বহরমপুর, 26 জুলাই: বাংলার মালদা ও মুর্শিদাবাদের সঙ্গে বিহারের তিনটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি তুলেছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে ৷ তাঁর এই এক দাবি অনেক আগেই করেছিলেন বলে দাবি করলেন মুর্শিদাবাদ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক গৌরী শঙ্কর ঘোষ ৷ বিধানসভা চত্বরে সাংবাদিকদের কাছে এই দাবি করেন তিনি ৷ তৃণমূলের তরফে গতকালই লোকসভায় এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলের সাংসদরা ৷ এদিনও এর সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্য তৃণমূল নেতারা ৷
কী বললেন বিজেপি বিধায়ক গৌরী শংকর ঘোষ ?
এই বিতর্কের আবহে শুক্রবার গৌরী শংকর ঘোষ বলেন, "এই দাবি আমি অনেক আগেই তুলেছিলাম ৷ 2022 সালের 18 অগস্ট আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম ৷ মালদা বা মুর্শিদাবাদ জেলায় যেভাবে অনুপ্রবেশ ঘটছে, তাতে আগামী দিনে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে ৷"
বৃহস্পতিবার লোকসভায় বাজেট অধিবেশনের জিরো আওয়ারে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সরব হন নিশিকান্ত ৷ পাশাপাশি আদিবাসী গোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা কমছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন ৷ এদিন গৌরীশঙ্কর একই সুরে বললেন, "তারা (অনুপ্রবেশকারীরা) আমাদের দেশকে আবারও ভাঙতে চায়, ভাগ করতে চায় ৷ সেই শক্তি বাংলাদেশ থেকে মুর্শিদাবাদ-মালদা হয়ে ভারতে প্রবেশ করছে ৷ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে ৷"
বাংলাদেশ থেকে মালদা-মুর্শিদাবাদে অনুপ্রবেশ
এই অনুপ্রবেশের বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ৷ তিনি বলেন, "প্রশাসন একেবারে নির্বিকার, দলদাসের মতো কাজ করে ৷ যে রাজনৈতিক দল বাংলায় রয়েছে, তাদের উদ্দেশ্য কেবল ক্ষমতায় টিকে থাকা ৷ দেশের নিরাপত্তার কথা তারা ভাবে না ৷ এই কারণেই আমি ভেবেছিলাম, মালদা, মুর্শিদাবাদ, বিহার, ঝাড়খণ্ডের কিছু অংশ নিয়ে যদি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা যায়, তাহলে দেশের নিরাপত্তা সুরক্ষিত থাকবে ৷ ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষা পাবে ৷"
তিনি যে দাবি দু'বছর আগে তুলেছিলেন, সেই এক দাবি ঝাড়খণ্ডের সাংসদ নিশিকান্ত দুবে লোকসভায় উত্থাপন করেছেন ৷ এর জন্য মুর্শিদাবাদের বিজেপি নেতা বিজেপি সাংসদকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ৷ মুর্শিদাবাদ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর আস্থা রাখছেন যে, মালদা, মুর্শিদাবাদ নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির ইস্যুকে প্রাধান্য দেওয়া হবে ৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দিল্লি রওনা হওয়ার আগে বলেন, "ভৌগোলিকভাবে বাংলার ক্ষতি করার চেষ্টা হচ্ছে ৷ সঙ্গে রাজনৈতিক ক্ষতিরও চেষ্টা চলছে ৷ ওদের মন্ত্রী প্রকাশ্যে একথা বলছে সংসদ অধিবেশন চলাকালীন ৷ উনি বাংলাকে ভাগ করার জন্য ব্যক্তিগত মন্তব্য করছেন ৷" এর আগে নানাভাবে বাংলা ভাগের দাবি উত্থাপন করছেন রাজ্য তথা সর্বভারতীয় বিজেপি নেতারা ৷