ETV Bharat / state

এই প্রথম ! বুনিয়াদপুরের ছাঁচে তৈরি গণেশ পাড়ি দিচ্ছে মহারাষ্ট্র-ওড়িশায় - Ganesh Chaturthi 2024

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 23, 2024, 7:41 PM IST

Buniadpur Ganesha idols to be worshipped in Maharashtra-Odisha: দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের পালপাড়ায় ঘুম ছুটেছে মৃৎশিল্পীদের ৷ তাঁদের তৈরি ছাঁচের গণেশ এবার পাড়ি দিচ্ছে মহারাষ্ট্র ও ওড়িশায় ৷ কয়েক হাজার মূর্তির অর্ডার রয়েছে ৷ 25 অগস্ট ভিন রাজ্যে পাড়ি দেবে সেই গণেশ ৷ তাই জোরকদমে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ ৷

ETV BHARAT
বুনিয়াদপুরের ছাঁচের তৈরি গণেশ পাড়ি দিচ্ছে মহারাষ্ট্র-ওড়িশায় (নিজস্ব চিত্র)

বুনিয়াদপুর, 23 অগস্ট: আর মাত্র 13 দিন ৷ তারপরেই গণপতি বাপ্পায় মেতে উঠবে মহারাষ্ট্র ৷ মেতে উঠবে পুরো দেশ ৷ আরব সাগরের তীরের এই উৎসবে এবার সামিল হচ্ছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরও ৷ এখানকার শিল্পীদের তৈরি গণপতি এবার পূজিত হবে মহারাষ্ট্রে ৷ অবশ্য শুধু মহারাষ্ট্রই নয়, বুনিয়াদপুর কইল পালপাড়ার তৈরি ছাঁচের গণেশমূর্তি এবার পাড়ি দিচ্ছে বঙ্গোপসাগর তীরের ওড়িশাতেও ৷ এই প্রথম ৷

বুনিয়াদপুরের ছাঁচের তৈরি গণেশ পাড়ি দিচ্ছে মহারাষ্ট্র-ওড়িশায় (নিজস্ব ভিডিয়ো)

আগামী 7 সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে গণেশ পুজো ৷ ‘গণপতি বাপ্পা মোরিয়া’ রবে মেতে উঠবে পশ্চিমের গোয়া, মহারাষ্ট্র থেকে শুরু করে পূর্বের ওড়িশা, এমনকি দক্ষিণের রাজ্যগুলিও ৷ 10 দিন ধরে চলবে উৎসব ৷ বাপ্পা পূজিত হবেন ঘরে ঘরে ৷ সময়ের সঙ্গে এই বাংলার কিছু অংশেও এখন গণেশ পুজোর ধুম দেখা যাচ্ছে ৷ ঠিক এই সময় নাওয়া খাওয়া শিকেয় উঠেছে বুনিয়াদপুর পালপাড়ায় ৷ কারণ, এবার এখান থেকেই মহারাষ্ট্রে পাড়ি দেবে কয়েক হাজার ছাঁচে তৈরি গণেশ মূর্তি ৷ যাবে ওড়িশাতেও ৷ আর মাত্র একদিন বাদেই লরিবোঝাই হবে সেসব মূর্তি ৷ 25 অগস্ট রওনা দেবে বিভিন্ন রাজ্যের উদ্দেশে ৷

এই মুহূর্তে চরম ব্যস্ততা বুনিয়াদপুর পৌরসভার 9 নম্বর ওয়ার্ডের কইল পালপাড়ায় ৷ এবারই প্রথম এই পাড়ার মূর্তি পাড়ি দিচ্ছে দেশের তিন প্রান্তে ৷ এখানকার রীতা শিল্পালয় চার হাজার মূর্তির বরাত পেয়েছে ৷ যাবে মহারাষ্ট্র ও ওড়িশায় ৷

ETV BHARAT
বুনিয়াদপুরে তৈরি হচ্ছে ছাঁচের গণেশ (নিজস্ব চিত্র)

শিল্পালয়ের কর্ণধার তাপস পাল জানালেন, "এবারই প্রথম ভিনরাজ্যে গণেশ বিক্রির সুযোগ পেয়েছি ৷ প্রথমে ছ’হাজার মূর্তির বরাত ছিল ৷ কিন্তু হাতে সময় কম থাকায় চার হাজার প্রতিমার বরাত ধরি ৷ মনে কিছু ভয়ও কাজ করছিল ৷ প্রথমবার বরাত পাওয়ায় সেই ভয় ৷ তাছাড়া টাকা-পয়সার ব্যাপারও আছে ৷ শ্রমিক, মাটি, রং ইত্যাদি উপকরণের বেজায় দাম ৷ মহাজনদের কাছে অগ্রিম পাওয়া যায় না ৷ আমরা সরকারি আর্থিক সাহায্যও পাই না ৷ যদি সেসব পাওয়া যেত, তবে আরও বেশি মূর্তি ভিনরাজ্যে পাঠাতে পারতাম ৷ তবে এই বরাত পাওয়ায় আমরা খুশি ৷ এতে এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে ৷ আমাদেরও ভালো লাভ হবে বলে আশা করছি ৷"

আরেক শিল্পী পবিত্র পালের বক্তব্য, "ছেলেরা গণেশ মূর্তি তৈরি করছে ৷ মহারাষ্ট্র আর ওড়িশা থেকে বরাত মিলেছে ৷ বুনিয়াদপুরের মতো একটা ছোট্ট জায়গা থেকে এত মূর্তি অন্যান্য রাজ্যে যাচ্ছে দেখে খুব ভালো লাগছে ৷ হাতে আর বেশি সময় নেই ৷ তাই ছেলেদের সঙ্গে পুত্রবধূরাও কাজে হাত লাগিয়েছে ৷"

শিল্পী মাধবী পাল জানালেন, "এমনটা যে হতে পারে, কখনও ভাবিনি ৷ এই বরাত পেয়ে আমরা ভীষণ খুশি ৷ কাজ করার উদ্যমটাই বেড়ে গিয়েছে ৷ আমরা চাই, এরপর বাকি রাজ্যগুলি থেকেও এখানে মূর্তির বরাত আসুক ৷ তাতে এলাকার আর্থ সামাজিক পরিস্থিতিটাই বদলে যেতে পারে ৷"

বরাত এসেছিল মাস তিনেক আগে ৷ প্রথম বরাত এসেছিল ওড়িশা থেকে ৷ শিল্পীরা জানাচ্ছেন, কটকের বাসিন্দা সম্বল পাল বুনিয়াদপুরের রীতা শিল্পালয়ে এসে প্রথম বরাত দিয়ে যান ৷ পরবর্তীতে মালদার এক বাসিন্দা মহারাষ্ট্রের জন্যও গণেশ মূর্তির বরাত দেন ৷ তারপরেই প্রবল উচ্ছ্বাসে কাজে নেমে পড়েন বিশ্বনাথ পাল, হিরণ পাল, শম্ভু পালের মতো শিল্পীরা ৷ তবে শুধু পুরুষরাই নয়, কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন পপি পাল, মাধবী পাল, শিপ্রা পাল, কামনা পালের মতো মহিলা শিল্পীরা ৷

প্রথমে কাঁচা মাটি ছাঁচে ফেলে গণপতির মূর্তি বানানো, তারপর সেই ছাঁচ রোদে শুকিয়ে ভাটিতে পোড়ানোর কাজ শেষ ৷ শেষবেলায় রং ও তুলি নিয়ে ব্যস্ত সবাই ৷ এবার তাঁরা তিন ধরনের মূর্তি বানিয়েছেন ৷ মারাঠি গণেশের কোনওটির মাথায় রাজমুকুট, কোনওটির বা পাগড়ি ৷ ওড়িয়া গণেশের অবশ্য সেসব ঝামেলা নেই ৷ তবে এই রাজ্যে গণেশের সঙ্গে একই ফ্রেমে লক্ষ্মী ও সরস্বতীর মূর্তিও রয়েছে ৷ মোট ছয়টি মাপের গণেশ মূর্তি তৈরি করেছেন বুনিয়াদপুরের শিল্পীরা ৷

বুনিয়াদপুর, 23 অগস্ট: আর মাত্র 13 দিন ৷ তারপরেই গণপতি বাপ্পায় মেতে উঠবে মহারাষ্ট্র ৷ মেতে উঠবে পুরো দেশ ৷ আরব সাগরের তীরের এই উৎসবে এবার সামিল হচ্ছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরও ৷ এখানকার শিল্পীদের তৈরি গণপতি এবার পূজিত হবে মহারাষ্ট্রে ৷ অবশ্য শুধু মহারাষ্ট্রই নয়, বুনিয়াদপুর কইল পালপাড়ার তৈরি ছাঁচের গণেশমূর্তি এবার পাড়ি দিচ্ছে বঙ্গোপসাগর তীরের ওড়িশাতেও ৷ এই প্রথম ৷

বুনিয়াদপুরের ছাঁচের তৈরি গণেশ পাড়ি দিচ্ছে মহারাষ্ট্র-ওড়িশায় (নিজস্ব ভিডিয়ো)

আগামী 7 সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে গণেশ পুজো ৷ ‘গণপতি বাপ্পা মোরিয়া’ রবে মেতে উঠবে পশ্চিমের গোয়া, মহারাষ্ট্র থেকে শুরু করে পূর্বের ওড়িশা, এমনকি দক্ষিণের রাজ্যগুলিও ৷ 10 দিন ধরে চলবে উৎসব ৷ বাপ্পা পূজিত হবেন ঘরে ঘরে ৷ সময়ের সঙ্গে এই বাংলার কিছু অংশেও এখন গণেশ পুজোর ধুম দেখা যাচ্ছে ৷ ঠিক এই সময় নাওয়া খাওয়া শিকেয় উঠেছে বুনিয়াদপুর পালপাড়ায় ৷ কারণ, এবার এখান থেকেই মহারাষ্ট্রে পাড়ি দেবে কয়েক হাজার ছাঁচে তৈরি গণেশ মূর্তি ৷ যাবে ওড়িশাতেও ৷ আর মাত্র একদিন বাদেই লরিবোঝাই হবে সেসব মূর্তি ৷ 25 অগস্ট রওনা দেবে বিভিন্ন রাজ্যের উদ্দেশে ৷

এই মুহূর্তে চরম ব্যস্ততা বুনিয়াদপুর পৌরসভার 9 নম্বর ওয়ার্ডের কইল পালপাড়ায় ৷ এবারই প্রথম এই পাড়ার মূর্তি পাড়ি দিচ্ছে দেশের তিন প্রান্তে ৷ এখানকার রীতা শিল্পালয় চার হাজার মূর্তির বরাত পেয়েছে ৷ যাবে মহারাষ্ট্র ও ওড়িশায় ৷

ETV BHARAT
বুনিয়াদপুরে তৈরি হচ্ছে ছাঁচের গণেশ (নিজস্ব চিত্র)

শিল্পালয়ের কর্ণধার তাপস পাল জানালেন, "এবারই প্রথম ভিনরাজ্যে গণেশ বিক্রির সুযোগ পেয়েছি ৷ প্রথমে ছ’হাজার মূর্তির বরাত ছিল ৷ কিন্তু হাতে সময় কম থাকায় চার হাজার প্রতিমার বরাত ধরি ৷ মনে কিছু ভয়ও কাজ করছিল ৷ প্রথমবার বরাত পাওয়ায় সেই ভয় ৷ তাছাড়া টাকা-পয়সার ব্যাপারও আছে ৷ শ্রমিক, মাটি, রং ইত্যাদি উপকরণের বেজায় দাম ৷ মহাজনদের কাছে অগ্রিম পাওয়া যায় না ৷ আমরা সরকারি আর্থিক সাহায্যও পাই না ৷ যদি সেসব পাওয়া যেত, তবে আরও বেশি মূর্তি ভিনরাজ্যে পাঠাতে পারতাম ৷ তবে এই বরাত পাওয়ায় আমরা খুশি ৷ এতে এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে ৷ আমাদেরও ভালো লাভ হবে বলে আশা করছি ৷"

আরেক শিল্পী পবিত্র পালের বক্তব্য, "ছেলেরা গণেশ মূর্তি তৈরি করছে ৷ মহারাষ্ট্র আর ওড়িশা থেকে বরাত মিলেছে ৷ বুনিয়াদপুরের মতো একটা ছোট্ট জায়গা থেকে এত মূর্তি অন্যান্য রাজ্যে যাচ্ছে দেখে খুব ভালো লাগছে ৷ হাতে আর বেশি সময় নেই ৷ তাই ছেলেদের সঙ্গে পুত্রবধূরাও কাজে হাত লাগিয়েছে ৷"

শিল্পী মাধবী পাল জানালেন, "এমনটা যে হতে পারে, কখনও ভাবিনি ৷ এই বরাত পেয়ে আমরা ভীষণ খুশি ৷ কাজ করার উদ্যমটাই বেড়ে গিয়েছে ৷ আমরা চাই, এরপর বাকি রাজ্যগুলি থেকেও এখানে মূর্তির বরাত আসুক ৷ তাতে এলাকার আর্থ সামাজিক পরিস্থিতিটাই বদলে যেতে পারে ৷"

বরাত এসেছিল মাস তিনেক আগে ৷ প্রথম বরাত এসেছিল ওড়িশা থেকে ৷ শিল্পীরা জানাচ্ছেন, কটকের বাসিন্দা সম্বল পাল বুনিয়াদপুরের রীতা শিল্পালয়ে এসে প্রথম বরাত দিয়ে যান ৷ পরবর্তীতে মালদার এক বাসিন্দা মহারাষ্ট্রের জন্যও গণেশ মূর্তির বরাত দেন ৷ তারপরেই প্রবল উচ্ছ্বাসে কাজে নেমে পড়েন বিশ্বনাথ পাল, হিরণ পাল, শম্ভু পালের মতো শিল্পীরা ৷ তবে শুধু পুরুষরাই নয়, কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন পপি পাল, মাধবী পাল, শিপ্রা পাল, কামনা পালের মতো মহিলা শিল্পীরা ৷

প্রথমে কাঁচা মাটি ছাঁচে ফেলে গণপতির মূর্তি বানানো, তারপর সেই ছাঁচ রোদে শুকিয়ে ভাটিতে পোড়ানোর কাজ শেষ ৷ শেষবেলায় রং ও তুলি নিয়ে ব্যস্ত সবাই ৷ এবার তাঁরা তিন ধরনের মূর্তি বানিয়েছেন ৷ মারাঠি গণেশের কোনওটির মাথায় রাজমুকুট, কোনওটির বা পাগড়ি ৷ ওড়িয়া গণেশের অবশ্য সেসব ঝামেলা নেই ৷ তবে এই রাজ্যে গণেশের সঙ্গে একই ফ্রেমে লক্ষ্মী ও সরস্বতীর মূর্তিও রয়েছে ৷ মোট ছয়টি মাপের গণেশ মূর্তি তৈরি করেছেন বুনিয়াদপুরের শিল্পীরা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.