কলকাতা, 5 এপ্রিল: 'প্রবাসে দৈবের বশে'। মধুকবির লেখা অমর লাইন আজও সত্যি। পেশার প্রয়োজনে মাতৃভূমি থেকে বহু মানুষ বিদেশ বিভুইয়ে পড়ে থাকেন। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বলতে আগে ছিল চিঠি ৷ এখন ফোন-হোয়াটসঅ্যাপ-ভিডিয়ো কল ৷ তাতে মুখোমুখি বসার অনুভূতি কি মেটে ! বোধহয় না ৷ তাই তাঁরা নানাভাবে নিজেদের ব্যস্ত রাখেন। পরিবার সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন ৷ প্রবাসে তাঁদের জীবনের ছবি অনেক অচেনাকে সামনে নিয়ে আসে ৷ এই খবরের কুশীলব মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের দুই ফুটবলার, আর্মান্দো সাদিকু এবং দ্রিমিত্রি পেত্রাতোস ৷
সবুজ-মেরুন আক্রমণের দুই স্তম্ভের অন্য পরিচয় রয়েছে ৷ বিশেষ করে আর্মান্দো সাদিকুর ৷ আলবেনিয়ার মহাতারকা ফুটবলার সে দেশের একমাত্র খেলোয়াড়, যার ইউয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে গোল রয়েছে ৷ এই কৃতিত্বের জন্য সেই দেশের ফুটবল ফেডারেশন মূর্তি স্থাপন করেছে সাদিকুর ৷ একজন ফুটবলার, তাঁর উপর তিনি যদি স্ট্রাইকার হন, তা হলে গোল করবেন সেটাই স্বাভাবিক ৷ কিন্তু, জানেন কি আর্মান্দো সাদিকু রাজনৈতিক সচেতনায় বামপন্থী ৷ সোশালিস্ট পার্টি অব আলবেনিয়ার একজন সক্রিয় সমর্থক ৷
2013 ও 2017 সালে দেশের নির্বাচনে তিনি তাঁর পার্টির হয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন ৷ 2016 সালে ফুটবলে অবদানের জন্য এলবাসানা তাঁকে সাম্মানিক নাগরিকত্ব দিয়েছে ৷ সাদিকুরের স্ত্রী এলোনা একজন চিকিৎসক ৷ তাঁদের পরিচয় আবার সোশাল মিডিয়ায় ৷ ফুটবল নৈপুন্যের জন্য সাদিকু সমর্থকদের কাছে পরিচিত ৷ কিন্তু, তাঁর রাজনৈতিক সচেতন মন যে বামপন্থায় বিশ্বাস করে, তা রয়ে গিয়েছিল আড়ালেই ৷ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের দামামা দেশজুড়ে বাজছে ৷ ভারতের বামেরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ৷ সাদিকু কি চেনেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, সৃজন ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তীদের ?
দিমিত্রি পেত্রাতোস ৷ অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলার এখন মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের প্রাণ-ভোমরা ৷ খেলা তৈরি থেকে গোল করা, কোচের কাছে তিনিই মধুসূদন দাদা ৷ খেলা আর প্র্যাকটিসের পাশাপাশি, অবসর সময়ে পেত্রাতোস আঁকতে ভালোবাসেন ৷ আর আঁকা পেন্সিল স্কেচ তিনি পাঠিয়ে দেন সন্তানদের কাছে ৷ তারা বাবার আঁকা ছবিতে রং করে পাঠিয়ে দেয় ৷ এভাবেই পেত্রাতোস তাঁর সন্তানের সাহচর্যের অভাব মেটান ৷ এর আগে পেত্রাতোসকে সল্টলেকে ছোটদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে দেখা গিয়েছিল ৷ বিদেশ বিঁভুইয়ে পড়ে থাকা, ফুটবলারদের অজানা গল্প, তথ্য, অভ্যাস নতুনভাবে জানার সুযোগ দেয় ৷
আরও পড়ুন: