কৃষ্ণনগর, 12 নভেম্বর: চিরাচরিত প্রথা মেনে বেহারাদের কাঁধে চেপে নিরঞ্জনের পথে গেলেন কৃষ্ণনগরের রানি বুড়িমা ৷ সোমবার রাত 12টার পর থেকে শুরু হয়েছে নিরঞ্জনের তোড়জোড় ৷ মঙ্গলবার সকাল আটটা নাগাদ শেষ হয় বিসর্জনের কাজ ৷
ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে জগদ্ধাত্রী উৎসব । কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর আলাদা তাৎপর্য রয়েছে ৷ এখানকার জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, বেহারাদের কাঁধে করে বেশিরভাগ প্রতিমা জলঙ্গির ঘাটে যায় নিরঞ্জনের উদ্দেশে । এই প্রথাকে সাং প্রথাও বলে অনেকে ।
বুড়িমা ছাড়াও কৃষ্ণনগরের অন্যতম বাঘাডাঙ্গা, গোলাপট্টি , রাধানগর, হাতার পাড়া, কাঁঠালপোতা, মালোপাড়া ইত্যাদি একাধিক নামকরা বারোয়ারি পুজোর প্রতিমা কাঁধে করেই কৃষ্ণনগরের রাজপথ থেকে নিয়ে গিয়ে নিরঞ্জন হয়ে থাকে জলঙ্গির ঘাটে । বারোয়ারি থেকে প্রতিমা প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির উদ্দেশে । এরপর সেখান থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে এসে কৃষ্ণনগরের রাজপথ দিয়ে কাঁধে করে প্রতিমাকে নিয়ে যাওয়া হয় বেহারাদের মাধ্যমে নিরঞ্জনের জন্য ।
কৃষ্ণনগরে সারারাত ধরে চলে জগদ্ধাত্রী প্রতিমা নিরঞ্জনের এই প্রথা । সমস্ত প্রতিমা নিরঞ্জন হয়ে গেলে একদম শেষে বের হন কৃষ্ণনগরের রানি অর্থাৎ বুড়িমা । শোভাযাত্রা করে বুড়িমাকে জলঙ্গির ঘাটে নিরঞ্জনের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ কৃষ্ণনগর ও তার আশেপাশের এলাকার হাজার হাজার মানুষ এই শোভাযাত্রা দেখার জন্য ভিড় জমান ৷ তাঁরা অধীর আগ্রহে রাস্তার দু'পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন ।
একের পর এক বারোয়ারি প্রতিমা কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া হয় । শেষের দিকে বাঘাডাঙ্গা বারোয়ারির অসংখ্য সদস্য তাঁদের প্রতিমা নিয়ে যান ৷ এরপরেই কিছুক্ষণের মধ্যে বের হন কাঁঠালপোতা বারোয়ারির ছোটমা । তাঁর প্রতিমা চলে যাওয়ার পরেই নিজের বারোয়ারি থেকে শহরের রাজপথে বের হয়ে আসেন বুড়িমা । তারপর প্রায় শতাধিক ঢাকের সঙ্গে বেহারাদের কাঁধে করে একটানে বুড়িমা চলেন কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির উদ্দেশে ৷ সেখান থেকে ঘুরে পুনরায় একই রাস্তা দিয়েই বুড়িমা এগিয়ে চলেন কৃষ্ণনগর কদমতলা নিরঞ্জন ঘাটের দিকে ।