ফরাক্কা, 6 জুন: বাবা পেশায় টোটোচালক, মা বিড়ি শ্রমিক ৷ অভাব-অনটনে কোনও রকমে দিন চলে ৷ সেই পরিবার থেকে অল ইন্ডিয়া ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় জায়গা করে নিল সুরাইয়া সিদ্দিকী ৷ মঙ্গলবার নিট পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই পরীক্ষায় মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার সুরাইয়া সিদ্দিকী নজর কেড়েছেন । সর্বভারতীয় স্তরের ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় 720 নম্বরের মধ্যে 670 নম্বর পেয়েছেন । সর্বভারতীয় স্তরে তাঁর র্যাঙ্ক 14032 । ওবিসি ক্যাটেগরিতে 5981 ৷ ঘরের মেয়ের এই ফাটাফাটি রেজাল্টে ফরাক্কা জুড়ে খুশির হাওয়া ।
আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবার হলেও তিন বোন ও এক ভাইয়ের প্রত্যেককেই পড়াশোনা করাচ্ছেন বাবা-মা ৷ সবার থেকে বড় সুরাইয়া । ছোট থেকেই ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করতেন তিনি । স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার । নিজের স্বপ্ন সফল করতে অক্লান্ত পরিশ্রমও চালিয়ে গিয়েছেন । অবশেষে সাফল্য মিলেছে ।
নিট পরীক্ষায় সফল সুরাইয়া বলেন, "ছোট থেকে বিড়ি মহল্লায় শ্রমিকদের নানান অসুখে ভুগতে দেখেছি। আমার মা-ও অসুখে ভুগছেন। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না ৷ আমি চিকিৎসক হয়ে মা-বাবার পাশে দাঁড়াতে চাই ৷ সেই সঙ্গে স্থানীয় বিড়ি শ্রমিকদের পাশেও দাঁড়াতে চাই।"
জেইই মেন পরীক্ষায় 100 স্কোর করলেন 56 জন, লিঙ্কে ক্লিক করে জানুন ফলাফল
মেয়ের সাফল্যে খুশি বাবা মোবারাক হোসেনও ৷ তিনি বলেন, " সুরাইয়া পরিবারের প্রথম সন্তান। ডাক্তারিতে ভর্তির জন্য সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় নজরকাড়া সাফল্য খুশি হয়েছি ৷ আমি লেখাপড়া শিখতে পারিনি ৷ সবাই বলত মেয়ে অনেক বড় হবে। নজর দিও। আমি টোটো চালিয়েও ওদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে কোনও খামতি রাখিনি ৷"
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মূল্যায়নে বদল, আসছে বেশ কিছু নতুন নিয়ম
সুরাইয়ার সাফল্যে খুশি প্রতিবেশীরা। বুধবার সকাল থেকে অর্জুনপুরে মাটির বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন এলাকার মানুষ। সবাই সুরাইয়ার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। শুভকামনা জানিয়েছেন। গত এক বছর মালদার একটি কোচিং সেন্টার থেকে আবাসিক হিসাবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন ওই ছাত্রী ৷
আজ দুপুরে ফল ঘোষণা রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রাসের, কীভাবে দেখবেন রেজাল্ট?