নয়াদিল্লি, 16 ফেব্রুয়ারি: চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে জিনিসপত্র ৷ সাহায্যের জন্য চিৎকার করেও কোনও লাভ হয়নি ৷ অসম্ভব ঠেলাঠেলির সেই ভয়ঙ্কর অবস্থা মনে করলেই আতঙ্ক গ্রাস করছে তাঁদের ৷ নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনা যারা চোখের সামনে দেখেছেন তাঁরা সেই ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানালেন ৷ প্রশাসন মনে করছে, প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তনের বিষয়ে একটি ভুল ঘোষণার জন্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল ৷ তার ফলেই এই দুর্ঘটনা ৷ কিছু প্রত্যক্ষদর্শীও এই কথাই বলছেন ৷
- প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য :
12 বছর ধরে নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে একটি দোকান চালাচ্ছেন রবি কুমার ৷ শনিবার রাতে তাঁর চোখের সামনেই এই ঘটনা ঘটে ৷ এই বিষয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সেই দুঃখজনক দৃশ্যের কথা স্মরণ করে কুমার বলেন, "12, 14 এবং 15 নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রবল ভিড় ছিল । প্রয়াগরাজে যাওয়ার সমস্ত ট্রেন সম্পূর্ণ ভর্তি ছিল। প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ইতিমধ্যেই একটি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল যখন অন্য একটি ট্রেনের আসার কথা ঘোষণা করে দেওয়া হয় । ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই, লোকেরা একে অপরকে ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে যায় । প্ল্যাটফর্মগুলির সঙ্গে সংযোগকারী ফুটব্রিজটি ছোট ৷ সেই কারণে ভিড়ের মধ্যে লোকেরা পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হয় ৷"
পাহাড়গঞ্জের বাসিন্দা বেদ প্রকাশ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়াগরাজ ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু বেসামাল ভিড় দেখে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন । তাঁর কথায়," এত ভিড় ছিল যে ট্রেনের ভিতরেও দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না । আমি বেরিয়ে আসি এবং ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই ৷"
- পদপিষ্টে মৃতদের পরিবারের বক্তব্য :
মৃত পুনম দেবীর দেহ নিতে এলএনজেপি হাসপাতালে পৌঁছন তাঁর এক আত্মীয়। তিনি শনিবার রাতে বিহারে বাড়ি ফিরছিলেন ৷ তাঁর কথায়, "স্টেশনে অসম্ভব ভিড় ছিল ৷ আমাদের ট্রেনটি 12 নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসার কথা ছিল । তবে একটি ঘোষণা হওয়ার পরে, লোকেরা ছুটে আসতে শুরু করে এবং যারা পড়ে গিয়েছিল তারা পিষ্ট হয়ে যায় ৷" নিহতদের মধ্যে এক মহিলা পরিবারের সঙ্গে বিহারের ছাপরা যাচ্ছিলেন । তাঁর ছেলে বলেন,"আমরা একটি বড় দল বাড়ি ফিরছিলাম ৷ সেই সময় বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে মায়ের মৃত্যু হয় । লোকেরা একে অপরকে ধাক্কা দিচ্ছিল এবং তিনি তাড়াহুড়োয় পড়ে যান ।"
- রেলের বক্তব্য :
উত্তর রেলওয়ের প্রধান জনসংযোগ আধিকারিক (সিপিআরও) হিমাংশু উপাধ্যায় রবিবার জানান, পদপিষ্টের ঘটনার সময় পটনাগামী মগধ এক্সপ্রেস 14 নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল ৷ অন্যদিকে, নয়াদিল্লি-জম্মু উত্তর যোগাযোগ ক্রান্তি এক্সপ্রেসটি 15 নম্বর প্ল্যাটফর্মে ছিল ৷ বিপুল সংখ্যক যাত্রী প্রয়াগরাজের ট্রেনে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ৷ সেই সময় কিছু লোক ফুটওভার ব্রিজ থেকে 14 এবং 15 নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন ৷ তাঁরা পিছলে অন্যদের উপর পড়ে যাওয়াতেই এই দুর্ঘটনা ঘটে ৷