নয়াদিল্লি, 21 নভেম্বর: শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষ ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে ৷ সেই ইস্যুতে ফের একবার সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস ৷ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গান্ধির দবি, আজই আদানিকে গ্রেফতার করা উচিৎ ৷ একইসঙ্গে মোদি-আদানি দু'জনেই দুর্নীতিগ্রস্ত বলেও অভিযোগ করেন তিনি ৷
সেই সঙ্গে, আদানির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কেলেঙ্কারি সম্পর্কে যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) তদন্তের দাবিকে ফের স্পষ্ট করে দিয়েছে বলেও দাবি করেছে কংগ্রেস। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি বলেন, "সামান্য অপরাধ করলেও জেলে যেতে হয় ৷ এখনই আদানিকে গ্রেফতার করে তাঁকে তদন্তের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিৎ ৷" পাশাপাশি কার্যত হুঁশিয়ারী দিয়ে এদিন রাহুল জানান, সংসদের আগামী শীতকালীন অধিবেশনেও এই বিষয়টি উত্থাপন করা হবে ৷
সেবি প্রধান মাধবী বুচের বিরুদ্ধেও তদন্ত করা উচিত বলেও জানান রাহুল ৷ এদিন বিরোধী দলনেতা বলেন, "আদানি ইস্যুতে জেপিসি তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ 2 হাজার কোটির কেলেঙ্কারি করেছে আদানি ৷ কিন্তু তারপরও আদানিকে গ্রেফতার করা হবে না ! কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদিও আদানি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ৷ দেশ জেনে গিয়েছে মোদি-আদানি এক ৷ আদানি ভারতে নিরাপদ কারণ পিছনে মোদির হাত আছে ৷ প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে আদানিকে সুরক্ষা দিচ্ছেন ৷"
অন্যদিকে, এদিন সেবি'র বিরুদ্ধেও একহাত নিয়েছেন রাহুল গান্ধি ৷ তিনি বলেন, "সেবি প্রধান মাধবী বুচকে পদ থেকে সরিয়ে অন্য কোনও বিশ্বাসযোগ্য কাউকে সেই পদে বসানো উচিত ৷ আদানি গোটা দেশটাকেই হাইজ্যাক করে নিয়েছেন ৷ বিজেপি দলটাই আদানির টাকায় চলে ৷ রাজনৈতিক-আমলাতান্ত্রিক-অর্থনৈতিক দুর্নীতি হয়েছে ৷ যার সঙ্গে সেবি প্রধানও যুক্ত রয়েছেন ৷"
বিরোধী দল "আদানি মেগা কেলেঙ্কারি"-র সিকিউরিটিজ আইন তদন্ত সম্পূর্ণ করার জন্য একজন নতুন এবং বিশ্বাসযোগ্য সেবি (SEBI) প্রধান নিয়োগেরও দাবি জানিয়েছে। সৌরবিদ্যুতের চুক্তির জন্য অনুকূল শর্তের বিনিময়ে ভারতীয় কর্মকর্তাদের 250 মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গৌতম আদানি এবং তাঁর ভাইপোকে অভিযুক্ত সাব্যস্ত করা হয়েছে।
মার্কিন প্রসিকিউটররা আদানি তাঁর ভাইপো সাগর আদানি এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে 2020 থেকে 2024 সালের মধ্যে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সৌরবিদ্যুৎ শক্তির চুক্তির জন্য 250 মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ঘুষ দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে ৷ আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) গৌতম আদানি এবং অন্যদের অভিযুক্ত করা বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে একটি যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) তদন্তের জন্য 2023 সালের জানুয়ারি থেকে জাতীয় কংগ্রেসের দাবিকে ফের একবার প্রমাণ করে।"
রমেশ এক্স-এর একটি পোস্টে বলেছেন, "কংগ্রেস তার হাম আদানি কে হ্যায় (এইচএএইচকে) সিরিজে এই কেলেঙ্কারির বিভিন্ন মাত্রা এবং প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রিয় ব্যবসায়ীর মধ্যে বর্তমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে 100 প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিল। এই প্রশ্নগুলির উত্তর পাওয়া যায়নি ৷" তিনি জানান, কংগ্রেস আদানি গোষ্ঠীর লেনদেনে JPC-র দাবি ফের একবার স্পষ্টভাবে করছে ৷ রমেশের কথায়, "ভারতীয় অর্থনীতির মূল খাতগুলিতে একচেটিয়া ক্রমবর্ধমান, মুদ্রাস্ফীতিকে ত্বরান্বিত করছে ৷"