাণিকবাবুর মেঘ' নিয়ে খ্যাতি বিড়ম্বনায় চন্দন সেন! শুনল ইটিভি ভারত - CHANDAN SEN EXCLUSIVE

Bengali Movie Manikbabur Megh: দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে অভিনন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি 'মাণিকবাবুর মেঘ'। অভিনেতা চন্দন সেনকে দর্শক নতুন রূপে আবিষ্কার করেছেন ৷ কেমন ছিল, সেই জার্নি শুনল ইটিভি ভারত ৷

Manikbabur Megh Trailer
অভিনেতা চন্দন সেন (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 18, 2024, 6:55 PM IST

Updated : Jul 19, 2024, 6:51 PM IST

কলকাতা, 18 জুলাই: বিশ্বব্যাপী 38টি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ঘুরে 14টি পুরষ্কার ও নমিনেশন পেয়েছে অভিনন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি 'মাণিকবাবুর মেঘ'। রাশিয়ায় প্যাসিফিক মেরিডিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন চন্দন সেন । ছবির সাফল্যকে কীভাবে দেখছেন ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে জানালেন অভিনেতা চন্দন সেন ৷

চন্দন সেনের সাক্ষাৎকার (ইটিভি ভারত)

ইটিভি ভারত: 'মাণিকবাবুর মেঘ' আজ আলোচনার কেন্দ্রে। কেমন লাগছে?
চন্দন সেন: ভালো তো লাগছেই। তবে, কতগুলো বিপদও আছে। নিজের অভিনয় নিয়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে। শেখার জায়গাটা বাড়াতে হবে। না হলে পারব না আগামীতে।

ইটিভি ভারত: সতীর্থরা কী বলছেন?
চন্দন সেন: অনেকে প্রশংসা করছেন, উৎসাহ দিচ্ছেন। তাতেও আবার ভয় আছে। আমার এর পরের নাটক বা সিনেমাতে তাঁদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি থাকবে কেমন করলাম।

ইটিভি ভারত: সিনেমাটা নিয়ে আপনি কী বলবেন?
চন্দন সেন: যে ধরনের বাংলা ছবি দেখে মানুষ অভ্যস্ত, এটা ঠিক তেমন নয়। তবে, অনেকদিন পরে একটা সিনেমা তৈরি হয়েছে বলতে পারি। এখানে কোনও বুদ্ধির মারপ্যাঁচ নেই, একটা নিটোল প্রেমের গল্প 'মাণিকবাবুর মেঘ'। সর্বস্তরের মানুষ এই ছবিটি দেখতে আসছেন। মাল্টিপ্লেক্সেও যাঁরা আসছেন তাঁরা সবাই বোদ্ধা নন, সাধারণ সিনেমার দর্শক। সকলের মুখে সিনেমার প্রশংসা ভালো লাগছে ৷

ইটিভি ভারত: দেশের বাইরের মানুষ আপনার অভিনয় দেখে কী বললেন?
চন্দন সেন: আমি দেশের বাইরে যাইনি। দক্ষিণ ভারতীয় ক্যামেরাম্যান, অভিনেতা, এডিটর এবং কিছু মারাঠি মানুষের কাছেও পেয়েছি কদর।

ইটিভি ভারত: এমন একটা চরিত্র যার প্রেম এক টুকরো মেঘ। এরকম গল্পে নিজেকে স্থাপন করা কতটা চ্যালেঞ্জিং?
চন্দন সেন: চ্যালেঞ্জ সত্যিই ছিল ৷ কোনও সংলাপ নেই অথচ হাজার হাজার কথা শোনাতে ও দেখাতে হবে। তাই চ্যালেঞ্জটা অভিনেতার কাছে নির্দেশকের। নৈঃশব্দের বাঙ্ময়তা কতটা প্রকাশ করা যায় সেটাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।

ইটিভি ভারত: বাংলা ধারাবাহিকে আজকাল দর্শক খুব পাচ্ছেন আপনাকে ৷ কেন?
চন্দন সেন: ডাকে না তো। কী করব বলুন? কেরিয়ারের শুরুর দিকে কাজের জন্য গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে জেনেছি যে রোলটা আমার করার কথা ছিল সেটা পরিচালকের ভাগ্নে করছেন। অনেক জায়গায় প্রায় ঘাড় ধাক্কা দিয়েও বের করে দেওয়া হয়েছে। শুরুতে শুনেছিলাম কাজ চাইতে হবে। কিন্তু এখন তো কাজের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না। ভবিষ্যতে এমনটা হতে পারে। এখনও চালিয়ে নিতে পারছি। পরে না পারলে আমাকেও আবার কাজ চাইতে হতে পারে।

ইটিভি ভারত: কখনও হিন্দি সিনেমা, সিরিয়াল বা ওয়েব সিরিজ থেকে ডাক এলে সাড়া দেবেন ?
চন্দন সেন: আমি আজ অবধি 13টা হিন্দি সিনেমার জন্য অডিশন দিয়েছি এবং বাতিল হয়েছি। তবে, 'মি: অ্যান্ড মিসেস আয়ার' করেছি। আর 'সুমো দিদি'তে একটা চরিত্রে কাজ করেছি ৷ তবে, একবার একটা হিন্দি ছবিতে সব পাকা হয়ে গেছিল। ছবিটার‍ নাম 'তিন'। পোশাকের মাপ নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। আমি সাধারণত রাতে শ্যুটিং করি না। কিন্তু ওই ছবিটায় রাজি হয়েছিলাম। কেন না অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে মুখোমুখি সিন ছিল। এই সুযোগ কে ছাড়ে? কিন্তু ভাগ্য সেখানেও সঙ্গ দেয়নি। চলন্ত একটা ট্রাম থেকে আরেকটা ট্রামে ঝাঁপ দেওয়ার দৃশ্য ছিল। যেটা আমার পক্ষে অসম্ভব ছিল। আমার ভার্টিব্রা তার দিয়ে বাঁধা। তাই আর করা হয়নি কাজটা।

ইটিভি ভারত: লীনা গঙ্গোপাধ্যায় তো হিন্দিতে ধারাবাহিক বানাচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে এই ব্যাপারে কোনও কথা হয়নি?

চন্দন সেন: না হয়নি কথা। শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আমার ভালো সম্পর্ক। লীনা দি আমাকে একবার বলেছিলেন আমার দুষ্টু চরিত্রের ইমেজ ভাঙবেন। এখন সেই ইমেজ ভেঙে দিয়ে আমাকে ভগবানের মতো চরিত্র দিয়েছিলেন একরকম। তার মধ্যে 'খড়কুটো' অন্যতম।

ইটিভি ভারত: সাফল্যের এই শিখরে এসে কাকে মিস করছেন?
চন্দন সেন: মা'কে। মা শ্যুটিং শেষ হয়েছে দেখে গিয়েছেন। সাফল্যটা দেখে গেলেন না। মা আমাকে একা মানুষ করেছেন। নিজে আধপেটা খেয়ে মানুষ করেছেন। তবু আমাকে রোজগারের কথা বলেননি। যে যময়ে ছেলেরা চাকরি করে আমি সেই সময়ে থিয়েটার করি। তার আগে কলকাতা শহরে ফার্স্ট ডিভিশনে ক্রিকেট খেলি। খেলে চাকরির কথাও ভেবেছিলাম। পরে দেখলাম সেখানে লবি লাগে। থিয়েটারের প্রতি আগ্রহ বরাবরের। তাই থিয়েটারেই চলে আসি।

ইটিভি ভারত: এই সময়ের থিয়েটার নিয়ে কী বলবেন?
চন্দন সেন: নতুনরা আসছেন। তবে, বিষয়স্তুর থেকেও অনেক বেশি আঙ্গিকের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্নতা আছে।

প্রসঙ্গত, 'মাণিকবাবুর মেঘ' ছবিটির প্রিমিয়ার হয়েছে 5টি মহাদেশে। 12 জুলাই মুক্তি পেয়েছে এই‌ ছবি। দর্শকের মনে দাগ কেটে গিয়েছে মাণিকবাবু তথা চন্দন সেন। বাংলা থিয়েটার, সিনেমা এবং ধারাবাহিক সব ক্ষেত্রেই তাঁর অবাধ বিচরণ। এহেন চন্দন সেনের জনপ্রিয়তার মুকুটে জুড়ল নতুন ঝলমলে পালক।

Last Updated : Jul 19, 2024, 6:51 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details