কলকাতা, 13 জানুয়ারি: রেশন দুর্নীতি মামলায় প্রথম অভিযোগকারীকে বর্তমানে খুঁজে পাচ্ছেন না ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা । আর তাঁকে ঘিরেই ঘনীভূত হয়েছে রহস্য । যদিও ওই মামলাকারীর প্রতিবেশীদের দাবি, তাঁকে প্রায়ই এলাকায় দেখা যায় ৷
ইডির দাবি, রেশন দুর্নীতি মামলায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হয়েছে । ফলে সব দিক থেকেই তথ্য প্রমাণ জোগাড় করা জরুরি ৷ পাশাপাশি অভিযোগকারীদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা বর্তমানে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে মনে করছেন ইডির আধিকারিকরা । আর তাতেই বেজায় বিপাকে পড়তে হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ।
ইডির দাবি, যে ব্যক্তির করা অভিযোগের ভিত্তিতে এই মামলা শুরু হয়েছিল, এবার সেই অভিযোগকারীরই খোঁজ মিলছে না । কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, প্রগতি ময়দান থানা এলাকার ধাপা দুর্গাপুরের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত তারক মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি প্রথম এই মামলায় অভিযোগ করেছিলেন । ইডির দাবি, তারা ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য চলতি মাসের গোড়ায় নোটিস পাঠালেও তিনি হাজিরা দেননি । এরপর একাধিকবার ওই ব্যক্তির বাড়িতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে ৷ তবে তিনি কোনোবারই জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হননি বলে অভিযোগ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দাদের । শুধু নোটিশ পাঠানো নয়, তাঁকে ফোন করা হলেও তিনি কল ধরেননি বলে দাবি ইডির ।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের অনুমান, দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর থানায় তারক মণ্ডল অভিযোগ জানালেও, তাঁর পিছনে অন্য কেউ রয়েছে । কিন্তু কে সেই ব্যক্তি? তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা । বর্তমানে ইডির গোয়েন্দারা রেশন দুর্নীতি-কাণ্ডের বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের হদিশ পেতেই ধাপার ওই তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান । ইডির গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ধাপায় ওই তৃণমূল নেতার বাড়িতেও গিয়েছিলেন ৷ কিন্তু তাঁরা সেখান থেকে খালি হাতে ফেরেন ৷ কারণ, ধাপায় তারকের বাড়ি তাঁরা তালাবন্ধ অবস্থায় দেখতে পান ইডির গোয়েন্দারা ।
তদন্তে নেমে ইডি জানতে পেরেছে, ওই ব্যক্তির একটি অফিস আছে । কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, সেখানেও এক কর্মীর মাধ্যমে ফোনে যোগাযোগ করা হয় । সেখান থেকেই ইডির গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, তারক মণ্ডল নাকি গত 5 দিন ধরে প্রায় শয্যাশায়ী । তারকের দাবি, তিনি নাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কোনও নোটিশ পাননি । অথচ স্থানীয়রা বলছেন, তারক রোজই অফিসে আসেন । দিব্যি হেঁটে চলে বেড়াচ্ছেন ।
আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কেন একটি তদন্তকারী সমস্যার জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে চাইছেন না? রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে প্রথমে উত্তর 24 পরগনার বাসিন্দা বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে ইডি । পরে বাকিবুরকে জেরা করে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম পান তদন্তকারীরা । পরে তাঁকেও গ্রেফতার করে ইডির গোয়েন্দারা ।