সীতাপুর, 30 অগস্ট: নদীর ওপারের আতঙ্ক ফিরল এপারে ৷ বাহরাইচের পর এবার ঘটনাস্থল সীতাপুর ৷ গ্রামের বাইরে শৌচকার্য করতে গিয়ে নেকড়ের মুখে পড়ে মৃত্যু হল বৃদ্ধার ৷ দেহ উদ্ধারের পর দেখা গেল বৃদ্ধার গলার কাছে গভীর ক্ষত ৷ যা নিশ্চিত করেছে এটি নেকড়ে হামলা ৷ এর আগে জংলি পশুর আক্রমণে 6 জন আহত হয়েছেন ৷ যার মধ্যে চারটি শিশু রয়েছে ৷ তবে সীতাপুরে নেকড়ের হামলায় মৃত্যু এই প্রথম ৷
নেকড়ের হানায় ত্রস্ত গ্রামজুড়ে লাঠি হাতে পাহারা চলছে দিন থেকে রাত ৷ ফাঁকা থাকলেই ঘরে ঢুকে পড়ছে নেকড়ে ৷ যার সফট টার্গেট বাচ্চা ও বয়স্করা ৷ বাহরাইচে মায়ের কোল থেকে ঘুমন্ত শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল এই জংলি পশু ৷ সারারাত খোঁজাখুঁজির পর সকালে উদ্ধার হয় পাঁচ বছরের আয়ানশের ক্ষত-বিক্ষত দেহ ৷ তবে কপাল জোরে যে বাচ্চারা নেকড়ের হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছে তাদের শরীরে আক্রমণের চিহ্ন বর্তমান ৷ চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট ৷ বাইরে বেরোতেও ভয় পাচ্ছে ওরা ৷ ঘরের ছেলে বা মেয়েকে হারিয়েছেন যাঁরা, কথা বলতে গেলে তাঁদের গলা ধরে আসছে ৷ বাকি বাচ্চাদের চোখের আড়াল হতে দিচ্ছেন না ৷
জানা গিয়েছে, গাঞ্জরী এলাকায় বন্যা ও ভাঙনের পর থেকে নেকড়েদের উৎপাত শুরু হয়েছে । সদরপুর থানা এলাকার ধরমপুর ও গড়থারি গ্রামে নেকড়েরা ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত হামলার ঘটনা ঘটছে । বৃদ্ধার উপর নেকড়ের হামলার ঘটনা ঘাঘরার তরাই এলাকার । এই নদী সীতাপুর ও বাহরাইচ জেলাকে বিভক্ত করেছে । নদীর ওপার অর্থাৎ বাহরাইচেও নেকড়ের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে 10 জনের । তবে দীর্ঘদিন প্রচেষ্টার পর ওই নেকড়ে ধরা পড়লেও আতঙ্ক কমেনি ৷ সাধারণ মানুষের দাবি, আরও নেকড়ে আছে এলাকায় ৷
কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল গ্রামের সাধারণ মানুষ মাঠে-ঘাটে যেতে পারছেন না ৷ কখন নেকড়ের মুখোমুখি হতে হয় ৷ বাচ্চা ও বয়স্করা দিনে রাতে বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছে ৷ সূর্য অস্ত গেলেও গ্রামের কাঁচাবাড়িগুলিতে আতঙ্ক শুরু হয়ে যাচ্ছে ৷ বাচ্চাদের আগলে বসে থাকছেন মায়েরা ৷ নেকড়ের ভয়ে কার্যত ঘরবন্দি উত্তরপ্রদেশের এই গ্রাম ৷ গ্রামবাসীদের বক্তব্য, শুধু মানুষ নয় ৷ গবাদি পশুদের উপরও আক্রমণ চালাচ্ছে নেকড়েরা ৷ কয়েকদিন আগে খামার দেখতে যাওয়া এক মহিলাকেও নেকড়ে খেয়ে ফেলে । খবর পেয়ে বন দফতরের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনার তদন্ত ও অভিযান শুরু করে ।