বারাসত, 5 এপ্রিল: গত লোকসভা নির্বাচনে রথীনের খাসতালুকে ন'টি বুথেই হারতে হয়েছে সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। সেই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার এই ন'টি বুথে বাড়তি নজর দিল তৃণমূল কংগ্রেস। লক্ষ্য একটাই, হারানো জমি পুনরুদ্ধার করে ভোটের অংক বাড়ানো। যাতে লিড পেয়ে দলীয় প্রার্থীর জয় সুনিশ্চিত করা যায়। সেই লক্ষ্যেই রথীন ঘোষের বিধানসভা, মধ্যমগ্রামের পশ্চিম খিলকাপুর পঞ্চায়েতের নেতাজি পল্লীতে জনসংযোগে বিশেষভাবে জোর দিয়েছে শাসক শিবির।
গ্রামীণ এই এলাকায় তৃণমূল প্রার্থী ও চিকিৎসক কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সমর্থনে বাড়ি বাড়ি চলছে জোরকদমে প্রচার। সভা-সমিতির মাধ্যমে ভোটারদের মন পেতে চেষ্টার কোনও কসুর করছে না তৃণমূল নেতৃত্ব। 2019 লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম খিলকাপুর পঞ্চায়েতের এই ন'টি বুথ থেকে প্রায় 2 হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন বিদায়ী সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। শুধু তিনি নন! 2021 বিধানসভা নির্বাচনে খোদ রথীন ঘোষকেও হারতে হয়েছিল নেতাজি পল্লীর এই ন'টি বুথ থেকে।
তিনি প্রায় 1 হাজার 100 ভোটে হেরেছিলেন সেখান থেকে। যার ফলে হারা এই ন'টি বুথে ভোটের ফলাফলের অংক কমিয়ে সেই সমস্ত বুথগুলি থেকে মার্জিন বাড়ানোই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ শাসকদলের কাছে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য তৃণমূল অবশ্য ভরসা রেখেছে স্থানীয় বিধায়ক রথীন ঘোষের উপরই। তাঁকেই বিশেষ এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। দায়িত্ব হাতে পেয়ে তিনিও নেমে পড়েছেন জনসংযোগে। কোথাও কোনও খামতি রাখছেন না। যখনই সময় পাচ্ছেন। তখনই দলীয় প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদারের হয়ে পশ্চিম খিলকাপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ।
নেতাজি পল্লী এলাকায় হেরে যাওয়া এই ন'টি বুথের ভোট সমীকরণ বদলাতে রীতিমতো মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। এদিকে, লোকসভা এবং বিধানসভা।পরপর এই দুটি বড় নির্বাচনে মধ্যমগ্রামের গ্রামীণ এলাকার ন'টি বুথে হারের দুর্নাম ঘোচাতে চাইছে শাসক শিবির। তা কিন্তু স্পষ্ট হয়েছে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের কথাতেই। তিনি বলেন, "গতবার এই ন'টি বুথ থেকে কাকলি ঘোষ দস্তিদার 1900 ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। আবার 2021 বিধানসভা নির্বাচনে আমাকে হারতে হয়েছিল প্রায় 1100 ভোটে। সেই ভোটের সমীকরণ পাল্টিয়ে প্রার্থীর জয়ের মার্জিন বাড়াতে বদ্ধপরিকর আমরা। যেভাবে মানুষের সাড়া পাচ্ছি। মানুষ যেভাবে প্রার্থীর সমর্থনে বিভিন্ন প্রচার কর্মসূচিতে সামিল হচ্ছেন। তাতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস এবার পরিবর্তন হবেই ওই ন'টি বুথে।"
খাদ্যমন্ত্রীর দাবি, "2011 আগের নেতাজি পল্লী। আর 2024 নেতাজি পল্লীর মধ্যে আকাশপাতাল তফাৎ । এর নেপথ্যে রয়েছে এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন।" তবে বিজেপি-র দাবি, খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ নেতাজি পল্লীতে পড়ে থাকলেও সেখানে কোনও পরিবর্তন হবে না ৷ এমনটাই মনে করেন বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা বর্তমান রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র। তাঁর কথায়, "রথীন ঘোষকে মনে করাতে চাই। এটা পঞ্চায়েত নির্বাচন নয়। লোকসভা নির্বাচন। মানুষ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় সুষ্ঠুভাবে ভোট দেবে। তাই, উনি যতই চেষ্টা করুক ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ ভোট পেয়ে জয়লাভ করবে ওই ন'টি বুথ থেকে। তৃণমূলকে বাংলার মানুষ আর চাইছে না। কারণ, তাঁরা চোরের দলে পরিণত হয়েছে। এবারও তাঁদের প্রত্যাখ্যান করবে রাজ্যের সাধারণ মানুষ। এটা একপ্রকার নিশ্চিত।"
আরও পড়ুন: