মালদা, 12 জানুয়ারি: কথা ছিল দলের প্রয়াত নেতা দুলাল সরকারের স্মরণসভায় আসবেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ৷ কিন্তু, তিনি আসতে পারেননি ৷ বদলে এসেছিলেন, তৃণমূলের দুই নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এবং বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ৷ তাঁদের উপস্থিতিতে রবিবার মালদা শহরের পল্লিশ্রী এলাকায় দুলাল সরকারের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হল ৷ সেখানেই রাজ্য সভাপতির বার্তা পড়ে শোনালেন জয়প্রকাশ ৷
সুব্রত বক্সি তাঁর বার্তায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রসঙ্গ টেনে লিখেছেন, "শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর 13 বছরের ছেলে শমীকে হারিয়েছিলেন । সেই রাতেই তিনি শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতা ফেরার সময় নিজের অবস্থান লিখে গিয়েছিলেন ৷ বলেছিলেন, জগতের সবকিছু ঠিকই আছে ৷ সেখানে কোথাও তাঁর শমীও রয়েছে ৷ একইভাবে বাবলাও আমাদের মধ্যেই রয়েছে ৷ চৈতালি আর অভিনবকে ঈশ্বর শক্তি দিন, শান্তি দিন ৷"
সভা শেষে সংবাদমাধ্যমকে জয়প্রকাশ বলেন, "আজ দলমত নির্বিশেষে মানুষ বাবলাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন ৷ এটাই বাবলার জনপ্রিয়তা ৷ 62 বছর বয়সে ওঁর জীবনাবসান হয়েছে ৷ উনি সবার কাছের লোক ছিলেন ৷ আজ এখানে যাঁরা এসেছিলেন, প্রত্যেকেই দুঃখের সঙ্গে বাবলার কথা স্মরণ করেছেন ৷"
দুলাল সরকারের স্মরণসভায় যোগ দিতে শনিবার রাতেই মালদায় আসেন জয়প্রকাশ মজুমদার ৷ রাতে তিনি দেখা করতে গিয়েছিলেন প্রয়াত নেতার স্ত্রী চৈতালি ঘোষ সরকারের সঙ্গে ৷ সেই সময় শহরের মহানন্দা কলোনি এলাকায় দুলাল সরকার খুনে দোষীদের ফাঁসির দাবিতে মৌন মিছিল করছিলেন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যরা ৷
তাঁরা জয়প্রকাশকে প্রশ্ন করেন, পুলিশ এখনও কেন পলাতক দুষ্কৃতীদের ধরতে পারছে না ? কেন অভিযুক্তদের বাড়ির সামনে পুলিশি প্রহরা থাকবে ? কেন এত ধীরগতিতে পুলিশি তদন্ত চলছে ? জয়প্রকাশের জবাব, "আমাদের কাছে এসব প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই ৷ এব্যাপারে যা-বলার বলবে প্রশাসন ৷ আমরা দলের তরফে এখানে এসেছি ৷ প্রশাসনের কাজকর্ম নিয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না ৷"
চৈতালি ঘোষ সরকার এদিন জানান, "গতকাল রাতে জয়প্রকাশবাবুরা আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন ৷ কীভাবে কী হল, সেসব তাঁরা আমার কাছে জানলেন ৷ তবে, তাঁদের সঙ্গে ঠিক কী কথা হয়েছে, তার সবকিছু আমি প্রকাশ্যে বলতে পারব না ৷ আমাদের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির নির্দেশেই তিনি এখানে এসেছিলেন ৷ আমি আগামিদিনে কীভাবে এগোব, তা নিয়ে কথা হয়েছে ৷ তবে, পুলিশি তদন্ত চলছে ৷ আমি শুধু চাই, সঠিক তদন্ত হোক ৷ যারা আসল অপরাধী, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক ৷"