আলিপুরদুয়ার, 26 অক্টোবর: হাসপাতাল চত্বরে কুকুরের মুখে রক্তের প্যাকেট ! কুকুরটি সেই প্যাকেট দাঁত দিয়ে টেনে খোলার চেষ্টা করছে ৷ এমন একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায় ৷ ঘটনাটি আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের ৷ এরপরই চাঞ্চল্য ছড়ায় ওই হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে ৷ কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, ওই প্যাকেটে থাকা রক্ত আগেই ব্যবহার করা হয়েছিল ৷ এক কর্মীর ভুলে সেটি নির্দিষ্ট জায়গার বদলে অন্যত্র ফেলা হয়েছিল। তার জেরেই এই ঘটনা।
তাদের আরও দাবি, প্যাকেটটি থেকে রক্ত দেওয়ার পর সেটি ফেলে দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু নির্দিষ্ট জায়গায় না-রাখার ফলেই এমন ঘটনা ঘটেছে ৷ এমন ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রক্তদাতারা ৷
ঘটনা প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ পরিতোষ মণ্ডল বলেন, "প্রথমেই বলি ওটা ব্যবহার করা খালি রক্তের ব্যাগ ৷ ওই ব্যাগের গায়ে যা লেখা আছে, তা আমরা রেজিস্টারে মিলিয়ে দেখেছি ৷ 13 বছরের একটি মেয়েকে গত 24 তারিখ ওই ব্যাগের রক্ত দেওয়া হয় ৷ মেয়েটি থ্যালাসেমিয়ার রোগী ৷ মাদারিহাটে বাড়ি ৷"
সেই রক্তের ব্যাগের নাগাল কুকুর পেল কীভাবে ?
এই প্রসঙ্গে সুপার আরও বলেন, "গতকাল (25 অক্টোবর) সকাল বা দুপুর নাগাদ বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্যটি থ্যালাসেমিয়া ইউনিট থেকে নিয়ে এসে ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে রেখেছিলেন এক কর্মী। যেখানে রাখার কথা সেখানে না রেখে অন্য একটা জায়গায় রেখেছিলেন । তার ফলে কুকুর হয়তো গন্ধ পেয়ে গিয়েছে ৷ কর্তব্যরত ওই কর্মীকে শোকজ করা হয়েছে ৷ পাশাপাশি বাকি কর্মীদেরও এই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে ৷"
এই ঘটনাকে সামনে রেখে হাসপাতাল সুপারের কাছে অভিযোগ জানায় রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত আলিপুরদুয়ারের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মানবিক মুখ । সংস্থার কর্তা রাতুল বিশ্বাস বলেন, "কুকুরের মুখে রক্তের প্যাকেটের ভিডিয়ো আমিও দেখেছি ৷ দেখার পরই আমি সুপারের সঙ্গে ফোনে কথা বলি ৷ এটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ৷ হাসপাতালের সুপার প্রমাণ দিয়ে দেখান যে এটা ব্যবহৃত রক্তের ব্যাগ ৷ তা হলেও বলব, যে কোনও বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য নষ্ট করার একটা নির্দিষ্ট নিয়ম থাকে ৷ এক্ষেত্রে এই বর্জ্য নষ্ট করার প্রক্রিয়ার মধ্যে কোনও একটা গাফিলতি ছিল ৷ সেখান থেকেই কুকুর রক্তের ব্যাগটি পায় ৷ এই ঘটনায় জনমানসে যেন রক্তদান নিয়ে ভুল বার্তা না যায়, তার চেষ্টা আমরা করব ৷"