কলকাতা, 29 অগস্ট: অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের মদদেহ সৎকার আগের থেকে আরও বেশি মানবিক হতে চলেছে। মানুষের মৃত্যুর পরও শেষকৃত্য পর্যন্ত তাঁর মানবাধিকার থাকে। এমনটাই রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এবার কলকাতার অজ্ঞাতপরিচয় মৃতদেহ সেই বিশে। মর্যাদা পেতে চলেছে। এগিয়ে এলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী মিতা বন্দ্য়োপাধ্যায় রায়।
নিজের কষ্টার্জিত আয়ের (আয়কর প্রদানের পর) অর্থ থেকেই তিনি বেওয়ারিশ মৃতদেহ মর্যাদার সঙ্গে ধর্মীয় নিয়ম মেনেই সৎকার করতে চান। তাঁর এই আবেদনে উৎফুল্ল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। কলকাতা পুরনিগমের চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টের নির্দেশ, অবিলম্বে আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বেওয়ারিশ মৃত দেহের সৎকারের বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
- আবেদনকারী আইনজীবী মিতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় রায়- সুপ্রিমকোর্ট তার রায়ে উল্লেখ করেছে মানুষের মৃত্যুর পরেও তাঁর সৎকার না-হওয়া পর্যন্ত সংবিধানের 21 নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাঁর ব্যাক্তিগত অধিকার বর্তমান থাকে। সম্প্রতি, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত পুরনিগমের এক আধিকারিকের বক্তব্য থেকে জানা যায়, এই ধরনের মৃতদেহগুলি সাধারণত ইলেকট্রিক চুল্লি সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, তা পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি সম্পূর্ণ অমানবিক বলে মনে হয়েছিল আইনজীবীর।
মিতা বলেন, "সুপ্রিমকোর্টের রায়কে মান্যতা দিয়ে বলা যায় প্রত্যেকটি বেওয়ারিশ মৃতদেহের ধর্মীয়ভাবে নিয়ম মেনে সৎকার হওয়া প্রয়োজন। এর জন্য যে আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন তা আমি করতে প্রস্তুত। আদালতের কাছে আমার আবেদন ওই মৃতদেহ সৎকারের সময় পুরনিগমের তত্ত্বাবধানেই সৎকার করা হোক শুধুমাত্র সৎকারের পূর্বে যে সমস্ত নিয়মকানুন আছে সেগুলি আমার উপস্থিতিতে ও আমার সহযোগিতায় করা হোক। এর জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক খরচ আমি ও আমার পরিবার বহন করবে।"
- প্রধান বিচারপতি- আপনার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এর জন্য আপনাকে কোন সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশিকা উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। আমি পুরনিগমের কাছে আশা রাখি এবিষয়ে তাঁরা কোনও আপত্তি করবেন না।
- পুরনিগমের আইনজীবী- এবিষয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।
- প্রধান বিচারপতির নির্দেশ- ছ'সপ্তাহের মধ্যে কলকাতা পুরনিগমের চেয়ারম্যানকে আবেদনকারী আইনজীবী মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আবেদনকারীর প্রস্তাব মেনে তা বাস্তবায়িত করতে হবে।
- মামলার শেষে আবেদনকারী আইনজীবী জানান, শুধুমাত্র কলকাতা পুরনিগম নয় রাজ্যের যে কোনও জায়গায় সরকারি প্রতিষ্ঠান এই ধরনের প্রস্তাব দিলে তাঁরা সৎকারের কাজ করতে প্রস্তুত। শুধু বেওয়ারিশ নয়, কোনও দরিদ্র পরিবারের পক্ষ থেকেও তাঁদের আবেদন করলে তাঁরা তা করতে প্রস্তুত।