নকদাড়া (কালিম্পং), 15 ফেব্রুয়ারি: চারিদিকে যানজট, কোলাহল, যানবাহনের আওয়াজ এসব আর ভালোলাগছে না, পাহাড়ের শান্ত পরিবেশ মন টানছে? তাহলে পাহাড়ি গ্রাম কালিম্পংয়ের নকদাড়াকে বানিয়ে নিন পরবর্তী ডেস্টিনেশন ৷ কারণ কালিম্পং থেকে অনতিদূরে নকদাড়া সম্পূর্ণ নতুন একটি পর্যটন কেন্দ্র। এতদিন শুধুমাত্র এই রাজ্যের পাহাড়ের মধ্যে মিরিক লেককে কেন্দ্র করেই পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। এবার বিকল্প হিসেবে নকদাড়া পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল ৷
- নকদাড়ায় কী দেখবেন? সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 5,600 ফুট উঁচুতে অবস্থিত কালিম্পংয়ের নকদাড়া নামের একটি ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। কালিম্পং থেকে মাত্র 28 কিমি দূরে লাভা ও লোলেগাঁওয়ের মাঝে অবস্থিত গ্রামটি। পাশেই সামবিয়ং চা-বাগান। ডুয়ার্সের মালবাজার থেকে দূরত্ব মাত্র 40কিমি এখানে আরও আছে বোটিং, ক্যাম্পিং, রামমন্দির, পার্ক, পাখির কিচিরমিচির আর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যা, তা হল মনভোলানো পরিবেশ ৷ এখানে প্রকৃতির প্রেমে পড়তে বাধ্য হবেন যে কোনও পর্যটক ৷
- সম্প্রতি জিটিএ'র উদ্যোগে তৈরি হয়েছে 10 হাজার ফুট এলাকাজুড়ে এক সুন্দর ঝিল। ঝিলের জলে ঘুরে বেড়াচ্ছে রংবেরংয়ের মাছ। ঝিলের চারধার ঘেরা রেলিংয়ের চারপাশে রয়েছে সুন্দর ফুল ও বাগান। তার ফলে এলাকার আকর্ষণ যে আরও বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। চাইলে ঝিলের জলে করতে পারেন বোটিং। মোট আড়াই একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে পুরো নকদাড়া পর্যটন কেন্দ্র। প্রায় 10 হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে পাশে থাকা লেকটি তৈরি করা হয়েছে। এর পাশেই তৈরি করা হয়েছে মনোরম বাগান ৷ আগত পর্যটকরা লেকে বসে নৌকাভ্রমণও উপভোগ করতে পারবেন ৷
- উত্তর দিকে তাকালেই চোখে পড়বে বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা। দিনে পাখির কলতান ও সন্ধেয় ঝিঁঝি পোকার ডাক আপনার একঘেঁয়ে জীবনে যে অক্সিজেনের জোগান দেবে, তা নিশ্চিত।
কীভাবে যাবেন? কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাল স্টেশনে নেমে গাড়ি ভাড়ার ব্যবস্থা রয়েছে ৷ এছাড়াও ম্যাল বাসস্ট্যান্ডে নেমে ভাড়া গাড়িতেও যাওয়া যায়। শিলিগুড়ি থেকেও ভাড়াগাড়ি পাওয়া যায়। এছাড়াও কালিম্পং থেকে যেতে খরচ পড়বে মাত্র 600 টাকা মাথাপিছু ৷
সম্প্রতি পর্যটনের মাধ্যমে জীবিকার নতুন দিশা পেয়েছেন স্থানীয়রা। তৈরি হয়েছে হোম-স্টে। যেখানে একসঙ্গে 80 জন থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। খরচ মধ্যবিত্তের হাতের নাগালের মধ্যে। মোবাইল নেটওয়ার্কের কোনও সমস্যা নেই। ইতিমধ্যেই দূরদূরান্তের পর্যটকরা এই গ্রামে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন ৷ পর্যটকরা বলছেন, নকদাড়ার অপরূপ ঝিল সত্যিই ভালো লাগছে। প্রথমবার এসেছি তাতে মন ভরে যাচ্ছে ৷ পরিবেশ যেমন ভালো তেমনই চারিদিক পরিষ্কার ৷ স্থানীয়দের ব্যবহার খুব ভালো ৷
হোম-স্টে ব্যবসায়ী দীপেশ রায় বলেন, "খুব কম খরচে থাকাখাওয়ার ব্যবস্থা আছে এখানে। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। সব সময় ঠান্ডা অনুভব হবে। শহরের ব্যস্ততা ও কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে হাতে দু-চারদিন সময় নিয়ে তাই নকদাড়া গ্রামে ঘুরে আসতেই পারেন ৷
আরও পড়ুন: