বারাসত, 13 জুন: তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর জামিন মঞ্জুর করল বারাসত আদালত ৷ নিউটাউনে মারধরকাণ্ডে দু'হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে বৃহস্পতিবার জামিন পেলেন অভিনেতা তথা নেতা সোহম ৷ নিউটাউনের একটি রেঁস্তোরায় মারধরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার বারাসত আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন অভিযুক্ত সোহম ৷
তাঁর আবেদনের ভিত্তিতেই এদিন জামিন মামলার শুনানি চলে সিজেএম-এর এজলাসে ৷ বাদী-বিবাদী দু'পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিকেল নাগাদ সোহম চক্রবর্তীর জামিন মঞ্জুর করেছেন সিজেএম আদালতের বিচারক ৷
আদালত সূত্রে খবর, নিউটাউন মারধরকাণ্ডে চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে টেকনো সিটি থানায় এফআইআর করেন আক্রান্ত রেঁস্তোরার মালিক ৷ সেইমতো পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির 506, 323, 341 এবং আইপিসি-র 34 ধারায় মামলা রুজু করে ৷ প্রতিটি ধারাই জামিন যোগ্য হওয়ায় বৃহস্পতিবার বারাসত জেলা আদালত থেকে সহজেই জামিন পেয়ে যান বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী ৷
তবে, সিসিটিভি ফুটেজে বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর রেঁস্তোরার মালিককে মারধর করার দৃশ্য ফুটে উঠেছে ৷ এরপরও তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে জামিন যোগ্য ধারায় মামলা রুজু হওয়ায় একাধিক প্রশ্ন উঠেছে ! তাহলে কি শাসকদলের বিধায়ক হওয়াতেই সোহমের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় মামলা রুজু করল পুলিশ ? সেই কারণেই কি তিনি সহজেই জামিন পেয়ে গেলেন বারাসত আদালত থেকে ? যদিও জামিনের বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল বিধায়ক ৷ বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন বলে কার্যত এড়িয়ে গিয়েছেন সোহম ৷
তৃণমূল নেতার এই জামিন ইস্যুতে এদিন মুখ খুলেছেন মামলার সরকারি আইনজীবী অলোক সমাজপতি। তিনি বলেন, "সোহমের বিরুদ্ধে জামিন যোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছিল ৷ সেই কারণেই এদিন সিজেএম আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছেন ৷"
এদিকে, রেঁস্তোরায় মারধরের বিতর্ক পিছু ছাড়তে না ছাড়তেই ফের বিতর্কে জড়িয়েছেন বিধায়ক সোহম ৷ তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীদের আদালত চত্বরে অতি সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । ধাক্কাধাক্কির জেরে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের অনেকেই টাল সামলাতে না-পেরে পড়ে যান আদালত চত্বরে ৷ ভয়ে চিৎকার করে ওঠে এক শিশুও, যা ঘিরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে জনমানসে ৷
অন্যদিকে, আদালতের ভিতরে মুখ্য সরকারি আইনজীবী শান্তময় বসুর চেম্বারে সোহমের দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপির লিগ্যাল সেল। কীভাবে একজন অভিযুক্ত দু'ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মুখ্য সরকারি আইনজীবীর চেম্বারে বসে থাকতে পারেন, তা নিয়ে সরব হয়েছেন পদ্ম শিবিরের আইনজীবীদের একাংশ ৷
যদিও আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী শান্তময় বসুর দাবি, "সোহমের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয় আমার। ও আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। গল্প করলাম দু'জনে। মুখ্য সরকারি আইনজীবী হিসেবে সোহম আসেনি আমার কাছে। আমি তৃণমূল দলের আইনজীবী সেলের প্রেসিডেন্ট। ও আমার দলের বিধায়ক। আসতেই পারে অসুবিধা কোথায় ? আমার এখানে যে কেউ আসতে পারে, যে কোনও কারণে। না জেনেই এসব নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।"