কলকাতা, 19 জুলাই: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মানহানি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তিনজন । সূত্রের খবর আগামী সোমবার প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই বিষয়ে দ্রুত শুনানির আবেদন জানানো হতে পারে।
গত 16 জুলাই বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে 14 অগাস্ট পর্যন্ত কোনও রকম অসম্মান জনক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যদের। 14 অগাস্ট ফের এই মামলার শুনানি। এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই আপিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতা নেত্রীরা।
রাজভবনের ঘটনার পর রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যারা যেভাবে মন্তব্য করেছেন তাতে রাজ্যপালের মনে হয়েছে রাজ্য সরকার তাঁকে কোথাও জনসাধারণের কাছে ঘৃণা ও হাসির পাত্র করে তুলতে চাইছে। তিনি একজন সাংবিধানিক পদাধিকারী। সেই জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের মনে হয়েছিল অবিলম্বে একে অপরের বিরুদ্ধে এ হেন মন্তব্য করা বন্ধ হওয়া জরুরি। সেই জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্য দের যে কোনও রকম অবমাননাকর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এবার এ নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলেন বাংলার শাসক শিবিরের তিন নেতা-নেত্রী।
রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাত চলছে দীর্ঘদিন ধরে । লোকসভা নির্বাচন শুরুর ঠিক আগে এই সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ হয় । রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মী দাবি করেন রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয় । রাজ্যপালের বিশেষ সাংবিধানিক রক্ষাকবচ আছে বলে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা যায়নি। তবে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে কলকাতা পুলিশ ।
মহিলা কর্মী দাবি করেন, তাঁকে পুলিশে অভিযোগ জানাতে বারণ করেছিলেন রাজভবনের তিন কর্মী । এই বিষয় জানতে তিন কর্মীকে লালবাজারে ডেকে পাঠায় পুলিশ । পাশাপাশি অভিযোগ ওঠার পর থেকেই রাজ্যপালকে নিয়ে একাধিক মন্তব্য করে চলেছেন মমতা । একাধিকবার তিনি দাবি করেন, রাজভবন মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত জায়গা নয়। এই ধরনের মন্তব্যে তাঁর মানহানি হয়েছে দাবি করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল । সেই মামলাই এবার গেল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। অন্যদিকে রাজ্যপালের উপর থাকা সাংবিধানিক রক্ষাকবচ খারিজের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন রাজভবনের ওই কর্মী । সেই মামলার শুননিতে শুক্রবার নবান্নর বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত।