ব্যারাকপুর, 25 জুলাই: আড়িয়াদহে মা-ছেলেকে মারধরের ঘটনার প্রায় একমাস পরেও খোঁজ মেলেনি ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্রের। ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করতে আড়িয়াদহের 'ত্রাস' ধৃত জয়ন্ত সিং ও তাঁর দুই শাগরেদ সৈকত মান্না ওরফে জঙ্গা এবং রাহুল গুপ্তকে ফের নিজেদের হেফাজতে পেল পুলিশ। বুধবার ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিতে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করেছিল বেলঘরিয়া থানার পুলিশ।
পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিচারক অভিযুক্ত জয়ন্ত সিং এবং তাঁর দুই শাগরেদ সৈকত ও রাহুলকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তের স্বার্থে আড়িয়াদহে মা ও ছেলেকে মারধরের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা অত্যন্ত জরুরি। সেকারণে জয়ন্ত ও তাঁর সঙ্গীদের জেরা করা প্রয়োজন। ধৃতদের জেরা করেই এবিষয়ে তথ্য পেতে চাইছে তদন্তকারী অফিসাররা।
অগস্ট মাসের শেষের দিকে আড়িয়াদহে মা ও ছেলেকে মারধরের ঘটনার পর থেকে তোলপাড় রাজ্যরাজনীতি। ঘটনার চারদিনের মধ্যে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ঘটনার 'মাস্টারমাইন্ড' আড়িয়াদহের ত্রাস জয়ন্ত সিং। তাঁকে জেরা করে জয়ন্তবাহিনীর একের পর 'কীর্তি' সামনে আসতে শুরু করে। ভাইরাল হয় জয়ন্ত ও তাঁর শাগরেদ-দের দাদাগিরির পরপর ভিডিয়োও(যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত)। সেই ভিডিয়োর সূত্র ধরে বাহিনীর একের পর এক সদস্য গ্রেফতারও হন। আড়িয়াদহের তালতলা স্পোটিং ক্লাবে জয়ন্ত ও তাঁর শাগরেদ-দের নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু কামারহাটির আড়িয়াদহতেই জয়ন্ত ও তাঁর বাহিনীর গুন্ডাগিরি সীমাবদ্ধ ছিল না। পার্শ্ববর্তী দক্ষিণেশ্বর থানা এলাকাতেও একাধিক অপরাধ সংগঠিত করেছিলেন 'জায়ান্ট'। সম্প্রতি স্থানীয় এক প্রোমোটারের বাড়িতে জয়ন্ত বাহিনীর সেরকমই একটি হামলার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল। দক্ষিণেশ্বর থানা এলাকায় অপরাধের ঘটনার তথ্য পেতে এর আগে জয়ন্ত সিং এবং তাঁর শাগরেদ সৈকত মান্না ওরফে জঙ্গাকে 8 দিনের পুলিশি হেফাজতে পেয়েছিল সেখানকার তদন্তকারীরা। অন্যদিকে, তালতলা স্পোটিং ক্লাবে গণপিটুনির ঘটনায় এর আগে ধৃত রাহুল গুপ্তকে 4 দিনের পুলিশি হেফাজতে পেয়েছিল দক্ষিণেশ্বর থানার পুলিশ ।
সেই পুলিশি হেফাজত শেষ হওয়ার পর ধৃত জয়ন্ত সিং এবং তাঁর দুই সঙ্গী সৈকত মান্না ওরফে জঙ্গা ও রাহুল গুপ্তকে ফের বুধবার ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয় পুলিশের তরফে। আদালতে সরকারি আইনজীবী ধৃতদের আবারও পুলিশি হেফাজত চেয়ে আবেদন করে বিচারকের সামনে। পুলিশি হেফাজতে চাওয়ার ব্যাখাও দেওয়া হয়। জানানো হয়, মা ও ছেলেকে মারধরের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্রের হদিস পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধৃত তিন জনকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে ৷ তাই পুলিশি হেফাজতের আবেদন মঞ্জুর করা হোক। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে শেষ পর্যন্ত বিচারক জয়ন্ত এবং তাঁর দুই শাগরেদকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।