মেদিনীপুর, 15 জানুয়ারি: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যু স্বাস্থ্য, কমিটির ভিজিট, সেই সঙ্গে সিআইডি তদন্তের পর এবার ক্ষোভের আঁচ জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যেও। এবার তারা একটি খোলা চিঠি দিল মেদিনীপুর মেডিক্যালের প্রিন্সিপালকে। এই চিঠিতে লেখা, 'মানুষ বড় কাঁদছে । তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও।' এই চিঠি নিয়ে ফের নতুন করে চাঞ্চল্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতি মৃত্যু নিয়ে এবার ক্ষোভের আঁচ লাগল জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে। এই ঘটনায় তারাই এবার খোলা চিঠি দিল মেদিনীপুর মেডিক্যালের প্রিন্সিপালকে। রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে লেখা হয়, "মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে দুর্ভাগ্যজনক প্রসূতি মৃত্যুর পরে এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। শুরু হয়েছে সেই পুরনো চেষ্টা, স্কেপগোট বানানোর সেই একই খেলা, একই চিত্রনাট্য, যা অনেক বছর ধরে দেখতে আমরা সবাই অভ্যস্ত। চরিত্রগুলো শুধু আপেক্ষিক। সর্বোচ্চ স্তরে প্রশাসনিক তদন্ত চলছে। আমাদের এটুকুই আশা থাকবে, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হোক এবং প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হোক।

না, আমরা অসংখ্য শূন্যপদ নিয়ে কথা বলবো না। আমরা নিয়োগ বা ট্রান্সফার নিয়ে কথা বলবো না। আমরা সিন্ডিকেট বা স্বাস্থ্য দুর্নীতি নিয়ে কথা বলবো না। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে সিনিয়র ডাক্তারবাবুর উপস্থিতি নিশ্চিত করা কার দায়িত্ব? কোন ওষুধ ওয়ার্ডে আসবে? কোন ওষুধ রোগী পাবে? তার গুণমান কেমন হবে? সেটা নিশ্চিত করা কার দায়িত্ব ? —সেই প্রশ্নও আমরা তুলবো না। শুধু নোটিশ বেরোবে, পিজিটিরা ওটি করতে পারবে না। নিজেরা করলে নাকি সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। Vicarious liability এর প্রশ্ন ছেড়েই দিলাম। অথচ সিনিয়রের supervision and guidance নিশ্চিত করা কার দায়িত্ব, সেই প্রশ্ন আমরা তুলতে পারবো না। কীভাবে একজনের total cell count রাতারাতি 56,000 হয়ে সেপ্টিক শক হয়, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কিছু জন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে, বাকিরা ভালো থাকে —সেই লজিক আমরা বুঝতে চাইবো না। ওরা জুনিয়র ডাক্তার, ওরা ইমোশনাল, ওরা সফ্ট টার্গেট, ওরা গণশত্রু। সাবাস্!! শুভবুদ্ধির উদয় হোক, এটুকুই প্রার্থনা। একটাই অনুরোধ - "মানুষ বড় কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও।"

প্রসঙ্গত, এই বুধবার নিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ অতিক্রান্ত হল প্রসূতি অসুস্থ হওয়ার ঘটনা। যদিও এই ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের সিআইডি এসেছে তদন্ত করতে। তারা বারংবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ সুপার, প্রিন্সিপালকে জেরার পাশাপাশি কথা বলছেন জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে। এরই মধ্যে গতকাল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিকিউরিটিদের সঙ্গে এক প্রস্থ বাগ-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে জুনিয়র ডাক্তাররা।
সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসা করতে আসা এক রোগীর পরিবারের লোকেদের মোবাইল চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে গন্ডগোল বাঁধে হাসপাতালে সিকিউরিটির সঙ্গে। সেই সময় জুনিয়র ডাক্তারের সিকিউরিটির এই ঘটনা প্রতিবাদ করলে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে সিকিউরিটি ও জুনিয়র ডাক্তাররা, যা নিয়ে রীতিমত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। এই ঘটনার পরই খোলা চিঠি দেওয়া হয় মেডিকেল কলেজ প্রিন্সিপালকে। যদিও এই নিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি।