কামান-গোলার শব্দ শুনে দুর্গাপুজো শুরু হত উদগ্রামে - Durga Puja 2024
🎬 Watch Now: Feature Video
ওপার বাংলার দিনাজপুরের রাজার বাড়ির দুর্গোৎসবের সূচনায় কামানের গোলা ছোড়া হতো। সেই গোলার শব্দ শুনে এপার বাংলার দিনাজপুরের উদগ্রামের দুর্গাপুজোর বোধন শুরু হত। এমনটাই রীতি ছিল দীর্ঘকাল ধরে। কিন্তু দেশভাগের পর দুই বাংলার মাঝে কাঁটাতারের বেড়া সীমারেখা বেঁধে দিয়েছে। আজ আর দিনাজপুরের রাজাও নেই । নেই সেখানকার কামানের গোলার আওয়াজ। তবে সেই নির্দিষ্ট বিধি মেনেই 500 বছরের বেশি সময় ধরে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ব্লকের রাধিকাপুর গ্রামপঞ্চায়েতের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রাম উদগ্রামের মন্দিরে দেবী দুর্গা পূজিতা হয়ে আসছেন।
উদগ্রামের দেবীর বহু মাহাত্যের কথা ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যজুড়ে। তাইতো আজও পুজোর চারটে দিন লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে সীমান্তের প্রত্যন্ত এলাকার অজপাড়াগাঁয়ে।
- গ্রামের কোনও বাড়িতে আগুন লাগলে দৌড়ে এসে দেবী দুর্গার মন্দিরের দরজা খুলে দিলেই আর সেই আগুন ছড়িয়ে অন্য কোনও বাড়িতে লাগবে না। কিংবা সন্তানসন্ততি না-হওয়া থেকে যে কোনও মানতই যে পূরণ করেন উদগ্রামের মন্দিরের দেবী দুর্গা। এমনটাই মনে করেন গ্রামবাসীরা।
- গ্রামের যে বাড়িতে বিয়ে বা সামাজিক অনুষ্ঠানই হোক না কেন তার প্রথম নিমন্ত্রণ পত্রটা মন্দিরে মায়ের হাতে দিয়ে অন্যত্র বিলি করেন গ্রামের বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, গ্রামের কোনও বাড়িতে পুজো পার্বণ, বিয়ে, অন্নপ্রাশন কিছুই হয় না। সবই হয় এই উদগ্রাম দেবীর দুর্গার মন্দির চত্বরে।
- গ্রামে একসঙ্গে একাধিক বিয়ে থাকলেও এই মন্দির চত্বরেই সার সার দিয়ে তৈরি করা হয় হয় ছায়ামণ্ডপ। পাত্রপাত্রীর বিয়ে হবে মন্দির চত্বরেই। খাওয়া দাওয়া বা আনুসাঙ্গিক অনুষ্ঠান বাড়িতে হলেও সকল মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান করতে হবে দেবীর সামনেই। এমনটাই রীতি করে নিয়েছেন উদগ্রামের বাসিন্দারা।
রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, বালুরঘাট, মালদা, শিলিগুড়ি, কলকাতা, দিল্লি, এমনকী বাংলাদেশ থেকেও ভক্ত ও দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে উদগ্রামের দুর্গোৎসবে। দেবীর কাছে যে যা মানত করেন তা ফলে যায় এবং তাঁরাই মন ভরে দান করে যান এই মন্দিরে, এমনটাই জানান স্থানীয়রা ৷ হেমন্ত দাস নামে এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, এই গ্রামের 22টি পরিবারের সদস্যরা মিলে এই পুজোর আয়োজন করে। এখানে কোনও অন্য ভোগ হয় না, শুধু, লুচি-মিষ্টি-সুজি দেওয়া হয় মাকে।