আসানসোল ও কুন্তীঘাট, 19 জানুয়ারি: হিন্দুদের ঘরে অস্ত্র রাখা নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মন্তব্য ঘিরে দিনভর রাজনৈতিক মহলে তরজা হল। রবিবার হুগলির কুন্তিঘাটের রাম মন্দিরের উদ্বোধনে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, "হিন্দুরা বাড়িতে ধারালো অস্ত্র রাখুন।"
এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য, "একজন জঙ্গি যে ভাষায় কথা বলে উনিও সেই ভাষায় কথা বলছেন।" এরপর আসানসোলে এসে ফিরহাদ হাকিমকে জবাব দেন সুকান্ত। তাঁর কটাক্ষ, " হাতে অস্ত্র রাখলেই কেউ কি জঙ্গি হয়ে যায়! তবে কি দেব-দেবীরাও জঙ্গি?"
সুকান্ত কী বলেছেন ?
বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, "রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদি নিজের ধর্ম-সংস্কৃতি আগামী প্রজন্মকে বাঁচাতে চান, ছেলেদের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার যা বানানোর বানান ৷ কিন্তু আগে ভালো হিন্দু বানান। যে নিজে ধর্মের প্রতি সমর্পিত হবে। আর বাড়িতে একটা করে ধারালো অস্ত্র রাখুন। আমরা কাউকে আক্রমণ করতে যাই না। কিন্তু আক্রমণ হলে নিজের আত্মরক্ষার অধিকার সবার আছে। পুলিশ আসা পর্যন্ত বাঁচতে হবে। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ বিএসএফ নামাবেন সেই পর্যন্ত আপনাকে বাঁচাবে কে ? দিদির পুলিশ বাঁচাবে না।" অন্যদিকে, সইফ আলি খানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের যোগ থাকা প্রসঙ্গে রাজ্য সভাপতি বলেন, "এসবই দিদির অনুপ্রেরণা। নদিয়া দিয়ে ঢুকিয়ে তাকে চালান করে দিয়েছেন।"
অসিত মজুমদারের জবাব
সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য প্রসঙ্গে চুঁচুড়া তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার কটাক্ষের সুরে বলেন, " ওঁর সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার নেই ৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচিত সুকান্ত বিরুদ্ধে এফআইআর করা।"
ফিরহাদকে জবাব সুকান্তর
রবিবার কুন্তীঘাটের পর আসানসোলের বিজেপির বনভোজন অনুষ্ঠানে এসেছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। সেখানে তিনি ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেন। তাঁর কথায়, "ববি হাকিম সাহেবের বক্তব্যকে যদি ধরি তাহলে বলতে হয় সব দেব-দেবীর হাতেই অস্ত্র থাকে। তাহলে কি উনি বলতে চাইছেন, সব দেব-দেবীরাও জঙ্গি ? ভারতীয় সংস্কৃতিতে দেব-দেবীর হাতে অস্ত্র থাকে। এমনকী অনেক সম্প্রদায় আছে, যেমন শিখ সম্প্রদায় তাদেরও সংস্কৃতির অঙ্গ কৃপাণ রাখা।"
কলকাতার মেয়রকে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, "ফিরহাদ হাকিম সাহেবও নাকি দুর্গাপুজো করেন। জানি না সেটা তিনি কীভাবে করেন ? সেই দুর্গাপুজোয় মা দুর্গার হাতে যে অস্ত্রগুলো তিনি দেন সেগুলো প্রতিকী অস্ত্র নয়! আমাদের শাস্ত্রেই দুষ্টের দমন আর সৃষ্টের পালনের কথা বলা আছে। তার জন্য অস্ত্রের প্রয়োজন। হিন্দুদের বাড়িতে ধারালো অস্ত্র রাখা উচিত।"