মালদা, 25 মে: ইন্দোর থেকে ঘরে ফিরেছিলেন স্বামী ৷ সেখানে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন তিনি ৷ স্বামীকে দুপুরের খাবার দিয়ে স্ত্রী বেরিয়েছিলেন গ্রামের মাদ্রাসায় রান্না করতে ৷ তেমনটাই জানাচ্ছেন স্বামী৷ তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই 24 বছর বয়সী মাজেনুর খাতুনের ৷ মাকে দেখতে না পেয়ে কান্না থামছে না দুই মেয়ের ৷ স্ত্রীকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন স্বামী ৷ তবে পুলিশও এখনও ওই বধূর সন্ধান পায়নি ৷
এদিকে মাজেনুরের বাপেরবাড়ির লোকজনের সন্দেহ, তাঁদের বাড়ির মেয়েকে খুন করে গুম করে দেওয়া হয়েছে ৷ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনই এই কাজ করেছেন ৷ যদিও এই নিয়ে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ ৷
14 দিন ধরে নিখোঁজ মাজেনুর ৷ হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের বারোঘরিয়া গ্রামে শ্বশুরবাড়ি তাঁর ৷ বছর নয়েক আগে বিয়ে হয়েছিল আলাউদ্দিন শেখের সঙ্গে ৷ তাঁদের দুটি মেয়ে ৷ পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা ছিল না ৷ আলাউদ্দিন ভিনরাজ্য থেকে ঘরে ফিরে এলেই তাঁদের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়ে যেত ৷ সেকথা স্বীকার করেছেন আলাউদ্দিন নিজেও ৷
আরও পড়ুন:
তিনি বলেন, “11 মে সকালে আমি ইন্দোর থেকে বাড়ি ফিরেছি ৷ আমার বউ মাদ্রাসায় রান্না করতে চলে যায় ৷ আমিও বাজারের দিকে যাই ৷ বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পর বউ মাদ্রাসা থেকে রান্না করা তরকারি নিয়ে আসে ৷ আমি তা দিয়েই ভাত খাই ৷ দুপুরেও একই ঘটনা ঘটে৷ ও মাদ্রাসায় তিনবেলা রান্না করত ৷ বিকেলেও রান্না করতে যাচ্ছে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ৷ বলে গিয়েছিল, সন্ধে সাতটার সময় বাড়ি চলে আসবে ৷ কিন্তু আর বাড়ি ফেরেনি ৷ আজ পর্যন্ত ওর খোঁজ পাইনি ৷ পুলিশের কাছে মিসিং ডায়ারি করেছি ৷”
এদিকে মাজেনুরের দাদা সাবেদুল ইসলাম বলছেন, “10 মে থেকে বোন নিখোঁজ ৷ সেদিন সকালে ওকে ফোন করেছিলাম ৷ ধরেনি ৷ বিকেল পাঁচটার সময় জামাই জানায়, তোমার বোন নেই ৷ তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ৷ আমরা অনেক জায়গায় বোনের খোঁজ করেছি ৷ কোথাও সন্ধান পাইনি ৷’’
তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়েছি ৷ পুলিশ আমাদের অভিযোগ জমা নিচ্ছে না ৷ বিয়ের পর থেকেই বোনকে শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে হতো ৷ মারধরও করেছে ৷ জামাই ওকে সংসার চালানোর খরচও দিত না ৷ পেট চালাতে চার মাস ধরে মাদ্রাসায় রান্নার কাজ করছে ৷ জমিতে শ্রমিকের কাজও করে৷ আমাদের সন্দেহ, ওরা বোনকে মেরে কোথাও গায়েব করে দিয়েছে ৷”
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ বধূকে উদ্ধারের জন্য সবরকম চেষ্টা চলছে ৷ তবে এই ঘটনায় ওই বধূর স্বামীর একটি মিসিং ডায়েরি ছাড়া আর কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷ অভিযোগ দায়ের হলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে ৷
আরও পড়ুন: