সিউড়ি, 7 ফেব্রুয়ারি: সাম্প্রতিক দ্বৈরথের পর ফের এক মঞ্চে অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখ ৷ দু'জনে পাশাপাশি বসলেন । কিন্ত একে অপরের সঙ্গে কোনও কথা বললেন না ৷ সিউড়িতে সরকারি নার্সিং ট্রেনিং কলেজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখা গেল তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখকে ৷ দু'দিন আগেই 'জেলা পরিষদ 1 নম্বরে নেই' বলেছিলেন অনুব্রত ৷ পালটা সাংবাদিক বৈঠক করে 'খেতে পারছে না তাই চক্রান্ত করছে' বলে মন্তব্য করেছিলেন কাজল শেখ ৷
গরুপাচার ও আর্থিক তছরুপের মামলায় গ্রেফতার হয়ে অনুব্রত তিহারে বন্দি ছিলেন। সেই সময় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি হয়েছিলেন কাজল ৷ এই কাজল শেখ বরাবরই অনুব্রতর যুযুধান হিসেবে পরিচিত। অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে রকেট গতিতে জেলার রাজনীতিতে উত্থান হয় কাজলের ৷ জেল থেকে ফেরার পরেও কাজলের সঙ্গে অনুব্রতর দূরত্ব একই থেকে যায় ৷ মাঝে কয়েকবার এক মঞ্চে দু'জনকে দেখা গিয়েছিল দু'জনকে ৷ দেখা গিয়েছিল কোর কমিটির বৈঠকেও ৷ এমনকী, জয়দেব মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঞ্চে অনুব্রতকে প্রণাম করেছিলেন কাজল ৷
কিন্তু সেই মনোভাব বেশিদিন স্থায়ী হতে পারেনি বলে মত রাজনৈতিক মহলের। সম্প্রতি অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন, "কেন জেলা পরিষদ পিছিয়ে গেল সেটা দেখতে হবে।" এরপরেই দূর্নীতি নিয়ে মুখ খোলেন কাজল । সাংবাদিক বৈঠক করে অনুব্রতকে নিশানা করেন তিনি ৷ কাজল শেখ বলেছিলেন, "আঙ্গুর ফল টক, খেতে পাচ্ছে না তাই চক্রান্ত করার চেষ্টা করছে।"
কাজল-কেষ্টর এই দ্বন্দ্বে উত্তাল জেলার তৃণমূল শিবির । এবার ফের দু'জনকে দেখা গেল একই মঞ্চে ৷ সিউড়িতে সরকারি নার্সিং ট্রেনিং কলেজ উদ্বোধন হল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য গ্রামোন্নয়ন পর্ষদের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, হাসনের বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যরা ৷ এক সঙ্গে প্রদীপ প্রজ্বলন করলেও একে অপরকে সঙ্গে কথা বলেননি কাজল-কেষ্ট।
মঞ্চে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, "ডাক্তাররা যেমন পরিষেবা দেন, তাদের মত একই ভাবে পরিষেবা দেন নার্সেরা ৷ প্রত্যেক নার্সকে সম্মান করি ৷ আমি দিদিকে (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়) বহু আগেই বলেছিলাম বীরভূমে কেন নার্সিং ট্রেনিং কলেজ হবে না ? তারপর এক এক করে বোলপুর, রামপুরহাটের পর সিউড়িতে সরকারি নার্সিং ট্রেনিং কলেজ হল। এটা খুশির বিষয়।"