নয়াদিল্লি, 19 ডিসেম্বর: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর আম্বেদকর-মন্তব্যে উত্তাল রাজনীতি ৷ এরই মধ্যে বিআর আম্বেদকরের নাতি প্রকাশ আম্বেদকর শাহের এহেন মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন। তাঁর অভিযোগ , 'বিজেপির মানসিকতা রয়ে গিয়েছে অতীতের মতোই' ৷ আগেই চাপ বাড়িয়েছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, অমিত শাহকে পদত্যাগ করতে হবে ৷
বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও 'শাহি মন্তব্যের' প্রতিবাদ করতে থাকেন কংগ্রেস সাংসদরা। তার জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদ চত্বর ৷ আর সে সময় শাসক ও বিরোধী সাংসদদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সরাসরি নাম জড়ায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধির। বিজেপির এক মহিলা সাংসদের দাবি, গোলমাল চলাকালীন তাঁর সঙ্গে অভদ্র ব্যবহার করেছেন রাহুল।
এদিন মহারাষ্ট্রের পুনেতে বঞ্চিত বহুজন আঘাড়ির (ভিবিএ) প্রধান প্রকাশ আম্বেদকর বলেন, "একসময় বিজেপির কোনও অস্তিত্ব ছিল না ৷ তখন সংবিধান কার্যকর করার ব্যাপারে তাদের পূর্বসূরি জনসঙ্ঘ এবং আরএসএস বাবাসাহেবের বিরোধিতা করত ৷" তিনি মনে করেন বিজেপির সেই মানসিকতায় কোনও পরিবর্তন যে আসেনি তা অমিত শাহর কথা থেকেই প্রমাণিত হয়েছে।
এদিকে, মহারাষ্ট্রের পরভানি শহরে সংবিধানের প্রতিলিপি অবমাননার ঘটনায় সোমনাথ সূর্যবংশীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ ৷ বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয় ৷ তাঁর পরিবারের জন্য 1 কোটি ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন প্রকাশ আম্বেদকর ৷ তিনি বলেন, "শাহের বক্তব্য অনুযায়ী ভগবানকে শ্রদ্ধা করা উচিত কিন্তু বিআর আম্বেদকরকে নয় ৷ কারণ সংবিধানের জনককে শ্রদ্ধার অর্থ বাকস্বাধীনতাকে স্বীকার করা ৷ আর ভগবানকে পুজো করার মানে তো 'মনুবাদ' ৷" পরভানি শহরে হিংসার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এই হিংসা আদতে গোধরার মতো একটি পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা ৷"
গোলমালের সূত্রপাত গত মঙ্গলবার। সংসদের উচ্চকক্ষে সংবিধানের 75 বছর পূর্তি বিতর্কে ভাষণ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ সেখানে তিনি বলেন, "এখন এক ফ্যাশন হয়েছে— আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর ৷ এত বার যদি ভগবানের নাম নিত, তবে সাত জন্ম স্বর্গবাস হত ৷ একশো বার আম্বেদকরের নাম নেওয়া হয়, কিন্তু আমি বলতে চাই তাঁর প্রতি আপনাদের (কংগ্রেস) অনুভূতি কী ? জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে আম্বেদকরের অনেক মতপার্থক্য ছিল ৷ সেই কারণে নেহরুর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি ৷" শুধু তাই নয়, শাহ মনে করিয়ে দেন বাবাসাহেবের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রচার পর্যন্ত করেছিলেন জওহরলাল নেহরু। আর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই সরগরম জাতীয় রাজনীতি।