কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর: মহার্ঘভাতা-সহ চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি ও স্কুলে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন তৃতীয় লিঙ্গের শঙ্করী মণ্ডল (নাম পরিবর্তিত)। সে জন্য চাকরি থেকে সাসপেন্ড করা হয় এই স্কুল শিক্ষিকাকে ৷ বাধ্য হয়ে বিচারের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি ৷ 18 সেপ্টেম্বরের মধ্যে বোর্ডকে নতুন আপিল কমিটি গঠন করে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগের নিস্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা ।
বিচারপতি সিনহা এর আগের শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে শিক্ষিকার বক্তব্য শুনে তিন মাসের মধ্যে সমস্যার সমাধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন । কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে জানানো হয়, গত 2022 সাল থেকে এই সংক্রান্ত বিষয় শুনে সমাধান করার জন্য পর্ষদে যে অভ্যন্তরীণ আপিল কমিটি থাকে, তা নেই । ফলে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে । সোমবার ফের মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে এজলাসে ৷ সেই সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে জানানো হয়, এখনও কমিটি গঠন করা হয়নি । এরপরেই নতুন আপিল কমিটি গঠন করে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগের নিস্পত্তি করতে নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা ।
অভিযোগকারী শিক্ষিকার বক্তব্য, সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে শিক্ষা দফতরের উচ্চকর্তাদের কাছের লোক হয়ে ওঠার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান তাঁকে সাসপেন্ড করেন । শিক্ষিকার অভিযোগ, যে ধারায় সাসপেন্ড করা হয় তাতে সর্বোচ্চ তিন মাস পর্যন্ত সাসপেন্ড করে রাখা যায় । তা সত্ত্বেও প্রায় 14 মাস ধরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ তাঁর । বেতনও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি ।
জানা গিয়েছে, আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে সেই সূত্রে তাঁর ছবি ছাপা হয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে । তারপরই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সাসপেন্ড করেছিল তাঁকে । কিন্তু কেন সাসপেন্ড করা হয়, আসল কারণের বিষয়ে তিনিও ধন্দে । শঙ্করী মণ্ডল দক্ষিণ 24 পরগনা মহেশতলার গণিপুর ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা । শিক্ষকদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছিল ৷ সেখানে অংশগ্রহণ করার জন্য গত প্রথমে 5 মাস তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। পরে তাঁকে কাজ থেকে বহিস্কার করা হয়। অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে যে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে সেখানেও তেমন কিছুই নেই । তা সত্ত্বেও শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সাসপেনশনের নির্দেশ এখনও তোলা হচ্ছে না ।