কলকাতা, 6 মার্চ: বুধবার সারাদিন ধরে চলল নাটক! শেখ শাহজাহান আজ সারাদিন খবরের শিরোনামে ৷ সন্দেশখালির মাস্টারমাইন্ড কি সিবিআই হেফাজতে যাচ্ছে? তা নিয়ে রাজ্যবাসী দেখল একের পর এক লুকোচুরি ৷ হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট, একদিকে নির্দেশ খারিজ আবার অন্যদিকে নয়া নির্দেশ ৷ ভবানী ভবনে সিবিআইয়ের পৌঁছনো থেকে প্রায় ঘণ্টা দুয়েকের অপেক্ষা, এসএসকেএমে শাহজাহানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ফের নিয়ে আসা ৷ অবশেষে বুধ সন্ধ্যায় শাহজাহানকে নিজেদের কব্জা করতে পারল সিবিআই ৷ পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট মামলার কাগজপত্র সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিল সিআইডি। দীর্ঘ টানাপোড়েনের শেষে শাহজাহানকে নিয়ে জোকা ইএসআই হাসপাতালের দিকে রওনা দেয় সিবিআই।
-
#WATCH | Sandeshkhali accused Shahjahan Sheikh brought back to Bhabani Bhaban Police Headquarters in Kolkata, West Bengal after his medical examination at SSKM hospital.
— ANI (@ANI) March 6, 2024
Handing over procedure includes a medical examination of the accused. Calcutta High Court today observed… pic.twitter.com/0NU8LhniZm
বুধ বিকেল থেকে কী হয়? শেখ শাহাজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার আগে এদিন তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ তারপরই ভবানী ভবনে ফের নিয়ে আসার পর তাঁকে সিআইডি নিজেদের জিম্মা থেকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় ৷ এদিন সন্ধ্যায় ভবানী ভবন থেকে সিআইডি, সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার পর জোকা ইএসআই হাসহাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শাহজাহানকে ৷
ঘটনাক্রম অনুযায়ী, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে সন্দেশখালির 'মাস্টারমাইন্ড'কে তুলে দিতে হবে ৷ কিন্তু তা হয়নি ৷ রাজ্য সরকার হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্য়ালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় ৷ গতকাল সিবিআইয়ের হাতে শাহজাহানকে তুলে না-দেওয়া নিয়ে সিআইডি যুক্তি দেয়, এই মামলা এখনও বিচারাধীন তাই শাহজাহানকে সিবিআই হেফাজতে দেওয়া হবে না ৷ এদিকে, বুধবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, প্রয়োজনে প্রধান বিচারপতির কাছে এনিয়ে আবেদন জানাতে পারে রাজ্য। আপাতত হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল থাকছে।
এদিকে, এরপরই আদালত অবমাননার মামলা করেছে ইডি। ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, শাহজাহানকে হস্তান্তরে আর সময় দেওয়া যাবে না।বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি ছিল বুধবার। সেখানে প্রধান বিচারপতির নির্দেশই বহাল রাখা হয়েছে। অর্থাৎ অবিলম্বে শাহজাহানকে সিবিআই-এর হাতে তুলে দিতে হবে। অর্থাৎ বুধবার সওয়া 4টের মধ্যে শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করতে হবে। সেই নির্দেশ মেনে এদিন প্রায় পৌনে চারটে নাগাদ ভবানী ভবনে পৌঁছে যান সিবিআই আধিকারিকরা। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।
কিন্তু আদালতের দেওয়া সময় পার হয়ে গেলেও শাহজাহানকে নিয়ে ভবানী ভবন থেকে বেরোতে দেখা যায়নি সিবিআইকে। তার প্রেক্ষিতে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। তার মধ্যে বিকেলে ভবানী ভবনের পিছনের একটি গেট দিয়ে শাহজাহানকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে চলে যায় সিআইডি। এরই মধ্যে হস্তান্তর প্রক্রিয়ার আগে নিয়ম মেনে শাহজাহানের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়। এরপরই এসএসকেএম থেকে শাহজাহানের প্রাথমিক চিকিৎসার করিয়ে সন্ধ্যা 6টার পর আবার শাহজাহানকে নিয়ে ভবানী ভবনে যায় রাজ্য পুলিশ।
তার বেশ কিছুক্ষণ পর শাহজাহানকে হাতে পায় সিবিআই ৷ এরপরই বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতাকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সিবিআইয়ের তরফে ৷ উল্লেখ্য, বুধবারই সিবিআই সন্দেশখালিকাণ্ডে তিনটি এফআইআর করেছে। তার মধ্যে দুটিতে সন্দেশখালির অশান্তিতে মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে শাহজাহানের।
আরও পড়ুন: