বর্ধমান, 24 অগস্ট: প্রায় বছর তিনেক আগে ফেসবুকে আলাপ । সেখান থেকে মন দেওয়া নেওয়া । তারপর থেকেই আদিবাসী যুবক অজয় টুডুর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন বর্ধমানের মৃত তরুণী । এমনকী দু'জনেই বেঙ্গালুরুর দুটো আলাদা শপিংমলে কাজও করতেন । তাহলে কী এমন ঘটনা ঘটল যে অজয় ওই তরুণীকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন, সেই উত্তরই খুঁজছে পুলিশ ।
পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, "আদিবাসী তরুণীকে খুনের ঘটনায় নয় দিনের মাথায় পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে । তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় । ধৃতকে আদালতে তুলে দশ দিনের পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়েছে । তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে খুনের মোটিভ কী ছিল জানার চেষ্টা করছে পুলিশ ।"
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইদানীং অজয় ও তরুণীর মধ্যে গন্ডগোল চলছিল । সেই গন্ডগোলের জেরেই খুনের ঘটনা বলে পুলিশের প্রাথমিকভাবে অনুমান । ঘটনার পরে বর্ধমান, শক্তিগড় থানা ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম থানা অভিযুক্তকে ধরার জন্য তল্লাশি শুরু করে । এরপরেই শুক্রবার রাতে তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় ।
প্রসঙ্গত, গত 14 অগস্ট রাতে বর্ধমান থানা এলাকায় গলার নলি কাটা অবস্থায় এক আদিবাসী তরুণীর দেহ উদ্ধার হয় । বছর দুয়েক আগে ওই তরুণী বেঙ্গালুরুতে একটা শপিং মলে কাজ করতে যান । শপিং মলে কাজ করার পাশাপাশি তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগে এম এ পড়ছিলেন । চলতি মাসের 12 তারিখ তিনি বাড়ি ফেরেন । 14 অগস্ট রাত আটটা নাগাদ তিনি মোবাইল ফোনে কথা বলতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান । তারপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি । কিছুক্ষণ পরে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে তাঁর গলাকাটা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় । সেই ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায় জেলাজুড়ে ।
এই ঘটনায় আততায়ী ধরা পড়ছে না কেন সেই প্রশ্ন তুলে আন্দোলনে নামে আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল । তারা পরপর দু'দিন বর্ধমানের গাংপুর, পূর্বস্থলীর নাদনঘাট মেমারি ও জামালপুর এলাকায় পথ অবরোধ করে অপরাধীকে গ্রেফতারের দাবি জানায় । এমনকী তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে দোষীকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে পুলিশকে কয়েকদিন সময়সীমা বেঁধে দেয় । সেই সময়ের মধ্যে অপরাধী ধরা না পড়লে তারা রাজ্যজুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দেয় ৷ পাশাপাশি বাম ছাত্র সংগঠন থেকে শুরু করে জেলা বিজেপি নেতৃত্বও আততায়ীকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে পুলিশের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে সরব হয় ৷