নয়াদিল্লি, 25 জানুয়ারি: রাত পোহালেই দেশজুড়ে পালিত হবে 76তম প্রজাতন্ত্র দিবস । তার আগে প্রোটোকল মেনে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৷ শনিবার ‘এক জাতি এক নির্বাচন’-এর পক্ষেও সওয়াল করলেন দেশের সাংবিধানিক প্রধান ৷ রাষ্ট্রপতি মুর্মু বলেন, ‘‘এটি শাসনব্যবস্থায় ধারাবাহিকতা বৃদ্ধি, নীতিগত পক্ষাঘাত রোধ, সম্পদের বিচ্যুতি হ্রাস এবং রাজ্যের উপর আর্থিক বোঝা হ্রাস করে দেশে সুশাসন পুনর্নির্ধারণ করতে পারে ।’’
76তম প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি ‘দেশে কয়েক দশক ধরে বিদ্যমান ঔপনিবেশিক মানসিকতার অবশিষ্টাংশ’ দূর করার সরকারের প্রচেষ্টার উপর জোর দেন ৷ তিনটি নতুন আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ-যুগের ফৌজদারি আইন প্রতিস্থাপনের কথাও উল্লেখ করেছেন । রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘আমরা সেই মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রত্যক্ষ করছি ৷ এত বড় সংস্কারের জন্য দূরদর্শিতা ও সাহস প্রয়োজন ।’’
দেশজুড়ে নির্বাচনের সময়সূচি সমন্বয়ের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত বিলের তাৎপর্য তুলে ধরে মুর্মু উল্লেখ করেছেন, ‘এক জাতি এক নির্বাচন’ পরিকল্পনা উন্নত সুশাসন এবং আর্থিক চাপ হ্রাস-সহ অসংখ্য সুবিধা প্রদান করতে পারে । আইনি সংস্কার নিয়ে তিনি ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধি এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের পরিবর্তে ভারতীয় ঐতিহ্যের প্রতিফলনকারী নতুন আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন ।
পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি মুর্মু জানান, শিক্ষার মান, অবকাঠামো এবং ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে গত দশকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে । তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষা খাতে সরকারের বর্ধিত বিনিয়োগ এবং প্রচেষ্টার ফলাফল উৎসাহব্যঞ্জক । আমাদের তরুণ প্রজন্মই আগামিকালের ভারতকে রূপ দিতে চলেছে । শিক্ষা এই তরুণদের মনকে রূপ দেয় । সরকার শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে এবং এই খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি অংশ উন্নত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে । গত দশকে শিক্ষার মান, ভৌত অবকাঠামো এবং ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্র প্রশংসাযোগ্য ৷’’
রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেছেন যে মহিলা শিক্ষকরা এই রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ৷ কারণ গত দশকে যারা শিক্ষক হয়েছেন তাদের 60 শতাংশেরও বেশি মহিলা । তিনি বলেন, ‘‘স্কুল-স্তরের শিক্ষার শক্তিশালী ভিত্তির পাশাপাশি ভারত বিভিন্ন শাখায়, বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নতুন উচ্চতা অর্জন করছে । বৌদ্ধিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে । আমরা গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সে আমাদের র্যাঙ্কিং ধারাবাহিকভাবে উন্নত করেছি ৷ 2020 সালে 48তম স্থান থেকে 2024 সালে 39তম স্থানে উঠে এসেছি ৷’’