কলকাতা, 8 ডিসেম্বর: গুণগতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ ৷ কেন্দ্রের স্বীকৃতিপত্র পেল কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের 82 নম্বর ওয়ার্ডের আরবান প্রাইমারি হেলথ ইউনিট। কলকাতা কর্পোরেশনের 5 ও 102 নম্বর ওয়ার্ডের হেলথ ইউনিটও এই স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে এই সার্টিফিকেট পাওয়ার পরীক্ষায় ফেল করেছে কলকাতা কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পরিষদ তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের 11 নম্বর ওয়ার্ডের হেলথ ইউনিট। কর্পোরেশন সূত্রে খবর, মূল্যায়ন সঠিক করা হয়নি বলে একটি অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রকে ৷
ভালো পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের পর দ্বিতীয় স্থানে আছে অন্ধ্রপ্রদেশ। তৃতীয় তামিলনাড়ু । কেন্দ্রের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের আওতাধীন (সেন্ট্রাল কোয়ালিটি সুপারভাইজারি কমিটি) বিভিন্ন গ্রামীণ ও শহুরে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামো থেকে শুরু করে পরিষেবার গুণগতমান, রোগীর অধিকার-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ মূল্যায়ন করে থাকে ৷ তাতে পাশ করলেই মেলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের স্বীকৃতিপত্র ।
সম্প্রতি কেন্দ্রের এই মূল্যায়নে রাজ্যের 460টি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান সার্টিফিকেট পেয়েছে । যার মধ্যে শহর এলাকায় আছে 60টি । কলকাতা কর্পোরেশনে সার্টিফিকেট পাওয়ার তালিকায় আছে 82, 5 ও 102 নম্বর ওয়ার্ডের আরবান প্রাইমারি হেলথ ইউনিট (ইউপিএইচসি)৷ কর্পোরেশন সূত্রে খবর, 40, 50, 131, 134 ও 144 নম্বর ওয়ার্ডের ইউপিএইচসিও এই সার্টিফিকেট পাওয়ার প্রক্রিয়ায় এগিয়ে আছে । ন্যাশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স স্ট্যান্ডার্ডস সার্টিফিকেশন পেয়ে সোশাল মিডিয়ার পেজে সে কথা লিখেছে কলকাতা কর্পোরেশন ।
আরবান প্রাইমারি হেলথ লিমিটেডে পরিষেবা কেমন ? রোগীর অধিকার রক্ষা হচ্ছে কিনা ? সেই কেন্দ্রের পরিকাঠামো কেমন ? যে চিকিৎসা দেওয়া হয় তার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আছে কিনা ? ওষুধপত্রের গুণগতমান কেমন ? রক্ত পরীক্ষা হলে তা কতটা ভালো করে নির্ণয় করা হয় ? প্রত্যেকটি চিকিৎসার ক্ষেত্রে আনুষঙ্গিক পরিকাঠামো কতটা মজবুত ? চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মী থেকে শুরু করে সহকারী কর্মী কতটা সহায়ক ? এই সমস্ত ক্ষেত্র আরও খুঁটিনাটিভাবে মূল্যায়ন করা হয় ।
এই মূল্যায়ন সম্পূর্ণভাবেই দিল্লি থেকে হয়ে থাকে । দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আধিকারিকরা এই মূল্যায়ন করতে বিভিন্ন অংশের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ছুটে যান । ফলে মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে প্রভাব খাটানোর কোনও জায়গা থাকে না বলেই মনে করে কেন্দ্রীয় সরকার । স্বচ্ছতা বজায় থাকে । শুধু তাই নয়, সার্টিফিকেট পাওয়ার পরেও হয় সারপ্রাইজ ভিজিট ৷ অর্থাৎ, যে পরিষেবা বা মান উত্তীর্ণ হওয়ায় একটি প্রতিষ্ঠান এই স্বীকৃতিপত্র পায় শুধু কী সেই জন্যেই পরিষেবাগুলি চালু ছিল নাকি পরবর্তী সময়েও একই মান ধরে আছে তা যাচাই করতেই এই সারপ্রাইজ ভিজিট করা হয় ।
এই প্রসঙ্গে এক আধিকারিক বলেন, "এই সার্টিফিকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে আগে আমাদের নিজেদের মধ্যে মূল্যায়ন করা হয় । পরীক্ষায় বসার মতো কেন্দ্রীয় টিমের কাছে পরীক্ষা দিতে হয় । তারা এসে মূল্যায়ন করে । তাদের দেওয়ার নম্বরের ভিত্তিতে স্বীকৃতিপত্র মেলে । ধাপে ধাপে কিছু কিছু করে এই প্রস্তুতি নিয়ে তারপরেই এই সার্টিফিকেট আদায়ের পরীক্ষায় যায় হেলথ ইউনিটগুলি । তেমনভাবেই কলকাতা কর্পোরেশনের তিনটি হেলথ ইউনিট পাশ করেছে একটি যেমন এই সার্টিফিকেট বা স্বীকৃতিপত্র পেয়েছে তেমনই একটি ফেল করেছে । সে ক্ষেত্রে আমরা মূল্যায়ন সঠিক হয়নি বলেও চিঠি লিখে জানিয়েছি । যদিও এখনও তার কোনও প্রত্যুত্তর মেলেনি । এই সার্টিফিকেট পাওয়ার দৌড়ে আছে আরও 5টি হেলথ ইউনিট ।"