শান্তিপুর, 10 জানুয়ারি: 24 ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়ার কথা থাকলেও সপ্তাহে মাত্র তিন দিন থাকেন অ্যানাস্থেটিস্ট। জরুরি পরিস্থিতিতে গর্ভবতী মা হাসপাতালে এলে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয় অন্যত্র। তার মাঝে যদি প্রাণহানি ঘটে তার দায়ভার কার?
প্রসূতি বিভাগে এমনই চরম অব্যবস্থার ছবি নদিয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ৷ দীর্ঘদিন ধরে অ্যানাস্থেটিস্ট না-থাকায় চরম সমস্যায় পড়েছেন গর্ভবতী মায়েরা। স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে 24 ঘণ্টা অ্যানাস্থেটিস্ট থাকার কথা। কিন্তু শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে সপ্তাহে মাত্র তিন দিন থাকেন অ্যানাস্থেটিস্ট। সেই কারণে বাকি 4 দিন হাসপাতালে কোনওভাবেই সিজার করা সম্ভব হয় না। এই চার দিন কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে গর্ভপাতের জন্য প্রসূতি হাসপাতালে ভর্তি হলে তাঁদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়।
আর তা না হলে আছে অন্য ব্যবস্থা। অভিযোগ, প্রসূতিকে ভর্তি নেওয়ার আগে পরিবারকে চাপ দিয়ে সই করিয়ে নেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে রোগীর কোনও সমস্যা হলে তার দায় পরিবারের, হাসপাতালের নয়। অন্যদিকে, ব্যথা নিয়ে যদি কোনও গর্ভবতী মহিলা হাসপাতালে আসেন এবং তৎক্ষণাৎ তাঁর সিজারের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রেও অ্যানাস্থেটিস্ট না-থাকার কারণে নিরুপায় হয়ে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রশ্ন উঠছে, এই সময়ের মধ্যে যদি মা এবং বাচ্চার প্রাণহানি ঘটে তাহলে এই দায়ভার কে নেবে?
এবিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিষ চন্দ্র দাস বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সবথেকে সিজার বেশি হয় নদিয়ায়। সেক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করছি যাতে গর্ভবতী মায়েরা সিজার ছাডাই সন্তান প্রসব করতে পারেন। আমরা অনেকটা সাফল্য পেয়েছি এই প্রচেষ্টায়। তবে, শান্তিপুর হাসপাতালে বর্তমানে একজন অ্যানাস্থেটিস্ট রয়েছেন এবং চারটি প্রসূতি চিকিৎসক রয়েছেন।"
অন্যদিকে, এবিষয়ে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য তথা বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার বলেন, "এবিষয়টা আমার জানা ছিল না। তবে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ। আমি কথা বলে চেষ্টা করব যাতে এই সমস্যার সমাধান ঘটে। সাধারণ মানুষও চাইছেন যাতে অবিলম্বে প্রতিদিন অ্যানাস্থেটিস্ট থাকেন ।"