গোন্ডা (উত্তরপ্রদেশ), 18 জুলাই: ফের ট্রেন দুর্ঘটনা ৷ এবার লাইনচ্যুত 15904 চণ্ডীগড়-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের একাধিক বগি ৷ জানা গিয়েছে, গোন্ডা-মানকাপুর স্টেশনে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে ৷ উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক জানিয়েছেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ ঘটনায় রেলের তরফে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণাও করা হয়েছে। মৃতদের পরিবার পিছু 10 লাখ টাকা করে দেওয়া হবে । গুরুতর আহতরা পাবেন 2.5 লাখ টাকা করে। অন্য আহতদের দেওয়া হবে 50 হাজার টাকা করে ।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গোন্ডায় ট্রেন দুর্ঘটনার খোঁজখবর নিয়েছেন ইতিমধ্যেই ৷ তাঁর সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী আধিকারিকদের দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে নির্দেশ দিয়েছেন ৷ একইসঙ্গে উদ্ধারকাজ ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি আহতদের যথাযথ চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগ যাতে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রেখে কাজ করে সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
একটি সূত্রের খবর অন্তত 10টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে ৷ এই বিষয়ে রেলের সরকারি বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ডিব্রুগড়গামী যাত্রীবাহী ট্রেনের কয়েকটি বগি মতিগঞ্জ ও ঝিলাহি রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে লাইনচ্যুত হয়েছে। উদ্ধারকাজ তদারকি করতে ঘটনাস্থলে রেল ও স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা রয়েছেন। গোন্ডায় ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের বগি লাইনচ্যুত হওয়ার পরে এসডিআরএফ ইতিমধ্যেই উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। উত্তর-পূর্ব রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক পঙ্কজ সিং জানান, ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে ৷ সাত জন গুরুতর আহত হয়েছে ৷
উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক পিটিআইকে জানিয়েছেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। 20 জন গুরুতর আহত হয়েছেন ৷ অন্যদিকে, ঘটনাস্থলে পৌঁছে গোন্ডা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নেহা শর্মা জানান, ট্রেনের আট থেকে 10টা বগি লাইনচ্যুত হয়েছে ৷ তিনি আরও জানান, আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ৷ ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজও তৎপরতার সঙ্গে চলছে। রিলিফ কমিশনার জানান, 40 সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম এবং 15টি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে রয়েছে ৷ উদ্ধার অভিযানের তদারকি করতে লখনউ থেকে প্রায় 150 কিলোমিটার দূরে রেলওয়ে এবং স্থানীয় প্রশাসনের শীর্য আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক জানান, এখন তাদের অগ্রাধিকার হল আহতদের জীবন বাঁচানো এবং তাদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ৷
এদিকে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও উত্তরপ্রদেশের ডিব্রুগড়-চণ্ডীগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং অসম সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে ৷ এই নিয়ে গত কয়েক মাসে একাধিক রেল দুর্ঘটনা গেল। মাত্র মাস দেড়েক আগে ভয়াবহ দুর্ঘটনা দেখেছে পশ্চিমবঙ্গ। জলপাইগুড়ির কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। তাতেও বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। এবার আবার দুর্ঘটনার সাক্ষী হল উত্তরপ্রদেশ।