দুর্গাপুর, 4 মার্চ: নিস্তব্ধ হাসপাতালের ফিমেল ওয়ার্ডে উলুধ্বনি । হাসপাতালের বেডে পাত্রী ৷ সেখানেই এক হল চারহাত ৷ সম্পন্ন হল শুভদৃষ্টি, মালাবদল থেকে সিঁথি রাঙিয়ে দেওয়ার চিরন্তন প্রথা । মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে হাসপাতালেই সার্থকতা পেল আড়াই বছরের প্রেম ।
গল্প শুরু আড়াই বছর আগে ৷ দিল্লির এনসিআরের বাসিন্দা অমিত মুখোপাধ্যায় ও দুর্গাপুরের কোকওভেন থানা এলাকার শ্যামপুরের বাসিন্দা সুচরিতা পাত্র দু'জনেই তখন নয়ডায় চাকরি করতেন ৷ সেই সময় থেকেই তাঁদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে । এরপর কর্মসূত্রে দুর্গাপুরে চলে আসেন অমিত ৷ এরপর পরিবারের সম্মতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে 2 মার্চ অর্থাৎ শনিবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল তাঁদের । কিন্তু তার ঠিক পাঁচদিন আগেই হেপাটাইটিস বি সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে পড়েন সুচরিতা । তাঁকে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । সেখানেই চিকিৎসা চলছিল ।
প্রেমিক অমিত এবং সুচরিতার পরিবার হাসপাতালে কাছে আবেদন করেন সেখানেই বিয়ের ব্যবস্থা করার জন্য । তাঁদের আবেদনে সাড়া দেন হাসপাতালের কর্ণধার পঙ্কজ মুখোপাধ্যায় । শনিবার সন্ধ্যায় পুরোহিতকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে হাজির হয় পাত্রপক্ষ । প্রথমে মালাবদল, তারপর প্রেমিকার সিঁথিতে সিঁদুর দিলেন অমিত । চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ল সুচরিতার ৷ আর তাঁদের এই নবজীবনে প্রবেশের সাক্ষী রইলেন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও পরিবারের সদস্যরা ।
হাসপাতালের সহযোগিতায় নতুন জীবন শুরু করতে পেরে স্বাভাবিকভাবেই খুশি পাত্রী-পাত্রী দু'জনেই ৷ তাঁদের কথায়, "হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় পূর্ণতা পেল আমাদের আড়াই বছরের ভালোবাসা ।" এই বিষয়ে হাসপাতালের কর্ণধার পঙ্কজ মুখোপাধ্যায় জানান, তাদের কাছে আবেদন করেছিল চিকিৎসাধীন সুচরিতার পরিবার । সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে এবং যুবতির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয় । তবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিয়ে সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছিল ৷
আরও পড়ুন :