দার্জিলিং, 14 অগস্ট: আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্র ৷ এমনকি আইন-শৃঙ্খলা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সরব হয়েছেন চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মী সকলেই ৷ এই পরিস্থিতিতে এবার নার্সের উপর লোহার রড নিয়ে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৷
ঘটনাটি শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকের গ্রামীণ হাসপাতালের ৷ ফলে আবারও প্রশ্ন উঠছে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে ৷ যদিও, ঘটনার পরপরই অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোজনারায়ণ চা বাগানের বাসিন্দা পরেশ কাছুয়া নামে এক ব্যক্তি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে প্রসবজনিত সমস্যার কারণে ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান ৷ সেখানে তিনি কর্তব্যরত নার্সকে স্ত্রীর সমস্যার কথা জানান ৷ তাঁর অভিযোগ, সমস্যার কথা জানানোর পরেও চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা করা হচ্ছিল না ৷ এরপরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওই ব্যক্তি ৷ অভিযোগ, লোহার রড নিয়ে নার্সকে মারতে উদ্যত হন ওই ব্যক্তি ৷
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই নার্স অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রীকে দেখার জন্যই যাচ্ছিলেন ৷ তার আগেই ওই ব্যক্তি লোহার রড তুলে নার্সকে মারতে উদ্যত হন ৷ পরবর্তীতে হাসপাতালে থাকা অন্যান্য নার্স এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা অভিযুক্তের হাত থেকে রড কেড়ে নেন ৷ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ । অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ৷ ঘটনার জেরে চিকিৎসক এবং নার্সদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ৷ খবর পেয়ে হাসপাতালে যান ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শাহানুর ইসলাম ৷
আক্রান্ত নার্স অভিযোগ করেছেন, "প্রসূতি বিভাগে ভর্তি ওই মহিলার স্বামী হাসপাতালে চিৎকার চেঁচামেচি করছিলেন ৷ তাঁর স্ত্রীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক ৷ আমি তারপরেও তাঁকেই দেখতে যাচ্ছিলাম ৷ আচমকা তিনি হাতে রড নিয়ে আমাকে মারতে উদ্যত হন ৷ বাকি কর্মীরা তাঁকে সামাল দেন ৷"
বিএমওএইচ শাহানুর ইসলাম বলেন, "অভিযুক্তের স্ত্রী প্রসূতি বিভাগে ভর্তি ৷ তাঁর ব্যাথা হচ্ছিল ৷ কিন্তু, প্রসবের এখনও সময় রয়েছে ৷ সেটাই তাঁর পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল ৷ কিন্তু, তাঁর স্বামী উত্তেজিত হয়ে মারতে যান ৷ নিরাপত্তারক্ষীরা আটকে দেন তাঁকে ৷ পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে আটক করে নিয়ে গিয়েছে ৷ এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক ৷ চারদিকে যা পরিস্থিতি চলছে, তারপরও আমরা পরিষেবা চালিয়ে যাচ্ছি ৷ তাতে কোনও খামতি নেই ৷ মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন ওই ব্যক্তি ৷ এরপরও আমরা তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে, বিষয়টি সহমর্মিতার সঙ্গে দেখব ৷" ডিএসপি (গ্রামীণ) দীপঙ্কর সোম বলেন, "অভিযুক্তকে তৎক্ষণাৎ আটক করা হয়েছে ৷ তদন্ত চলছে ৷"