কলকাতা, 26 ফেব্রুয়ারি: গোথা হাই স্কুল-সহ অন্যান্য জেলার স্কুলে বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতির তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার ৷ এই দুর্নীতি মামলায় সোমবার সারা রাজ্যের ডিআইদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল কলকাতা হাইকোর্টে ৷ সেই রিপোর্ট এ দিন আদালতে জমা দিতে পারেনি রাজ্য । রাজ্যের এই উদাসীনতা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু । তবে রাজ্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় দিয়েছে আদালত । আগামী বৃহস্পতিবার মামলার পরবর্তী শুনানি ।
এ দিন এই মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হতে তুলে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু । রাজ্যকে ডিআইদের রিপোর্টের সঙ্গে মামলার কেস ডায়েরি আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি । পাশাপাশি রাজ্যের ভিজিলেন্সের নিয়মাবলী ও সিবিআইয়ের এই মামলার ক্ষেত্রে তদন্তের নিয়মাবলী দেখতে হবে আদালতকে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি বসু ।
রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এ দিন মন্তব্য করেন, "সিআইডি কী তদন্ত করছে ? তিনজনের সিট গঠিত হয়েছে । প্রত্যেকের কাছে অভিযোগ এসেছে এতদিনে । তাহলে সেই তদন্ত কতদূর ? স্কুল সার্ভিস কমিশনের পশ্চিমাঞ্চলের চেয়ারম্যান সিরাজউদ্দিন শেখ কি গ্রেফতার হয়েছে ?"
উত্তরে রাজ্য সরকারের আইনজীবী রুদ্র নন্দী জানান, "সিটের সদস্যদের কাছে অভিযোগের ভিত্তিতে তারা তদন্ত করছে । গোথা হাই স্কুলে বাবা ও ছেলে গ্রেফতার হয়েছে । আব্দুল রাকিবকে সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে । সকলেই এই স্কুলের শিক্ষক ও ক্লার্ক হিসাবে কাজ করতেন । এছাড়াও জাসমিনা খাতুন নামে আর একজন গ্রেফতার হয়েছে ।"
বিচারপতি বসু বলেন, "সমস্ত জেলার ডিআইদের রিপোর্ট কোথায়? আদালত জানতে চায় তারা কী তথ্য দিচ্ছে ?" রাজ্যের তরফে জানানো হয়, রিপোর্ট তৈরি হলেও এই মুহূর্তে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । আরও সময় দেওয়া হোক ।
রাজ্যের বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, "কী অদ্ভুত ! আমি কীভাবে অ্যাডভোকেট জেনারেলকে আমার প্রশ্নগুলো করবো ? আজ সেই রিপোর্ট নিয়ে এলে মামলাটা এগিয়ে যেত । স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম এত উদাসীন ! হচ্ছে কী? " "আবার সময় দিলে আবার অন্য কিছু খুঁজে পাওয়া যাবে না", মন্তব্য বিচারপতির ।
উল্লেখ্য, রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সহযোগিতা করছে না বলে এর আগের দিন সিআইডি ও সিটের পক্ষে আদালতে অভিযোগ জানানো হয়েছিল । তারা তথ্য প্রমান সময় মতো দিতে পারছে না বলেও অভিযোগ ছিল । তখন বিচারপতি বসু মন্তব্য করেছিলেন, "তাহলে ওই অফিসে তালা দিয়ে দিন । কী দরকার অফিস রেখে? এরাই আবার তথ্য প্রমান নষ্ট করছে ।"
আরও পড়ুন: