মালদা, 30 মার্চ: গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার (তৃণমূল পরিচালিত) সম্মেলন ঘিরে বিতর্ক ৷ শনিবার এই সম্মেলনে উপস্থিত হন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু-সহ জেলার দুই মন্ত্রী তজমুল হোসেন ও সাবিনা ইয়াসমিন ৷ সঙ্গে ছিলেন উত্তর মালদার তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও দক্ষিণ মালদার প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রেহান ৷ এই দুই প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়েই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ৷ নির্বাচনী বিধি জারি হয়ে যাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক সম্মেলন নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন কংগ্রেস জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী ৷ কমিশনের তরফে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও শো-কজ করা হয়েছে ৷
ওয়েবকুপার সম্মেলন ঘিরে ফ্লেক্স ও ফেস্টুনে মুড়ে ফেলা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ৷ সব জায়গায় টাঙানো করছে মমতা ও অভিষেকের ছবি ৷ এই ছবিতে রয়েছেন ব্রাত্য নিজেও ৷ এদিনের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ওয়েবকুপার একাধিক কার্যকর্তা, রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর, জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি, সংগঠনের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট সম্পাদক সৌরেন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ৷ এই ঘটনায় ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী ৷
এই প্রসঙ্গেই দক্ষিণ মালদার কংগ্রেস প্রার্থী ঈশা খান চৌধুরী বলেন, "নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরেই সারা দেশে নির্বাচনি আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে ৷ এর মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শিক্ষকদের নিয়ে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সম্মেলন করছেন ৷ সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রয়েছে ৷ বিশ্ববিদ্যালয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৷ কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে, নির্বাচনি বিধি চলাকালীন কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক সভা করা যাবে না ৷ এই ঘটনায় নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে ৷ তার জন্যই আমাদের জেলা সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷"
এই প্রসঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাস জানান, রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েবকুপা ৷ তারা এখানে বছর পর বছর সম্মেলন করছে ৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষক রয়েছেন ৷ গৌড়বঙ্গের অধীনে 29টি কলেজেও প্রচুর শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন যাঁরা ওয়েবকুপার সদস্য ৷ তাঁরা ওয়েবকুপার সম্মেলন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করার অনুমতি চান ৷ সেই আবেদনপত্র উপাচার্যের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি ৷ উপাচার্য সেটি এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে পাঠান ৷ এরপরই নির্বাচন সিদ্ধান্ত নেয়, 5 হাজার টাকার বিনিময়ে এই সংগঠনকে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে ৷ সেইমতো আজ সেই সম্মেলন হচ্ছে ৷ এতে পঠনপাঠনের কোনও সমস্যা হয়নি ৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও মন্ত্বব্য করতে চাননি তিনি ৷ তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশন আমাদের শো-কজ করেছে ৷ আমরা তার জবাব দেব ৷ একথা কথা বলতে পারি, আয়োজক কমিটি আমাদের যেসব কাগজপত্র দেখিয়েছে, তার মধ্যে এই সম্মেলনের জন্য তারা যে নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুমতি নিয়েছে, তাও আছে ৷"
পাশাপাশি মঞ্চে দুই তৃণমূল প্রার্থীর উপস্থিতি প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎবাবু বলেন, "যাঁদের নিয়ে আপনারা বিতর্ক করছেন, তাঁদের একজন অধ্যাপক শ্রেণিভুক্ত ৷ তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোলাবরেটেড রিসার্চ ওয়ার্কার ৷ আরেকজন এই জেলার আইপিএস ছিলেন ৷ তাঁর সময়কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মে আমরা তাঁর বহু সহায়তা নিয়েছি ৷ রাজনৈতিক সম্পর্কের বাইরেও ব্যক্তিগত পারিবারিক সম্পর্ক থাকে ৷ এই দু’জনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের গভীর আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে ৷ আমাদের মনে হয়েছে, এই ধরনের কনফারেন্সে শিক্ষামূলক আলোচনাও হবে ৷ যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে উপকারী ৷"
আরও পড়ুন: