মালদা, 16 মার্চ: প্রার্থী ঘোষণার পরই নিজকেন্দ্রে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা ৷ মালদা উত্তরে লোকসভা নির্বাচন 2024 কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর সমর্থনে শনিবার দেওয়াল লিখলেন রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তজমুল হোসেন ৷ যে দেওয়ালে তিনি নিজেদের প্রার্থীর সমর্থনে লিখে প্রচার করেছেন, সেই দেওয়ালেরই একাংশে পদ্ম প্রার্থীর সমর্থনে লেখা রয়েছে ‘আব কা বার, 400 পার ৷’
তজমুলের কথায়, "আজ থেকে আমরা হরিশ্চন্দ্রপুরে উত্তর মালদার দলীয় (তৃণমূল) প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে দেওয়াল লিখন শুরু করলাম ৷ কে প্রার্থী, তা আমাদের কাছে কোনও বিষয় নয় ৷ আমাদের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর জোড়া ফুল ৷ দিদি যাঁকেই দাঁড় করান না কেন, তিনি আমাদের প্রার্থী ৷ বিজেপি 400টির বেশি আসন পাবে বলে দাবি করলেও একটা কথা বলতে পারি, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল 42টি আসনেই জয় পাবে ৷ বিরোধীরা সন্দেশখালি নিয়ে যাই বলুক, এরাজ্যে নারীরা সুরক্ষিত ৷ বিরোধীরা বরং মণিপুরে গিয়ে দেখুক ৷ আমাদের পশ্চিমবঙ্গ অনেক ভালো ৷ আর সন্দেশখালির ঘটনা তো সাজানো ৷ সামান্য ঘটনা ৷" সম্প্রতি সিউড়িতেও প্রশাসনিক সভা ও বেশকিছু প্রকল্পের শিলান্যাসে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, "সন্দেশখালিতে ঘটনা ঘটানো হয়েছে ৷" এবার রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর গলাতেও শোনা গেল একই সুর ৷
এর পালটা আক্রমণ করলেন বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা কমিটির এক্সিকিউটিভ সদস্য রূপেশ আগরওয়ালা ৷ কটাক্ষ করেই বলেন, "তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের কাছে সন্দেশখালি সামান্য ঘটনা ৷ সন্দেশখালির মা-বোনেরা আজ তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন ৷ শেখ শাহজাহান এখন ইডির হেফাজতে ৷ আর তজমুল সাহেব বলছেন, সন্দেশখালির ঘটনা সামান্য ৷ তাঁর লজ্জা হওয়া উচিত ৷ তিনি মা-বোনদের ইজ্জত নিয়ে খেলাকেও সামান্য ঘটনা বলছেন ৷ তাঁকে ধিক্কার জানাচ্ছি ৷ এদের রাজ্য থেকে তাড়াতেই হবে ৷"
তিনি আরও জানান, এবার লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলকে লণ্ঠন নিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না ৷ তৃণমূল নিজের ঘরে আগুন নেভানোর বদলে অন্যের ঘরের আগুনের তদন্ত করছেন ৷ লজ্জা হওয়া উচিত ৷ তাঁর কথায়," তজমুল মণিপুরের নেতা না কি মন্ত্রী ? প্রতিমন্ত্রী হয়ে লালবাতির গাড়িতে চড়ে বেড়ানো ছাড়া তিনি এলাকার কী কাজ করেছেন ? আমি তাঁকে চ্যালেঞ্জ করছি, হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রে তিনি যে ক'টা ভোটে জিতেছিলেন, এবার ভোটে সেটা তিনি অক্ষত রেখে দেখান ৷ তারপর বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশের কথা ভাববেন ৷"
পাশাপাশি সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির সদস্য জামিল ফিরদৌস বলছেন, "যে মন্ত্রী নিজের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না, তিনিই এমন মন্তব্য করতে পারেন ৷ সন্দেশখালি ও মণিপুরের ঘটনা গোটা বিশ্বের কাছে আমাদের মুখ পুড়িয়ে দিয়েছে ৷ মণিপুরের ঘটনা এখন পশ্চিমবঙ্গের বাড়ি বাড়ি ঘটছে ৷ তা হয়তো তজমুল জানেন না ৷ ভোটের কথা মাথায় রেখে এখন কেউ কেউ সন্দেশখালির ঘটনাকে সাজানো বলছে ৷ সন্দেশখালির ঘটনা কিন্তু রাজ্যবাসীর চোখ খুলে দিয়েছে ৷ বাস্তবতাও স্বীকার করে নেওয়া উচিত ৷ নইলে আগামীতে হরিশ্চন্দ্রপুরেও একই ঘটনা ঘটতে পারে ৷ এসব ঘটনার জন্যই পঞ্চায়েতে হরিশ্চন্দ্রপুরে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে ৷"
আরও পড়ুন: