আসানসোল, 13 নভেম্বর: জেলা পরিষদের অধীনে থাকা বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় টোল প্লাজা নাকি 10 বছর ধরে বিনা টেন্ডারেই চলছে । এমনই অভিযোগ করেছেন এক ব্যক্তি । অভিযোগকারীর দাবি, তথ্য জানার অধিকারে আবেদন করে তিনি জেনেছেন, 2014 সালের পর থেকে এই টোল প্লাজা সংক্রান্ত কোনও তথ্যই নেই পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের কাছে ।
বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় সালানপুরের রূপনারায়ণপুর টোল প্লাজা । পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের অধীনে থাকা এই টোল প্লাজাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক । স্থানীয় এক বাসিন্দা গোবর্ধন মণ্ডল এই বিতর্ক তুলে দিয়েছেন ।
তাঁর দাবি, পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের কাছে সরকারি নিয়মেই তথ্য চেয়ে তিনি বিফল হয়েছেন । 2014 সালের পর থেকে সরকারি বিভিন্ন দফতরে কড়া নেড়েও তিনি এই টোল প্লাজা নিয়ে কিছুই জানতে পারেননি । কিসের ভিত্তিতে বছরের পর বছর বিনা টেন্ডারে, একই শুল্কে এই টেন্ডার চলছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি৷ এতে সরকারের রাজস্বও ক্ষতি হচ্ছেও বলে দাবি গোবর্ধন মণ্ডলের ।
রূপনারায়ণপুরের বাসিন্দা গোবর্ধন মণ্ডল বলেন, "একই ব্যক্তি বা কোম্পানি প্রায় 10 বছরের সময় ধরে চালাচ্ছে রূপনারায়ণপুর টোল প্লাজা । তথ্য চাওয়ার অধিকারে জেনেছি, সরকারের কাছেও 2014 সালের পর থেকে ওই টোল প্লাজার পুনর্নবীকরণ বা বর্ধিতকরণের কোনও তথ্য নেই । দীর্ঘদিন ধরে বহু সরকারি দফতরে অভিযোগ জানিয়েছি, কোনও লাভ হয়নি । কেন এত বছর ধরে নতুন টেন্ডার হয় না ? টেন্ডার হলে অন্যরা যেমন সুযোগ পাবে, তেমনই রাজ্য সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পেতে পারে । কিন্তু টেন্ডার না-হয়ে একজনকেই বছরের পর বছর অনুমতি দেওয়া হয় কেন ?"
সরকার ব্যবস্থা না নিলে জনস্বার্থ মামলার পথেও তিনি হাঁটতে পারেন বলে জানিয়েছেন । যদিও বিষয়টি নিয়ে পাশ কাটিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় । তাঁর কথায়, "যেহেতু এটা জেলা পরিষদের বিষয়, তাই তারাই দেখবে বিষয়টি ।"
যদিও জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ আরমান বলেন, "বর্ধিতকরণের নিয়ম মেনেই হয়তো টেন্ডারের সময়কাল বেড়েছে । তবে ওই ব্যক্তি ও কোম্পানির কাছে টাকা বকেয়া রয়েছে জেলা পরিষদের । বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে ।" জেলা পরিষদের মেন্টর ভি শিবদাসন দাসু বলেন, "কার নামে টেন্ডার আর কে টোল চালাচ্ছে, আর কারই বা পিছনে হাত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে । বছর বছর টেন্ডার না করে টোল চলায় সরকারি রাজস্বের তো ক্ষতি হচ্ছে ।"
অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করেছে গেরুয়া শিবির । বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, "শুনলাম সরকারের কাছে গত 10 বছরে কোনও তথ্যই নেই । অর্থ্যাৎ টোলপ্লাজায় ওই আয়ের টাকা সরাসরি তৃণমূল নেতাদের পকেটে ঢুকেছে ।"