কলকাতা/দুর্গাপুর, 28 অক্টোবর: সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে মহিলা সাংবাদিককে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে ৷ সেই নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেনে তন্ময় ভট্টাচার্যকে আক্রমণ শানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷
সোমবার দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, "ভাইপোর (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) বিদেশ থেকে নিয়ে আসা আরও উন্নতমানের ওয়াশিং মেশিনে ধোলাই হয়ে যাবেন তন্ময় ভট্টাচার্য ।"
পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা মনে করেন যে একজন মহিলা যখন অভিযোগ করেছেন, তখন তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত । তাঁর কথায়, "এই কারণেই ভারত সরকার পকসো আইন, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের মতো একাধিক ব্যবস্থা করেছে । বিষয়টি খুবই সংবেদনশীল ।"
তবে শুভেন্দু অধিকারী আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজত্বে বিরোধী রাজনৈতিক লোকেদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তদন্ত করানো উচিত । তবে সিপিএম বিরোধী কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি । এর কারণ হিসেবে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক জানান, সিপিএম পশ্চিমবঙ্গে যে কাজটা করছে, সেটা হল ‘নো ভোট টু বিজেপি’, ‘নো ভোট টু মোদিজি’ এবং তারা মূলত হিন্দুদের ভোট কাটছে ।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "এর আগে রাজ্যসভায় সিপিএমের সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি এখন তৃণমূলের শ্রমিক শাখার সভাপতি, তাঁর দক্ষিণ দিনাজপুরে মহিলা ঘটিত ঘটনা প্রকাশ্যে আসে । তাঁর ছবিও ভাইরাল হয় । এই ঘটনার প্রমাণও ছিল । কিন্তু দেখা গেল, তৃণমূলের উন্নত ওয়াশিং মেশিনে ঋতব্রতকে দলে নিয়ে আরও বড় নেতা করা হল । তাই ওরা হয়তো তন্ময়বাবুকেও চায় ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কারণ, বরানগরে সজল ঘোষ গত বিধানসভা নির্বাচনে যে লড়াইটা করেছিল, সেই লড়াই তৃণমূলকে নাড়িয়ে দিয়েছিল । তন্ময় ভট্টাচার্য ভোট কেটে তৃণমূলকে জিততে সাহায্য করেছিল । তাই স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল প্রথমে বাজার গরম করবে । তারপর আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড হবে । তারপর একদিন দেখা যাবে তৃণমূলের আরও উন্নতমানের ওয়াশিং মেশিন, যেটা ভাইপো (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) আমেরিকা বা দুবাই থেকে নিয়ে এসেছে, তাতে তন্ময় ভট্টাচার্যর ধোলাই হবে এবং তৃণমূলের ঝান্ডা ধরবে । তারপর বরানগর, পানিহাটি, কামারহাটি, রাজারহাট-গোপালপুর, দমদম সাউথ ও দমদমের আসনগুলি বাঁচানোর কাজ করবেন ।"
এই বছর হবে না টেট পরীক্ষা । এই নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "কোনোদিনই টেট পরীক্ষা হবে না । কারণ, ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কানাগলিতে ঢুকে পড়েছেন । শতকরা 98 শতাংশ সংখ্যালঘুদের ওবিসি স্ট্যাটাস দিতে গিয়েছিল ৷ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়র বেঞ্চ এটাকে বেআইনি বলে ঘোষণা করেছে । তারপর রাজ্যে সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায় ৷ কিন্তু স্থগিতাদেশ পায়নি । এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উভয় সংকট । কারণ, যদি অবৈধ ওবিসিদের বাদ দেয়, তাহলে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংক চলে যাবে । আর অবৈধ ওবিসি রেখে নিয়োগ করতে পারবে না ।"
অন্যদিকে ঝাড়খণ্ড যাওয়ার পথে দুর্গাপুরের অন্ডাল বিমানবন্দরে নেমে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে মন্তব্য করেন ৷ তিনি বলেন, "জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই ছিলাম, কিন্তু তাঁরা যেদিন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সন্ধি করেছেন, সেদিন থেকে ওদের সঙ্গে নেই ৷ নো কম্প্রোমাইজ উইথ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আরজি করে ডাক্তার বোনের মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷"