আসানসোল, 20 ডিসেম্বর: গৃহঋণ নিয়ে তার মাসিক কিস্তি দীর্ঘদিন ধরে না দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর! কোর্টের নির্দেশে কাউন্সিলরের সেই বাড়ির দখল নিল ঋণদানকারী সংস্থা। শুক্রবার এই ঘটনা ঘিরে ব্যপক শোরগোল পড়ল আসানসোল পুরনিগমের 63 নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কুলটির পাতিয়ানা মহল্লা এলাকায়। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সেলিম আখতার আনসারির সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি ৷
ঋণদানকারী বেসরকারি সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, 2018 সালে বাড়ি তৈরির জন্য সেলিম আখতার আনসারি ও তাঁর ভাই শামিম আখতার আনসারি 19 লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে ছিলেন। প্রথম দিকে ঠিকঠাকভাবে মাসিক কিস্তি জমা দিলেও, গত 2 বছর ধরে মাসিক কিস্তি জমা দেওয়া বন্ধ করে দেন সেলিম ও শামিম।
ঋণদানকারী সংস্থার পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ করা হয়। অভিযোগ, নিজে তৃণমূল কাউন্সিলর বলে সেই প্রভাব খাটিয়ে ঋণ শোধ করছিলেন না তিনি। বর্তমানে ঋণের পরিমান সুদে আসলে গিয়ে দাঁড়িয়েছে 32 লক্ষ টাকা। বাধ্য হয়ে ওই ঋণদানকারী সংস্থা কোর্টের দ্বারস্থ হয়। কোর্ট নির্দেশ দেয়, ওই কাউন্সিলরের বাড়ি সংস্থা হস্তগত করবে। সেই মতো বার কয়েক নোটিশ দেওয়া হয় কাউন্সিলর সেলিম ও তাঁর ভাইকে।
কিন্তু তারপরেও সাড়া মেলেনি দু'ভাইয়ের। উপরন্তু কাউন্সিলর সেলিম আখতার আনসারি পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। শুক্রবার দুপুরে ঋণদানকারী সংস্থার আধিকারিকরা পৌঁছে যান কুলটির পাতিয়ানা মহল্লায় ওই কাউন্সিলরের বাড়ি দখল নিতে। কাউন্সিলরের ভাই শামিম আখতার বারবার অনুরোধ করেন, কয়েকদিন সময়ও চেয়ে নেন। কিন্তু আধিকারিকরা জানান, তাঁদের কিছু করার নেই। কোর্টের নির্দেশ তাঁদের মানতে হবে। শেষ পর্যন্ত কুলটি থানার পুলিশের সহযোগিতায় তালা ভেঙে বাড়িটির দখল নেয় ওই বেসরকারি ঋনদান সংস্থার আধিকারিকরা।
ঋনদানকারী সংস্থার পক্ষে আধিকারিক তারক সামন্ত বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে লোনের ইএমআই দিচ্ছিলেন না ওঁরা। তাই কোর্টের নির্দেশে আমরা বাড়িটার দখল নিলাম। আজ আর আবেদন করে কোনও লাভ নেই।" অন্যদিকে, কাউন্সিলরের ভাই শামিম আখতার আনসারি বলেন, "দাদা লোন নিয়েছিলেন। আমি সেই বিষয়ে কিছুই জানি না। দাদার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই আমার। দেড় মাস হল দাদা পালিয়ে গিয়েছেন।"