দার্জিলিং, 2 জানুয়ারি: বন্ধ ঘর থেকে রহস্যজনকভাবে উদ্ধার মা ও ছেলের দেহ । গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার মেয়ে । এদিকে স্ত্রী ও ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হলেন স্বামী । ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মা তিথি দাস (38) ও ছেলে তেজাস দাস (8)। কীভাবে দু'জনের মৃত্যু হল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ । ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়ার উত্তরায়ন টাউনশিপের ই-9 ব্লকে । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মসূত্রে স্বামী সুজিত দাস বাইরে ছিলেন । ইংরেজি নতুন বছরের কারণে রাতে বাইরে থেকে খাওয়ার অর্ডার করে খেয়েছিলেন মা-মেয়ে-ছেলে এবং ভাগ্নে তন্ময় সরকার । এরপর খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েন তাঁরা । একটি ঘরে মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তিথি। আর অন্য ঘরে শুয়েছিল তন্ময়। সকালে উঠে তেজাল তন্ময়কে জানায় তার ভাই ও মা ঘুম থেকে উঠছে না।
এরপরই হইচই ছড়িয়ে পড়ে যায় টাউনশিপে । ছুটে আসে প্রতিবেশীরা । তারাই দু'জনকে উদ্ধার করে মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় উত্তরায়ন টাউনশিপ ফাঁড়ির পুলিশ । অন্যদিকে, মৃত তিথি দাসের স্বামী সুজিত দাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছেলে ও তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে হৃদরোগে আক্রান্ত হন । বর্তমানে তিনিও চিকিৎসাধীন । তবে কীভাবে তাদের মৃত্যু হল, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয় ।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঠান্ডার কারণে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ ছিল । পাশাপাশি ঘর গরম রাখতে একটি পাত্রে কয়লা জ্বালানো হয়েছিল ঘরের ভিতর । জ্বলছিল হিটারও । সেই কয়লার ধোঁয়া থেকে শ্বাসকষ্টের জেরেও মৃত্যু হতে পারে । ইতিমধ্যে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন ডিসিপি বিশ্বচাঁদ ঠাকুর ।
পরিচারিকা সুমন্তি মুন্ডা বলেন, "রাতে খেয়ে দেয়ে শুয়েছে সবাই । মাঝেমাঝে ঠান্ডার কারণে ঘর গরম করতে ঘরে কয়লা জ্বালাত। আবার ঘুমানোর আগে নিভিয়েও দিত ৷ কালকেও জ্বালিয়েছিল ৷ কিন্তু ম্যাম মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন । যে কারণে জ্বলন্ত কয়লা বের করতে ভুলে যায় । ঘরে গ্যাস ভরে যাওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে শুনছি ।"