বর্ধমান, 23 ডিসেম্বর: এবার কলেজে থ্রেট কালচার! আর থ্রেট কালচারের কারণে রীতিমতো আতঙ্কিত কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকারা ৷ পরিস্থিতি এমনই যে কলেজের প্রিন্সিপাল বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। থ্রেট কালচারের এই অভিযোগ তুলছেন খোদ রাজ কলেজের প্রিন্সিপাল নিরঞ্জন মণ্ডল। অভিযোগের তির তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বেশকিছু ছাত্রনেতা ও তাঁদের মদতপুষ্ট বহিরাগত ছাত্রদের বিরুদ্ধে।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান রাজ কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে কলেজের দীর্ঘদিন ধরে প্রিন্সিপালের ঠান্ডা লড়াই চলছে। কয়েক বছর ধরে দিনে দিনে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মদতে বহিরাগত কিছু তৃণমূল ছাত্রনেতা, প্রাক্তন ছাত্র ও কলেজে পড়েনি এমন ছেলেরাও কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ছে। তারা কলেজ কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে কলেজের অডিটোরিয়াম ব্যবহার করছে। এমনকী কলেজের ব্যাপারে তারা নিজেদের ইচ্ছামতো সিদ্ধান্তও নিচ্ছে।
শুধু তাই কলেজের বেশকিছু শিক্ষককে তারা হুমকিও দিচ্ছে বলে দাবি। ফলে কলেজের অধ্যাপক অধ্যাপিকারা রীতিমতো আতঙ্কিত। পরিস্থিতি এমন দিকে গিয়েছে কলেজের প্রিন্সিপাল রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।
কলেজের প্রিন্সিপাল বলেন, "কলেজের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করেছে। ছাত্র, কিছু শিক্ষক, কিছু অশিক্ষক কর্মচারী থ্রেট কালচার শুরু করেছে। দু'দিন আগে কলেজের এক অনুষ্ঠানের ব্যাপার নিয়ে একটা পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে জেলার কিছু ছাত্রনেতা কলেজে এসেছিল বলে শুনেছি। বিষয়টা আমি জেলাশাসককে জানিয়েছি। এবার মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীকেও জানিয়েছি। কলেজের 71 জন শিক্ষক এবিষয়ে আমাকে একটা ডেপুটেশনও দিয়েছেন।"
তিনি আরও বলেন, "কলেজের শিক্ষকরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। হয়তো আমাকে সাসপেন্ড করা হতে পারে। কলেজ সংক্রান্ত কোনও মিটিং করতে গেলে বর্ধমান থানার পুলিশকে এনে বসিয়ে রেখে মিটিং করতে হচ্ছে। কলেজে ছাত্র সংসদ বলে কিছু নেই । কলেজে আছে ছাত্র ইউনিট যেটা তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালনা করে।"
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপিকা পিয়ালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ৷ বেশকিছু দিন ধরে কলেজের ক্যাম্পাসে বহিরাগত ছাত্র-ছাত্রীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। একজন স্থায়ী প্রিন্সিপালকে যদি সাসপেন্ড করা হয় তাহলে কলেজের পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যাবে। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে হবে। কলেজ থেকে পাশ করে যাওয়া পুরনো ছাত্র কিংবা এমন কেউ কেউ আছে যারা ছাত্র নয় তারাও কলেজের বেশকিছু শিক্ষককে থ্রেট করছে।