ETV Bharat / state

আবাস যোজনায় বাড়ি পাননি, অট্টালিকা ছেড়ে ত্রিপলের নীচে জমিদার পরিবার - PRADHAN MANTRI AWAS YOJANA

শতাধিক পুরনো অট্টালিকা আজ ভগ্নপ্রায় ৷ কালের নিয়মে জমিদারি হারিয়ে প্লাসটিকের ছাউনির তলায় কোনওরকমে দিন কাটছে রায় পরিবারের ৷

Asansol News
জমিদার রায়রা এখন আবাস যোজনার ঘরের দিকে তাকিয়ে (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 20, 2024, 8:49 PM IST

আসানসোল, 20 নভেম্বর: এক কালে যাঁদের কথায় এলাকার লোকজন উঠত বসত সেই জমিদারদের বর্তমান অবস্থা জানলে অবাক হবেন ৷ ভাগ্যের পরিহাসে আজ তারা সর্বশান্ত ৷ এখন আবাস যোজনার বাড়ি ও সরকারি সুযোগ-সুবিধার দিকে তাকিয়ে জমিদার রায়'রা ৷

প্রায় 400 বছর আগে আসানসোলের সালানপুরের জমিদার ছিল রায় পরিবার । কালের গ্রাসে সেই জমিদারি আর নেই । বর্তমান প্রজন্মের মনোরঞ্জন রায় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে দিনমজুরি করে কোনওমতে সংসার চালান । সুবিশাল অট্টালিকা ছিল একসময় । আজ সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত অট্টালিকাই যেন রায় পরিবারের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে । বিপজ্জনক সেই বাড়িটিতে আর থাকা যায় না । অথচ বাড়ি করার টাকাও নেই । তাই অগত্যা থাকতে হচ্ছে ত্রিপল খাটিয়ে ।

একসময়ের জমিদার আজ আবাস যোজনার বাড়ির অপেক্ষায় (ইটিভি ভারত)

সরকারি আবাস যোজনায় নাম নথিভুক্ত হচ্ছে না মনোরঞ্জনবাবুর । কারণ পারিবারিক সূত্রে তাঁর নাকি বিরাট অট্টালিকা রয়েছে । পরিবারটির দুর্দশার কথা জেনে বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন । চেষ্টা করছেন যাতে কোনওভাবে যদি মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই করে দিতে পারেন ।

সালানপুর ব্লকের কল্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কল্যা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে আজও দাঁড়িয়ে রায়দের জমিদারির নিদর্শন । প্রাচীন ভগ্নপ্রায় অট্টালিকা । জানা যায়, একসময় এই রায় পরিবারের জমিতেই এলাকায় হাসপাতাল, স্কুল, মন্দির গড়ে উঠেছে । বর্তমানে সেই পরিবারের লোকেরাই রয়েছেন ত্রিপল খাটিয়ে ।

Salanpur Zamindar Family Situation
জমিদারদের অট্টালিকার বর্তমান ভগ্নদশা (ইটিভি ভারত)

সুবিশাল দালান ঘর থাকলেও তা আর বাসযোগ্য নয় । অট্টালিকা যে বিপজ্জনক তা আগেই ঘোষণা করা হয়েছে । অথচ এই দালান বাড়ির কারণেই মনোরঞ্জনবাবুর নাম আবাস যোজনায় নথিভুক্ত হচ্ছে না । সরকারি নিয়মে কারও নামে পাকা বাড়ি থাকলে তিনি আবাস যোজনায় বাড়ি পান না । তাই বারবার আবেদন করলেও মনোরঞ্জনবাবুর নাম বাতিল হয়ে যাচ্ছে । পেশায় দিনমজুর মনোরঞ্জন রায় পড়েছেন সরকারি নিয়মের গেরোয় । স্ত্রী ভাগ্যবতী রায় ও সন্তানদের নিয়ে প্লাস্টিকের ত্রিপল দিয়ে ছাউনি করা ঘরে দিন গুজরান করছেন ।

স্থানীয় মানুষজন থেকে শুরু ক'রে পঞ্চায়েত প্রধান সবাই জানে তাদের দুর্দশার কথা । কিন্তু সরকারি আইনের গেরোয় সব আটকে গিয়েছে ।

Asansol News
জমিদারবাড়ির ভগ্নপ্রায় অবস্থা (ইটিভি ভারত)
এই বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শ্রীকান্ত পাতর বলেন, "আমরা বহুকাল ধরেই জানি পরিবারটি খুব কষ্টের মধ্যে আছে । কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কারও পাকা বাড়ি থাকলে তাকে আবাস যোজনার তালিকাভুক্ত করা যায় না । যদিও ওদের বাড়িটি বাসযোগ্য নয় । আমরা বিষয়টি বিডিওর কানেও তুলেছি । অন্য সরকারি আধিকারিকদেরও জানিয়েছি । আশা করছি এবার একটা নিশ্চয়ই সুরাহা হবে ।"
Asansol Zamindar Family Present Situation
এককালের জমিদার রায়দের বর্তমান অবস্থা (ইটিভি ভারত)

অন্যদিকে, পরিবারের দুর্দশার কথা জেনে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বারাবনির বিধায়ক তথা আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায় । তাঁর কথায়, "আমি ঘটনার কথা জানতে পেরেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা ভোলা সিংকে পরিদর্শন করতে পাঠিয়েছিলাম । খুব দ্রুত ওই পরিবারটির জন্য একটি বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার আমরা চেষ্টা করছি । অন্তত অ্যাসবেস্টসের ছাদ দিয়েও যদি একটা বাড়ি করে দেওয়া যায় তাহলেও পরিবারটি আশ্রয় পাবে ।"

আসানসোল, 20 নভেম্বর: এক কালে যাঁদের কথায় এলাকার লোকজন উঠত বসত সেই জমিদারদের বর্তমান অবস্থা জানলে অবাক হবেন ৷ ভাগ্যের পরিহাসে আজ তারা সর্বশান্ত ৷ এখন আবাস যোজনার বাড়ি ও সরকারি সুযোগ-সুবিধার দিকে তাকিয়ে জমিদার রায়'রা ৷

প্রায় 400 বছর আগে আসানসোলের সালানপুরের জমিদার ছিল রায় পরিবার । কালের গ্রাসে সেই জমিদারি আর নেই । বর্তমান প্রজন্মের মনোরঞ্জন রায় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে দিনমজুরি করে কোনওমতে সংসার চালান । সুবিশাল অট্টালিকা ছিল একসময় । আজ সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত অট্টালিকাই যেন রায় পরিবারের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে । বিপজ্জনক সেই বাড়িটিতে আর থাকা যায় না । অথচ বাড়ি করার টাকাও নেই । তাই অগত্যা থাকতে হচ্ছে ত্রিপল খাটিয়ে ।

একসময়ের জমিদার আজ আবাস যোজনার বাড়ির অপেক্ষায় (ইটিভি ভারত)

সরকারি আবাস যোজনায় নাম নথিভুক্ত হচ্ছে না মনোরঞ্জনবাবুর । কারণ পারিবারিক সূত্রে তাঁর নাকি বিরাট অট্টালিকা রয়েছে । পরিবারটির দুর্দশার কথা জেনে বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন । চেষ্টা করছেন যাতে কোনওভাবে যদি মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই করে দিতে পারেন ।

সালানপুর ব্লকের কল্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কল্যা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে আজও দাঁড়িয়ে রায়দের জমিদারির নিদর্শন । প্রাচীন ভগ্নপ্রায় অট্টালিকা । জানা যায়, একসময় এই রায় পরিবারের জমিতেই এলাকায় হাসপাতাল, স্কুল, মন্দির গড়ে উঠেছে । বর্তমানে সেই পরিবারের লোকেরাই রয়েছেন ত্রিপল খাটিয়ে ।

Salanpur Zamindar Family Situation
জমিদারদের অট্টালিকার বর্তমান ভগ্নদশা (ইটিভি ভারত)

সুবিশাল দালান ঘর থাকলেও তা আর বাসযোগ্য নয় । অট্টালিকা যে বিপজ্জনক তা আগেই ঘোষণা করা হয়েছে । অথচ এই দালান বাড়ির কারণেই মনোরঞ্জনবাবুর নাম আবাস যোজনায় নথিভুক্ত হচ্ছে না । সরকারি নিয়মে কারও নামে পাকা বাড়ি থাকলে তিনি আবাস যোজনায় বাড়ি পান না । তাই বারবার আবেদন করলেও মনোরঞ্জনবাবুর নাম বাতিল হয়ে যাচ্ছে । পেশায় দিনমজুর মনোরঞ্জন রায় পড়েছেন সরকারি নিয়মের গেরোয় । স্ত্রী ভাগ্যবতী রায় ও সন্তানদের নিয়ে প্লাস্টিকের ত্রিপল দিয়ে ছাউনি করা ঘরে দিন গুজরান করছেন ।

স্থানীয় মানুষজন থেকে শুরু ক'রে পঞ্চায়েত প্রধান সবাই জানে তাদের দুর্দশার কথা । কিন্তু সরকারি আইনের গেরোয় সব আটকে গিয়েছে ।

Asansol News
জমিদারবাড়ির ভগ্নপ্রায় অবস্থা (ইটিভি ভারত)
এই বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শ্রীকান্ত পাতর বলেন, "আমরা বহুকাল ধরেই জানি পরিবারটি খুব কষ্টের মধ্যে আছে । কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কারও পাকা বাড়ি থাকলে তাকে আবাস যোজনার তালিকাভুক্ত করা যায় না । যদিও ওদের বাড়িটি বাসযোগ্য নয় । আমরা বিষয়টি বিডিওর কানেও তুলেছি । অন্য সরকারি আধিকারিকদেরও জানিয়েছি । আশা করছি এবার একটা নিশ্চয়ই সুরাহা হবে ।"
Asansol Zamindar Family Present Situation
এককালের জমিদার রায়দের বর্তমান অবস্থা (ইটিভি ভারত)

অন্যদিকে, পরিবারের দুর্দশার কথা জেনে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বারাবনির বিধায়ক তথা আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায় । তাঁর কথায়, "আমি ঘটনার কথা জানতে পেরেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা ভোলা সিংকে পরিদর্শন করতে পাঠিয়েছিলাম । খুব দ্রুত ওই পরিবারটির জন্য একটি বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার আমরা চেষ্টা করছি । অন্তত অ্যাসবেস্টসের ছাদ দিয়েও যদি একটা বাড়ি করে দেওয়া যায় তাহলেও পরিবারটি আশ্রয় পাবে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.