কলকাতা, 12 অগস্ট: 'তিলোত্তমার খুনি যারা লুকিয়ে আছে, কোথায় তারা, শাস্তি চাই, শাস্তি চাই।' এই স্লোগানকে সামনে রেখে নাগরিক মিছিলে উত্তাল হল রাজপথ। ঠিক তখনই খানিক যেন ছন্দপতন। মিছিলের অগ্রভাগে তখন শিক্ষাবিদ বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, চিকিৎসক অভিজিৎ মুখোপাধ্য়ায়ের মতো একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। আর তার আগে সিআরপিএফ জওয়ানের নিরাপত্তায় হাঁটছেন রাজ্য বিজেপির নেত্রী ডাক্তার অর্চনা মজুমদার। আচমকাই কিছু আন্দোলনকারী এসে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।
আন্দোলনকারী পালটা দাবি, তাঁদের প্রতিবাদ মিছিল অরাজনৈতিক। এই মিছিল থেকে তাঁকে সরে যেতেও বলা হয়। একজন তাঁকে সরিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেন। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে যান বিজেপি নেত্রী। পালটা অর্চনা মজুমদার বলেন, "নাগরিক মিছিলের ডাক দিয়েছেন। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এসেছি। গায়ে হাত দেওয়া হয়েছিল। আমিও পতাকা না নিয়ে অরাজনৈতিকভাবেই মিছিলে হেঁটেছি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা হাইকোর্টে গিয়েছি। বামেদের নোংরামো থেকে এই তদন্ত মুক্ত রাখতে চাই। তৃণমূলের সরকার এই ঘটনার তদন্তে যেটা লুকোতে চাইছে আমরা তার বিরুদ্ধে। আমরা চাই প্রকৃত দোষী ধরা পড়ুক। একজনের পক্ষে ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়। আমরা বিচার চাই। সিবিআই চেয়েছি। আশা করছি কাল শুনানি শেষে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবেন বিচারপতি।"
এদিন এই নাগরিক মিছিল শুরু হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে থেকে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসক থেকে প্রেসিডেন্সির ছাত্র শিক্ষক-সহ বিভিন্ন কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রাক্তন ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসক এই মিছিলে পা মিলিয়েছেন। একটাই আওয়াজ উত্তাল হয়েছে রাজপথ উই ওয়ান্ট জাস্টিস। মিছিল বিধান সরণি থেকে এমজি রোড ধরে যায় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে। সেখান থেকে সোজা শ্যামবাজার হয়ে আরজি কর হাসপাতাল।
মিছিল উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দলের প্রতিনিধি তথা বিশিষ্ট চিকিৎসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "সকলে আজ ঘৃণায় আর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছি। শুধু রাজ্যে নয় গোটা দেশ পথে এই ঘটনার প্রতিবাদ করছে। একজন গ্রেফতার হয়েছে ৷ তবে সকলেই বুঝতে পারছি এমন ঘটনা একজন ব্যক্তি ঘটয়নি। প্রশাসনও সেটা বুঝতে পারছে। দ্রুত অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হোক। কাউকে যেন আড়াল না করা হয়। তাহলে এই ঘটনায় নির্যাতিত বিচার পাবে না। এটা শুধু চিকিৎসকদের নয় সাধারণ মানুষের সমস্যা।"
শিক্ষাবিদ বোলান গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "এই ঘটনা নির্ভয়াকাণ্ড থেকেও অনেক বেশি ভয়াবহ। এটা একটা পাবলিক প্লেসে হয়েছে । এই মহিলাটি একজন প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছেন আমাদের কাছে। আমাদের সমস্ত ছেলে মেয়েদের নিরাপত্তা আজ প্রশ্নের মুখে। এটা গোটা সমাজের ছবি। এটার সংহতি জানাতে আসা আমার। এর বড় অন্যায় জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারব না।"