ETV Bharat / entertainment

ফলোয়ার্স বাড়াতে স্বরচিত মৃত্যুফাঁদ ! কোন গল্প বুনছে সোহিনী-ইন্দ্রাশিষ ? - SOHINI GUHA ROY IN WEB SERIES

সোশাল মিডিয়ায় ফলোয়ার্স বাড়ানোর ইঁদুর দৌড় ৷ কোন পথে নিয়ে যাচ্ছে তরুণ প্রজন্মকে ? চোখে আঙুল দিয়ে দেখাবে রাজদীপ ঘোষের নতুন ওয়েব সিরিজ ৷

Web series
কোন গল্প বুনছে সোহিনী-ইন্দ্রাশিষ ? (Pr Handout)
author img

By ETV Bharat Entertainment Team

Published : Jan 14, 2025, 6:29 PM IST

কলকাতা, 14 জানুয়ারি: এখন সোশাল মিডিয়া ছাড়া জেন জি অচল ৷ নেটপাড়ায় কতজন ফলোয়ার, কতগুলো লাইক এল তা নিয়েই মাথা ঘামাতে ব্যস্ত এখনকার তরুণ প্রজন্ম ৷ আখেরে কোন সর্বনাশের মুখে এগোচ্ছে তারা ? মোবাইল স্ক্রিনের আলোআধাঁরি দুনিয়ার গোলক ধাঁধাঁয় হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব-কৈশোর ৷ সমাজের অবক্ষয়ের দিক এবার ওয়েব সিরিজে তুলে ধরছেন পরিচালক রাজদীপ ঘোষ ৷

আসছে নতুন ওয়েব সিরিজ '@ফলোয়ার্স' ৷ প্রকাশ্যে চরিত্রেদের প্রথম ঝলক। এই সিরিজের হাত ধরেই ওয়েব দুনিয়ায় পা রাখছেন অভিনেত্রী সোহিনী গুহ রায়। তাঁর চরিত্রের নাম হিয়া। হিয়া আবার 'লক্ষ্মী' সিরিয়ালের সুপারহিট নায়িকা। তবে তারও আজকাল বেশি ঝোঁক পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে বোল্ড শুট বা রিলসের মাধ্যমে ফলোয়ার্স বাড়ানোর দিকে। প্ল্যান করে সোশাল মিডিয়াতে তাঁর মৃত্যুর ভুল খবর প্রকাশ করবে ৷ হিয়ার কাণ্ড কারখানায় বিরক্ত বাড়ির লোকও ৷ এমনকী, হিয়ার অনুগামী অনিন্দ্যও।

আচমকাই সত্যি সত্যি মৃত্যু হয় হিয়ার ৷ তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক ? শুরু হয় তদন্ত ৷ কোনদিকে গড়াবে সিরিজের গল্প? জানতে হলে চোখ রাখতে হবে ক্লিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। সিরিজ প্রযোজনায় স্কাইপ্যানস কমিউনিকেশনস।
অভিনয়ে শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রাশিষ রায়, সোহিনী গুহ রায়, অম্লান মজুমদার, সামিউল আলাম এবং স্যান্ডি।
কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন অম্লান মজুমদার।

সোহিনী গুহ রায় বলেন, "এটা আমার প্রথম ওয়েব সিরিজ এবং আমি খুবই খুশি যে আমার ওয়েব সিরিজের যাত্রা শুরু হল ক্লিকের সঙ্গে। এই ওয়েব সিরিজের বিষয়বস্তু অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। সোশাল মিডিয়া এখন সবার জীবনের একটি বড় অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এটি আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ, তা সম্পূর্ণ আমাদের উপর নির্ভর করে। যদি আমরা আমাদের জীবন ও সুস্থতার উপর সোশাল মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে দিই, তাহলে এটি একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।"

সোহিনী আরও বলেন, "আমি কৃতজ্ঞ এবং ধন্যবাদ জানাই আমাদের ওয়েব সিরিজের পরিচালক রাজদীপ ঘোষকে, যিনি আমাকে এই চরিত্রটি আমার কল্পনা অনুযায়ী গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ট জায়গা দিয়েছেন। চরিত্রটি যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের ছিল এবং অনেকটা মানসিক দৃঢ়তা দিয়ে চরিত্রায়ণ করতে হয়েছে ।"

ইন্দ্রাশিষ রায় বলেন, "আজকের যুগে দুটো বিষয় খুব প্রাসঙ্গিক., একদিকে নিজের জীবন, জীবন ঘিরে নানা স্বপ্ন, অন্যদিকে সোশাল মিডিয়ার হাতছানি ৷ সোশাল মিডিয়া যেমন বদলে দিতে পারে মানুষের জীবন, আবার ধ্বংসও করে দিতে পারে ৷ এই কাজটা করতে গিয়ে একটু সিরিয়াস হয়েই থাকতাম ৷ বড্ড ভাবিয়েছে এই সাবজেক্টটা ৷ কি ভাবিয়েছে বলবো না, শুধু বলবো দেখার পর আপনারাও ভাববেন, ছটফট করবেন ৷"

পরিচালক রাজদীপ ঘোষের কথায়, "নিজের বাবা বা মা মারা যাওয়ার পর হাসিমুখে সেই মৃতদেহর সঙ্গে সেলফি তুলেছেন কখনো? এখন মানুষ তোলে। তারপর সেটা ফেসবুকে পোস্টও করে ৷ কতজন ফলো করছে সেটা উপভোগ করে তারিয়ে তারিয়ে ৷ এ এক ভয়ংকর সময়। ফলোয়ার্স চাই-ই-চাই। এক অদ্ভুত মারণ রোগে আজ আমরা মেতে উঠেছি। মনে হল এর প্রতিবাদ দরকার। আর আমার ভাষা তো একটাই, সিনেমা। তাই সাবজেক্টটা শুনেই ঝাঁপিয়ে পড়লাম।"

লেখক ও অভিনেতা অম্লান মজুমদার বলেন, "যখনই কিছু লিখেছি, চেষ্টা করেছি একটা সামাজিক বার্তা দেওয়ার। ভাগাড় কাণ্ড নিয়ে 'ভাগাড়' বা ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের গল্প 'শক্তিরূপেন' তার জ্বলন্ত উদাহরণ।" শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের সময়ে মূল্যায়ন হতো চরিত্র দিয়ে, অনলাইন ক্লিক দিয়ে নয়। এখন সবাই 'লাইক' আর 'ফলোয়ার'-এর পেছনে ছুটছে। এই সোশ্যাল মিডিয়ার উন্মাদনা মানুষকে আসক্ত করে ফেলেছে। নিখুঁত ছবি তোলার জন্য, হাস্যকর রিল বানানোর জন্য তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করে, শুধু সাময়িক অনলাইন স্বীকৃতির জন্য। এটা এক অদ্ভুত পৃথিবী, যেখানে স্ক্রিনে দেখানো একটা সংখ্যা মানুষের মূল্য নির্ধারণ করে।"

অভিনেতা আরও বলেন "আমি দেখি তরুণ প্রজন্ম তাদের ফোনে এতটাই মগ্ন যে তারা আসল জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। তারা এক অদৃশ্য দর্শকের জন্য এত ব্যস্ত হয়ে পারফর্ম করছে যে নিজের মতো করে বাঁচতে ভুলে যাচ্ছে। এটা এক পাগলামি, এক ধরনের আসক্তি। এটি একটি ডিজিটাল ইঁদুর দৌড়, যার কোনও আসল শেষ নেই। আমি হাজারটা ভার্চুয়াল লাইক পাওয়ার চেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে একটা ভালো কথোপকথনকেই বেশি পছন্দ করব।"

কলকাতা, 14 জানুয়ারি: এখন সোশাল মিডিয়া ছাড়া জেন জি অচল ৷ নেটপাড়ায় কতজন ফলোয়ার, কতগুলো লাইক এল তা নিয়েই মাথা ঘামাতে ব্যস্ত এখনকার তরুণ প্রজন্ম ৷ আখেরে কোন সর্বনাশের মুখে এগোচ্ছে তারা ? মোবাইল স্ক্রিনের আলোআধাঁরি দুনিয়ার গোলক ধাঁধাঁয় হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব-কৈশোর ৷ সমাজের অবক্ষয়ের দিক এবার ওয়েব সিরিজে তুলে ধরছেন পরিচালক রাজদীপ ঘোষ ৷

আসছে নতুন ওয়েব সিরিজ '@ফলোয়ার্স' ৷ প্রকাশ্যে চরিত্রেদের প্রথম ঝলক। এই সিরিজের হাত ধরেই ওয়েব দুনিয়ায় পা রাখছেন অভিনেত্রী সোহিনী গুহ রায়। তাঁর চরিত্রের নাম হিয়া। হিয়া আবার 'লক্ষ্মী' সিরিয়ালের সুপারহিট নায়িকা। তবে তারও আজকাল বেশি ঝোঁক পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে বোল্ড শুট বা রিলসের মাধ্যমে ফলোয়ার্স বাড়ানোর দিকে। প্ল্যান করে সোশাল মিডিয়াতে তাঁর মৃত্যুর ভুল খবর প্রকাশ করবে ৷ হিয়ার কাণ্ড কারখানায় বিরক্ত বাড়ির লোকও ৷ এমনকী, হিয়ার অনুগামী অনিন্দ্যও।

আচমকাই সত্যি সত্যি মৃত্যু হয় হিয়ার ৷ তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক ? শুরু হয় তদন্ত ৷ কোনদিকে গড়াবে সিরিজের গল্প? জানতে হলে চোখ রাখতে হবে ক্লিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। সিরিজ প্রযোজনায় স্কাইপ্যানস কমিউনিকেশনস।
অভিনয়ে শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রাশিষ রায়, সোহিনী গুহ রায়, অম্লান মজুমদার, সামিউল আলাম এবং স্যান্ডি।
কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন অম্লান মজুমদার।

সোহিনী গুহ রায় বলেন, "এটা আমার প্রথম ওয়েব সিরিজ এবং আমি খুবই খুশি যে আমার ওয়েব সিরিজের যাত্রা শুরু হল ক্লিকের সঙ্গে। এই ওয়েব সিরিজের বিষয়বস্তু অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। সোশাল মিডিয়া এখন সবার জীবনের একটি বড় অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এটি আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ, তা সম্পূর্ণ আমাদের উপর নির্ভর করে। যদি আমরা আমাদের জীবন ও সুস্থতার উপর সোশাল মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে দিই, তাহলে এটি একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।"

সোহিনী আরও বলেন, "আমি কৃতজ্ঞ এবং ধন্যবাদ জানাই আমাদের ওয়েব সিরিজের পরিচালক রাজদীপ ঘোষকে, যিনি আমাকে এই চরিত্রটি আমার কল্পনা অনুযায়ী গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ট জায়গা দিয়েছেন। চরিত্রটি যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের ছিল এবং অনেকটা মানসিক দৃঢ়তা দিয়ে চরিত্রায়ণ করতে হয়েছে ।"

ইন্দ্রাশিষ রায় বলেন, "আজকের যুগে দুটো বিষয় খুব প্রাসঙ্গিক., একদিকে নিজের জীবন, জীবন ঘিরে নানা স্বপ্ন, অন্যদিকে সোশাল মিডিয়ার হাতছানি ৷ সোশাল মিডিয়া যেমন বদলে দিতে পারে মানুষের জীবন, আবার ধ্বংসও করে দিতে পারে ৷ এই কাজটা করতে গিয়ে একটু সিরিয়াস হয়েই থাকতাম ৷ বড্ড ভাবিয়েছে এই সাবজেক্টটা ৷ কি ভাবিয়েছে বলবো না, শুধু বলবো দেখার পর আপনারাও ভাববেন, ছটফট করবেন ৷"

পরিচালক রাজদীপ ঘোষের কথায়, "নিজের বাবা বা মা মারা যাওয়ার পর হাসিমুখে সেই মৃতদেহর সঙ্গে সেলফি তুলেছেন কখনো? এখন মানুষ তোলে। তারপর সেটা ফেসবুকে পোস্টও করে ৷ কতজন ফলো করছে সেটা উপভোগ করে তারিয়ে তারিয়ে ৷ এ এক ভয়ংকর সময়। ফলোয়ার্স চাই-ই-চাই। এক অদ্ভুত মারণ রোগে আজ আমরা মেতে উঠেছি। মনে হল এর প্রতিবাদ দরকার। আর আমার ভাষা তো একটাই, সিনেমা। তাই সাবজেক্টটা শুনেই ঝাঁপিয়ে পড়লাম।"

লেখক ও অভিনেতা অম্লান মজুমদার বলেন, "যখনই কিছু লিখেছি, চেষ্টা করেছি একটা সামাজিক বার্তা দেওয়ার। ভাগাড় কাণ্ড নিয়ে 'ভাগাড়' বা ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের গল্প 'শক্তিরূপেন' তার জ্বলন্ত উদাহরণ।" শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের সময়ে মূল্যায়ন হতো চরিত্র দিয়ে, অনলাইন ক্লিক দিয়ে নয়। এখন সবাই 'লাইক' আর 'ফলোয়ার'-এর পেছনে ছুটছে। এই সোশ্যাল মিডিয়ার উন্মাদনা মানুষকে আসক্ত করে ফেলেছে। নিখুঁত ছবি তোলার জন্য, হাস্যকর রিল বানানোর জন্য তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করে, শুধু সাময়িক অনলাইন স্বীকৃতির জন্য। এটা এক অদ্ভুত পৃথিবী, যেখানে স্ক্রিনে দেখানো একটা সংখ্যা মানুষের মূল্য নির্ধারণ করে।"

অভিনেতা আরও বলেন "আমি দেখি তরুণ প্রজন্ম তাদের ফোনে এতটাই মগ্ন যে তারা আসল জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। তারা এক অদৃশ্য দর্শকের জন্য এত ব্যস্ত হয়ে পারফর্ম করছে যে নিজের মতো করে বাঁচতে ভুলে যাচ্ছে। এটা এক পাগলামি, এক ধরনের আসক্তি। এটি একটি ডিজিটাল ইঁদুর দৌড়, যার কোনও আসল শেষ নেই। আমি হাজারটা ভার্চুয়াল লাইক পাওয়ার চেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে একটা ভালো কথোপকথনকেই বেশি পছন্দ করব।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.