বংশীহারি, 16 ফেব্রুয়ারি: এলাকাবাসীর সুবিধার জন্য তৈরি করা হয় পুলিশ ফাঁড়ি ৷ সেই পুলিশ ফাঁড়ি বর্তমানে প্রায়শই বন্ধ হয়ে পড়ে থাকে ৷ সেখানে থাকে না কোনও পুলিশ আধিকারিকও ৷ দরকারে এলাকাবাসীকে অভিযোগ জানাতে ছুটতে হয় সেই বংশীহারি থানায় । এমনটাই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন স্থানীয়রা ৷ ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে ৷ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার ৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুনিয়াদপুর পুরসভার 4 নম্বর ওয়ার্ডের সেলিমাবাদ এলাকায় 2023 সালে 7 অগস্ট ঘটা করে পুলিশ ফাঁড়ির উদ্বোধন হয় । সেই সময় এলাকাবাসীদের কথা ভেবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, একজন করে পুলিশ অফিসার-সহ বিভিন্ন সিভিক পুলিশরা সেখানে উপস্থিত থাকবেন এবং এলাকাবাসীদের বিভিন্ন অভিযোগপত্র জমা নেবেন । কিন্তু বুনিয়াদপুর পুলিশ ফাঁড়ি চালু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানে দেখা গিয়েছে অন্য এক চিত্র ।
দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র সিভিক পুলিশ সেখানে সময় মতো ডিউটি করেন ৷ কিন্তু কোনও অফিসারকে দেখা যায় না পুলিশ ফাঁড়িতে । প্রায় সময় বন্ধ থাকে এই পুলিশ ফাঁড়ি । দিনের বেলা দু'একজন সিভিক পুলিশ উপস্থিত থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায় । সেই কারণে এলাকাবাসীদের যেতে হয় বংশীহারী থানায় । ফলে পুলিশ ফাঁড়ি হয়েও এলাকাবাসীদের কোনও লাভ হয়নি । এলাকাবাসীদের কথা ভেবে জেলা পুলিশ প্রশাসনের এই উদ্যোগ সম্পূর্ণ বিফল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ ।
এই বিষয়ে সেলিমাবাদ এলাকার বাসিন্দা সুব্রত সেন রায় বলেন, "আমাদের এই এলাকায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ ফাঁড়ি চালু করা হলেও সেখানে কোনও পুলিশ অফিসার বা সিভিক পুলিশকে দেখা যায় না । দিনের বেলা বা রাতের বেলা প্রায় সব সময় বন্ধই থাকে । আমরা চাই এখানে একজন করে পুলিশ অফিসার-সহ পুলিশকর্মী থাকুক ৷ তাহলে যে কোনও ধরনের অভিযোগ জানানোর জন্য আমাদের খুবই সুবিধা হবে ।"

এই বিষয়ে বুনিয়াদপুর পুরসভার বিজেপির টাউন সভাপতি দীপেশ বসাকের বক্তব্য, "এলাকাবাসীদের কথা ভেবে বুনিয়াদপুরে খুবই ঘটা করে সেই সময় পুলিশ ফাঁড়ির উদ্বোধন হয়েছিল । সেই সময় বংশীহারি থানার দায়িত্বে রয়েছিল মনোজিৎ সরকার । তিনি এলাকাবাসীদের কথা দেন এখানে একজন করে পুলিশ অফিসার থাকবে স্থানীয়দের সুবিধার্থে এবং বিভিন্ন অভিযোগ পত্র জমা নেবে । তাদের আর অতদূরে বংশীহারি থানায় যেতে হবে না । কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি এখানে পুলিশ ফাঁড়ি হলেও কেউ থাকে না ৷ শুধুমাত্র পরিত্যক্ত বাড়ি হয়ে পড়ে রয়েছে সেটি । আমরা চাই অতি শীঘ্র এই পুলিশ ফাঁড়ি চালু হোক ।"

এই বিষয়ে তৃণমূলের শিক্ষক নেতা শুভাশিস সিংহ বলেন, "পুলিশ ফাঁড়ি হয়ে কোনও লাভ হয়নি আমাদের ৷ কারণ যে কোনও অভিযোগপত্র জমা দিতে গেলে আমাদের সেই বুনিয়াদপুর থেকে বংশীহারি থানাতেই যেতে হয় । খুবই ঘটা করে এই পুলিশ ফাঁড়ি উদ্বোধন হলেও সেখানে কোনও পুলিশ অফিসার বা সিভিক পুলিশ কেউ থাকে না ৷ দিনে বা রাতে সম্পূর্ণ ফাঁকা পড়ে থাকে পুলিশ ফাঁড়ি । পুলিশ ফাঁড়ির যে কাজ আমাদের কারোরই তা চোখে পড়ে না ।"

এ বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল বলেন, "2023 সালে ঘটা করে পুলিশ ফাঁড়ি উদ্বোধন হয়েছিল ৷ কথাটা শুনেছি ৷ ওই পুলিশ ফাঁড়িতে যাতে সবসময় বিভিন্ন পুলিশ আধিকারিকরা থাকেন, খুবই তাড়াতাড়ি আমরা তার ব্যবস্থা করব ।"