কলকাতা, 25 জুন: সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের কারণ 'খুঁড়তে' গিয়ে 'কেউটে' বের হওয়ার জোগাড় সিপিএমের । দলের সমর্থক তো ছাড়, দলের বহু সদস্যই এবারের নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলে অভিযোগ । এবারের নির্বাচনে তাঁরা কার্যত 'যন্ত্রে'র মতো ভূমিকা পালন করেছেন । ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণে এবার এমনটাই তথ্য উঠে এসেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজাফ্ফর আহমেদ ভবনের রিপোর্টে । আর এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই ভুল শুধরে নিতে একাধিক পদক্ষেপ নিল রাজ্য বাম নেতৃত্ব ৷
জেলা কমিটিগুলিকে স্পষ্ট নির্দেশ, আগামী এক মাসের মধ্যে বিধানসভা ভিত্তিক ভোট বিশ্লেষণ রিপোর্ট তৈরি করতে হবে । নির্বাচনী লড়াইয়ে দলের সদস্যদের মধ্যে যারা সংগঠনের কাজে সঠিক ভূমিকা পালন করেননি, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । যে স্তরেরই সদস্য হোক না কেন, যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নেতৃত্বের তরফে ।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বহু নেতাই দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন । দীর্ঘদিন সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে কার্যালয়ের মধ্যেই নেতাগিরি দেখিয়েছেন । এবার তাদের বিরুদ্ধে দলের অন্দরেই আওয়াজ উঠেছে । লোকসভা নির্বাচনে দলের ফলাফলের পিছনে এই সমস্ত নেতারাও একাংশ দায়ী বলে মনে করছেন রাজ্য নেতৃত্ব । রাজ্যের বহু বুথে সিপিএমের নূন্যতম সংগঠন নেই । দলের পতাকা ধরার লোক নেই । এই আবহে বুথে এজেন্ট দেওয়া বেশ কষ্টসাধ্য ব্যপার ৷
পরিস্থিতি সামাল দিতে দলের তরফে দলীয়স্তরে বার্তা দেওয়া হয়েছে জন সংযোগ বাড়াতে । কারণ, দেখা গিয়েথে, এবারের নির্বাচনেও বাড়ি বাড়ি প্রচারে যাননি স্থানীয় নেতারা । দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গেও থাকেননি । সেই সঙ্গে তৃণমূল বিরোধিতা করতে গিয়ে তুলনামূলক বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার এবারের ভোটে কম হয়ে গিয়েছে বলে উঠে এসেছে বিশ্লেষণের রিপোর্টে । তবে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম আগেই বলেছেন, "এই নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে ৷ আমরা শুধু বিজেপি-তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়িনি । মাসেল পাওয়ার, মিডিয়া, নির্বাচন কমিশন, সকলের বিরুদ্ধেই লড়াই করতে হয়েছে আমাদের । ভাড়াটে কোম্পানি গোটা ইলেকশন কন্ট্রোল করেছে । অসম প্রতিযোগিতায় আমার কিছুটা মিথ ভাঙার চেষ্টা করেছি । ধর্মীয় স্থলগুলিকে বাইনারি তৈরি করা হয়েছে । একারণেই রুটি-রুজির প্রশ্ন বেশি গুরুত্ব পেল না ।"