শিলিগুড়ি, 21 অগস্ট: সিকিমের সিংথামে ভয়াবহ ধসের ঘটনায় ক্ষতি হয়েছে কমপক্ষে 15 থেকে 20 কোটি টাকার । তবে গত 4 অক্টোবর মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে হড়পা বানের পর থেকে ওই পাওয়ার হাউজ এবং সুইচ ইউনিটটি বন্ধই ছিল । বন্ধ ছিল বিদ্যুৎ উৎপাদনও ৷ যে কারণে ওই ইউনিটটি ক্ষতি হলেও কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি । এমনটাই জানিয়েছেন এনএইচপিসির আধিকারিকরা ।
এনএইচপিসির আধিকারিক একে দাস বলেন, "এটি একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় । এতে আমাদের কিছু করার নেই । তবে 4 অক্টোবর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর থেকেই ওই ইউনিটটি বন্ধ ছিল । যে কারণে কেউ আহত বা নিহত হননি । তবে প্রকল্পের ভালো ক্ষতি হয়েছে । তা যাচাই করতে দিল্লি থেকে আধিকারিকরা আসবেন ৷ তাঁরাই ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করবেন ।"
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে ভয়াবহ ধসের ঘটনা ঘটে সিংথামের ভালুটারে । সেখানে থাকা তিস্তা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের টিএলডিপি 5 নম্বর বাঁধ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় । এ দিকে ধসের কারণে সিংথাম থেকে ডিকচু যাতায়াতের মূল সড়কের একাধিক জায়গায় বড়সড় ফাটলের সৃষ্টি হয় । তার জেরে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে । যাতায়াতের জন্য দোচাম ও ডিকচু হয়ে সিংথাম যাওয়ার বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে সিকিম প্রশাসন । ধসের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান গ্যাংটকের জেলাশাসক তুষার গজানন নিখারে । সঙ্গে ছিলেন খামডংয়ের বিডিও, ভূতত্ত্ববিদ, জিওলজিস্ট, জেলা পঞ্চায়েত-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা ।
জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ধসের ফলে কালু ছেত্রী, কুল বাহাদুর সুব্বা, আনন্দ তামাং, ধনরাজ রাই, নিরু সুব্বা, তরণ বাহাদুর ছেত্রী নামে ছ'জনের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । সেইসব বাড়ির সদস্যদের এনএইচপিসির গেস্ট হাউজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে । বিডিও খামডংকে তাঁদের দেখরেখের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । ওই প্লান্টের আধিকারিক জানিয়েছেন, ধসের ফলে একাধিক ক্ষতি হয়েছে । পাওয়ার হাউজ, সুইচিং ইউনিট ছাড়াও গ্যাস ইনসুলেটেড সাবস্টেশন বিল্ডিংও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । দিল্লি থেকে এনএইচপিসির উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করবেন এবং সংস্কার ও মেরামতের জন্য কী কী করার প্রয়োজন রয়েছে তা জানাবেন ।
জানা গিয়েছে, গ্যাংটকের জেলাশাসক বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনকে দ্রুত ডিকচু সিংথাম সড়কটি মেরামত ও সংস্কার করতে নির্দেশ দিয়েছেন । সেইমতো বুধবার থেকে সংস্কারের কাজ শুরু করেছে বিআরও । পাশাপাশি জিওলজিস্ট মাইন ও জিওলজিস্ট আধিকারিকদের এই ধরনের ধসের কারণ খতিয়ে দেখে তা প্রতিরোধের জন্য স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।