আসানসোল, 29 ফেব্রুয়ারি: প্রথমে তীব্র শব্দ। আর তারপরই ইঞ্জিনের দিক থেকে ধোঁয়া। থেমে গেল ট্রেন। এরপরই বুধবার গুজব ছড়িয়ে যায় ভাগলপুর-ব্যাঙ্গালোর অঙ্গ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লেগেছে। মূলত রেলের এস-টু কামরা থেকেই এই গুজব ছড়ায়। বেশ কয়েকজন রেলযাত্রী আতঙ্কে ও অতি উৎসাহে ট্রেন থেকে নেমে পাশের রেল ট্র্যাকে দাঁড়িয়েছিলেন। তখনই সেই ট্র্যাকে চলে আসে আসানসোল-ঝাঁজা প্যাসেঞ্জার। তাতেই একাধিক ব্যক্তি কাটা পড়েন বলে খবর।
তবে রেলসূত্রে জানানো হয়েছে আসানসোল রেল ডিভিশনের বিদ্যাসাগর ও কাশীটাঁড় স্টেশনের মাঝে ট্রেনে কাটা পড়ে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যে আসানসোল রেল ডিভিশনের ডিআরএম চেতনানন্দ সিংয়ের নির্দেশে 3 সদস্যের তদন্তকারী দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। রাতে আসানসোল স্টেশন পৌঁছয় ভাগলপুর-ব্যাঙ্গালোর অঙ্গ এক্সপ্রেস। রেলযাত্রীরা ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শোনান। হঠাৎই বিকট আওয়াজ উঠতে শুরু করে। তারপরেই ইঞ্জিনের দিক থেকে ধোঁয়া।
অনেকেই ভেবেছিলেন আগুন লেগেছে। সেই ভয়ে ট্রেনের গতি কমলে অনেকেই আতঙ্কে ঝাঁপ দেয়। কিছুক্ষণ পরে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। ট্রেন দাঁড়াতেই ঘটনাটি কী ঘটেছে, তা জানতে রেল যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে পাশের ট্র্যাকে দাঁড়িয়েছিলেন। তখনই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। পাশের ট্র্যাক দিয়ে আসা আসানসোল-ঝাঁজা প্যাসেঞ্জারে কাটা পড়েন একাধিক মানুষ। তবে সংখ্যাটা কত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে রেল দাবি করেছে, দু'জনের মৃত্যু হয়েছে এই ঘটনায়। তাঁদের নামও প্রকাশ করেছে রেল।
একজন, বিহারের সাসারামের বাসিন্দা মণীশ কুমার মণ্ডল (30), অন্যজন বিহারের ঝাঁজার বাসিন্দা সিকান্দার কুমার যাদব (45)। দু'জনের কাছে প্রাপ্ত আধারকার্ড থেকেই এই পরিচয় মিলেছে। রেলের তরফে ওই দুই ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে, রাতে আসানসোল স্টেশনে অঙ্গ এক্সপ্রেস পৌঁছনোর পর ওই ট্রেনের টিটিই বলেন, "সম্ভবত রেল ট্র্যাকে কিছু পাথর স্তুপাকৃতি করে রাখা ছিল। আর তা ইঞ্জিনের সামনে আসাই ঘর্ষণে প্রচণ্ড শব্দ হয় এবং সেই পাথর থেকেই সম্ভবত ধোঁয়া বেরিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, "ট্রেনে কোথাও আগুন লাগেনি। কোনও রেলযাত্রী চেন টানেননি। চালক নিজেই ট্রেন থামিয়েছিলেন, কী হয়েছে ঘটনাটি দেখার জন্য। ট্রেন থামলে বেশ কিছু যাত্রী ট্রেন থেকে নেমে কী ঘটেছে তা জানার জন্য চেষ্টা করছিল। আর তখনই সেই ট্র্যাকে আসানসোল ঝাঁজা প্যাসেঞ্জার চলে আসে।" ওই ট্রেনের আরেক যাত্রী মোকামার বাসিন্দা কৃষ্ণা কুমার বলেন, "প্রচণ্ড শব্দ আর ধোঁয়া দেখে মনে হচ্ছিল আমরা আর বাঁচব না। আমরাও খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাইরে থাকা বেশ কয়েকজনের উপর নাকি ট্রেন চলে গিয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি।"
আরও পড়ুন: