কলকাতা, 20 ফেব্রুয়ারি: প্রথমে মমতা পরে গোটা দল। পুলিশ আধিকারিককে খালিস্তানি বলায় বিজেপিকে এক হাত নিল তৃণমূল নেতৃত্ব। সোমের সন্ধ্যায় তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। আর সেই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে অগ্নিমিত্রা পাল, শুভেন্দু অধিকারীদের তীব্র কটাক্ষ করল তৃণমূল নেতৃত্ব।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, " সন্দেশখালি যাওয়ার আগে শুভেন্দু অধিকারীকে নির্দিষ্ট শর্ত দিয়েছিল আদালত। শর্ত ছিল তিনি কোনও বিতর্কিত মন্তব্য করতে পারবেন না। কিন্তু বিরোধী দলনেতা ও তাঁর সঙ্গীরা ধামাখালিতে যে মন্তব্য করলেন তাতে আদালতের নির্দেশ অবমাননা করা হয়েছে।" তিনি জানান, এর বিরুদ্ধে আদালত যাতে ব্যবস্থা নেয় সেই অনুরোধ তাদের তরফ থেকে করা হবে। কোনভাবেই একজন কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে তাঁর ধর্ম নিয়ে কোনও মন্তব্য করা যায় না। " ব্রাত্যের দাবি, বিজেপি ধর্ম নিয়ে যে রাজনীতি করে তা আরও একবার প্রমাণিত । ধর্মে ধর্মে বিভেদ তৈরি করাটা বিজেপির প্রধান লক্ষ্য। তিনি অভিযোগ করেছেন,শান্ত পরিবেশকে বিরোধী দলনেতা উস্কানি দিয়ে অশান্ত করার চেষ্টা করছেন। গেরুয়া রঙের চশমা পরে বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি।
শুধু শিক্ষামন্ত্রী নন এই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী তথা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কথায়, তৃণমূল কংগ্রেস কোনভাবেই কোন ধর্মীয় ভেদাভেদকে সমর্থন করে না। যেভাবে একজন পুলিশ আধিকারিককে খালিস্তানি বলে অপমান করা হয়েছে তা নিন্দনীয়। কোনভাবেই তার ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করার অধিকার কারও নেই। তিনি জানান, এই বিভাজনের রাজনীতি বাংলার মানুষ কোনভাবেই মেনে নেবে না। আমরা হাইকোর্টের বিচারপতিদের আবেদন জানাবো এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।
অন্যদিকে সায়নী ঘোষ বলেন, " আদালতের নির্দেশের পর শুভেন্দু অধিকারীর খালিস্তানি মন্তব্য গোটা দেশের জন্য লজ্জার বিষয়। বিজেপি ঠিক কী করতে চাইছে বুঝতে পারছি না। বিজেপির জন্য মুসলমান হলে তিনি জঙ্গি হন, বাঙালি হলে রোহিঙ্গা হন, ছাত্র হলে তাঁকে টুকরে টুকরে গ্যাং বলা হয়, জয় শ্রী রাম না বললে তাঁকে অ্যান্টি হিন্দু বলা হয় আর শিখ হলে তাকে খালিস্তানি বলা হচ্ছে। এর থেকে স্পষ্ট বাংলায় কারা আগুন জ্বালাতে চাইছেন।"
সোমের সকাল থেকেই সন্দেশখালি ঘিরে উত্তাপের পারদ তেজি । যা আরও প্রশমিত হয় পাগড়ি পরিহিত পুলিশ আধিকারিক আইপিএস জসপ্রীত সিংকে খালিস্তানি বলা ঘিরে । অভিযোগ, বিজেপির তরফেই এই বেলাগাম মন্তব্য করা হয় । সরাসরি শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ ওঠে। এই নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি বিজেপির 'ঔদ্ধত্য' বলেই মন্তব্য করেন মমতা । তৃণমূল সুপ্রিমোর পথ ধরেই এবার বিজেপিকে কটাক্ষ তৃণমূল নেতৃত্বের ।
যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব শুধু নয় । এবার এই নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় নিন্দায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এদিন এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন,"বিজেপি তাদের 'রাজনৈতিক বাজার' সাজাতে যে 'বিদ্বেষের চাষ' করেছে তা সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিষে যারা অন্ধ হয়ে গেছে তারা না কৃষক দেখতে পায়, না সৈনিকদের, না খাকির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।" দেশ আইপিএস জসপ্রীত সিংয়ের সঙ্গে আছে।" এদিন রাহুল গান্ধির এই টুইটকে রিটুইট করেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন